শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে না পেরে মামলার আশ্রয় নিয়ে তারেক রহমানের ইমেজকে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ২১ আগস্ট মামলার ট্রায়ালটা কন্টিনিউ করেছেন- এমন মন্তব্য করেছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
রবিবার (১ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় করা মামলায় আপিলে তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেন।
রায়ের পর সাংবাদিকদের কাছে এক প্রতিক্রিয়ায় এমন মন্তব্য করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘‘গত দুই দশকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে মামলাটা সবচেয়ে বেশি প্রোপাগাণ্ডার শিকার হয়েছিল, সেটা ‘কুখ্যাত’ ২১ আগস্ট মামলা। মামলা দায়ের থেকে ট্রায়াল পর্যন্ত করেছেন শেখ হাসিনা ওয়াজেদ। আমরা সব সময় বলে আসছি, তারেক রহমান কোনো অবস্থাতেই এ মামলায় কোনো সময়েই সংশ্লিষ্ট ছিলেন না। শেখ হাসিনা তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে রাজনৈতিকভাবে ঘায়েল করতে না পেরে মামলার আশ্রয় নিয়ে তারেক রহমানের ইমেজকে দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ট্রায়ালটা কন্টিনিউ করেছেন।’’
তিনি বলেন, ‘‘রায়ে আজ সব আসামি খালাস পেয়েছেন। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। তারেক রহমান আজকের এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছেন। আজকে প্রমাণিত হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারেক রহমানকে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছিল, সেই মামলায় আইনগত মোকাবিলার মাধ্যমে তিনি বেকসুর খালাস পেয়েছেন।’’
এ আইনজীবী বলেন, ‘‘আরেকটা কথা একটু বলতে চাই, গত দুই দশক ধরে ২১ আগস্টের মামলা বাংলাদেশের রাজনীতিকে ডমিনেট করেছিল। সম্পূর্ণ শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রোপাগাণ্ডার শিকার হয়েছিলেন তারেক রহমান। আজকে আমরা ন্যায়বিচার পেয়েছি। মামলাটি রাজনৈতিকভাবে পরিচালিত হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই মামলাটা ব্যবহার করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যখন সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন, সেখানেও তারেক রহমানের নাম ছিল না। পরবর্তীতে তিনি ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে নিজের রাজনৈতিক হীন উদ্দেশ্যকে সাধন করার জন্য তারেক রহমানকে মামলায় সম্পৃক্ত করেন।’’
এদিন বেলা ১১টায় রায় ঘোষণা শুরু হয়। ১১টা ৪৫ মিনিটে রায় পড়া শেষ হয়। রায়ের মূল অংশ পাঠ করেন জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান।
রায়ে আদালত বলেছেন, ‘‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ। আইনে এটা টেকে না। যে চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন, তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না। সাক্ষীরা ঘটনার বর্ণনা করেছেন, কিন্তু কে গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছেন, তা কোনো সাক্ষী বলেননি। এছাড়া, ২১ আগস্টে কে গ্রেনেড সরবরাহ করেছে, তা চার্জশিটে উল্লেখ করেননি কোনো তদন্ত কর্মকর্তা।’’
আদালতে আসামিদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। বিএনপির আইনজীবীদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।