চলতি মৌসুমে লা লিগায় বার্সেলোনার শুরু দেখে ভক্তরা আশায় বুক বেঁধেছিল। এবার কি তবে উদ্ধার হবে লা লিগার শিরোপা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে খুঁজতেই আবারও সেই পুরনো ছন্দে বার্সেলোনা! একের পর এক পরাজয়ে অবস্থা নাজেহাল। এবার ৫৩ বছরের ইতিহাস ফিরিয়ে তারা হারল লাস পালমাসের বিপক্ষে। ২-১ গোলের এই হার হ্যান্সি ফ্লিকের দলের জন্য বিব্রতকরই বটে!
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বার্সেলোনার ঘরের মাঠ অলিম্পিক স্টেডিয়ামে প্রথমার্ধ গোলশূন্য শেষ করে বার্সেলোনা। দ্বিতীয়ার্ধেই তাদের সাবেক ফরোয়ার্ড সান্দ্রো রামিরেস এগিয়ে নেন পালমাসকে। এরপর সমতা টানেন রাফিনহা। শেষে জয়সূচক গোলটি করে পালমাসকে তিন পয়েন্ট এনে দেন ফাবিও সিলভা।
পালমাসের বিপক্ষে ঘরের মাঠে শেষ যখন বার্সেলোনা হারে, তখন এই দলের কারোই জন্ম হয়নি। ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর সবশেষ ক্যাম্প ন্যুতে পালমাসের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরেছিল বার্সেলোনা। দীর্ঘ ৫৩ বছর পর আবারও হারল তারা।
এই ম্যাচে লামিনে ইয়ামালের খেলার কথা থাকলেও তাকে ছাড়াই শুরুতে মাঠে নামে বার্সেলোনা। ম্যাচের শুরু থেকেই একের পর এক আক্রমণ করে পালমাসকে ব্যতিব্যস্ত করে তোলে তারা। ষষ্ঠ মিনিটে ভালো সুযোগ পায় বার্সেলোনা। তবে ফের্মিন লোপেসের শট ব্যর্থ করে দেন পালমাস গোলরক্ষক সিলেসেন।
২২তম মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়তে হয় আলেসান্দ্রো বাল্দেকে। এরপর বিরতির আগে আরেকটি ভালো সুযোগ পেয়েছিল কাতালানরা। ৪৪তম মিনিটে এগিয়ে যেতে পারত বার্সেলোনা। তবে বক্সের বাইরে থেকে পেদ্রির নিচু শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান সিলেসেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে তোরের জায়গায় ইয়ামালকে নামান বার্সেলোনা কোচ। এর মধ্যেই ৪৯তম মিনিটে সুযোগ পেয়ে পাল্টা আক্রমণে বার্সেলোনাকে স্তব্ধ করে দেয় পালমাস। মাঝমাঠ থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল ধরে বক্সের বাইরে থেকে কোনাকুনি শটে ঠিকানা খুঁজে নেন রামিরেস।
বার্সেলোনা সমতায় ফেরে ৬১তম মিনিটে। পেদ্রির পাসে জায়গা বানিয়ে জাল খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। এই মৌসুমে বার্সেলোনার হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ২০ ম্যাচে তার গোল হলো ১৪টি। সঙ্গে অ্যাসিস্ট আছে ৮টি।
এরপর পালমাসের ওপর আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় বার্সেলোনা। তাতে অবশ্য কোনো ফল মেলেনি। ইয়ামাল-রাফিনহাদের আক্রমণ রুখে দেন পালমাস প্রহরী। বিপরীতে ৬৮তম মিনিটে গোল খেয়ে বসে বার্সেলোনা। সতীর্থের পাস ধরে বক্সে ঢুকে গোলটি করেন ফাবিও সিলভা।
শেষ দিকে পালমাসের ওপর আরও চাপ বাড়ায় বার্সেলোনা। তবে কিছুঁই করতে পারেনি হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। শেষ বাঁশি বাজতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে পালমাসের ডাগআউট। স্মরণীয় জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে তারা।
এই হারে ১৫ ম্যাচে ১১ জয় ও এক ড্রয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে বার্সেলোনা। দুই ম্যাচ কম খেলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। বার্সেলোনার সমান ১৫ ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট নিয়ে ১৪তম স্থানে আছে পালমাস।