জাঁকজমকপূর্ণ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) আয়োজনে সবধরনের চেষ্টা করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তারই ধারাবাহিকতায় বেশ কিছু কাজ হাতে নিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
বিসিবি আগেই জানিয়েছিল যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রাণালয় থেকে শুরু করে সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বিপিএলকে বিশ্বব্যাপী কীভাবে আকর্ষণীয় করে তোলা যায় সেই চেষ্টা চলছে। তারই আদলে নানা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সূত্রে রাইজিংবিডি নিশ্চিত হয়েছে বিপিএলের ১১তম আসরের বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে। যা ১৫তম বোর্ড মিটিংয়ে বোর্ড পরিচালকদের সম্মতিতে চূড়ান্ত হয়েছে।
আইসিসি বিশ্বকাপ কিংবা ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের মতো বিপিএলের ট্রফি ট্যুর হবে। শুধু ট্রফি নয় মাসকট ট্যুরও হবে। আগামীকাল রোববার (১ ডিসেম্বর) বিপিএলের মাসকট উন্মোচনের কথাও রয়েছে।
বিপিএলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিম জানিয়েছেন এবারের বিপিএলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নানা বিষয় ফুটিয়ে তোলা হবে। তারাই ধারবাহিকতায় লঞ্চ করা হবে ‘শহীদ আবু সাঈদ স্ট্যান্ড।’ থাকবে নানা গ্রাফিতি। শহীদ মুগ্ধ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বিপিএলে ফ্রি পানির ব্যবস্থা আগেই ঘোষণা হয়েছিল।
দর্শকদের মাঠমুখি করার জন্য রাখা হয়েছে নানা আয়োজন। যেমন, ফ্যান এনগেজমেন্ট-সোশ্যাল কনটেস্ট, স্পেশাল ফ্যান জোন অ্যাকটিভিশন, ইন ভেন্যু ফ্যান এনগেজমেন্ট- গেমস অ্যান্ড গিভ-অ্যাওয়ে (গিফট), ম্যাচ চলাকালীন ফ্যান এনগেজমেন্ট, গেমস অ্যান্ড গিভওয়ে (গিফট), ডিজিটাল ওয়াচপার্টিস এবং কমেন্ট্রি।
বিশ্বকাপ কিংবা বড় কোনো টুর্নামেন্টের আদলে থিম সং লঞ্চ করার কথাও রয়েছে। থিম সংয়ের মাধ্যমে রিলস ও শর্টস ক্যাম্পেইন করা হবে।
দুই ধরণের কনসার্ট আয়োজনের চিন্তাও করছে বিসিবি। একটি হবে প্রি-ইভেন্ট মিউজিক্যাল কনসার্ট আরেকটি হবে ওপেনিং তথা উদ্বোধনী কনসার্ট।
বিপিএলের মাধ্যমে হাতে নেওয়া হয়েছে জিরো ওয়েস্ট অ্যানাউন্সমেন্টের কার্যক্রম। সঙ্গে থাকবে স্পেশাল টিকিট। বর্জ্যকে সম্পদে রুপান্তর করা তথা ফেলে না দিয়ে রিসাইকেল করা, নতুন না কিনে পুরনোটা কাজে লাগানো, অন্যান্য জিনিস পুনঃপুনঃ ব্যবহার করা, সর্বপরি খরচ কমানোই হচ্ছে জিরো ওয়েস্ট।
দেশব্যাপী কিংবা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে তারকা ও ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিও বার্তার আয়োজনও করছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
এক নজরে বিপিএলের ১১তম আসরে যা থাকছে, গ্রাফিতি, মাসকট, থিম সং ট্রফি ট্যুর, জিরো ওয়েস্ট অ্যানাউন্সমেন্ট অ্যান্ড স্পেশাল টিকিট, ফ্যান এনগেজমেন্ট-সোশ্যাল কন্টেস্ট রিলস/শর্টস ক্যাম্পেইন, প্রি-ইভেন্ট মিউজিক্যাল কনসার্ট, শহীদ আবু সাইদ স্ট্যান্ড, ওপেনিং কনসার্ট, স্পেশাল ফ্যান জোন অ্যাকটিভেশন, ইন ভেন্যু ফ্যান এনগেজমেন্ট-গেমস অ্যান্ড গিভ-অ্যাওয়ে, ডিজিটাল ওয়াচ পার্টিস অ্যান্ড কমিউনিটি এবং সেলেব্রিটি ও ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিডিও বার্তা।
টেলিভিশনে খেলা দেখা দর্শকদের জন্যও থাকছে নানা চমক। বিপিএলের ধারাভাষ্যে ক্রিকেট বিশ্বের জনপ্রিয় মুখদের রাখতে চায় বিসিবি। এজন্য বিশ্বের নামি-দামি ধারাভাষ্যকারদের তালিকা করে তাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইয়ান বিশপ, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস ও রমিজ রাজা, ভারতের হার্শা ভোগলে, নিউ জিল্যান্ডের ড্যানি মরিসন ও সায়ম ডুল। এ ছাড়া ডিজিটালে পাকিস্তানের জয়নব আব্বাস, ভারতের রিধিমা পাঠক ও অস্ট্রেলিয়ার এরিন হল্যান্ডের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
জাঁকজমকপূর্ণ বিপিএলের আয়োজন নিয়ে বিসিবি প্রেসিডেন্ট ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বলেছেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে আমরা নতুন একটা সরকার পেয়েছি। আমরা চেষ্ট করেছি, এর আগে যে ১০টা বিপিএল হয়েছে, সেসবের চেয়ে আলাদা করার জন্য। অনেক পরিকল্পনা করেছি। আশা করি, খুব ভালো টুর্নামেন্ট হবে। আমার মনে হয়, সেটা সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারবে, আপনারা সবাই বিপিএল উপভোগ করবেন।’