বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘‘বিএনপি দুই বছর আগে ৩১ দফা দিয়েছে। আমরা তখনও জানতাম না স্বৈরাচার কবে বিদায় নেবে, তারপরেও আমরা রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা দিয়েছি। এই দফাগুলো সারা দেশের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।’’
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
৬০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাড়ে ৪০০ শিক্ষার্থী বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে এই কর্মশালায় অংশ নেন।
তারেক রহমান বলেন, ‘‘আগামীতে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাখাতে বাজেট বাড়ানোর ওপর জোর দেবে। বিশেষ করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওপর জোর দেওয়া হবে। যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। যাতে শিক্ষার মান বাড়ে এবং শিক্ষার্থীরা সামাজিক মূল্যবোধ সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যায় থেকে ধারণা লাভ করে।’’
তিনি বলেন, ‘‘যেভাবেই হোক দুর্নীতি রোধ করতে হবে। দুর্নীতির কালো থাবা থেকে দেশ ও জনগণকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। অনেক সময় বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে ভাষার সমস্যা দেখা দেয়। পাঠ্যবইয়ে বাংলা-ইংরেজির পাশাপাশি তৃতীয় আরেকটি ভাষা অবশ্যই শিখানো হবে। এতে দেশের বাইরে কর্মসংস্থানে সমস্যা হবে না। শিক্ষার্থীদের জন্য খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করতে হবে। তাদের হাতের লেখা এবং আর্টের প্রতিও জোর দেওয়া হবে।’’
নারীদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘আগামীতে জনগণের রায়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ফ্যামিলি কার্ড চালু করা হবে। এই কার্ড সবাই পাবে। প্রতিটি পরিবারের মা কিংবা স্ত্রীর নামে এই কার্ড দেওয়া হবে। তাদের মধ্যে দেশীয় উৎপাদনশীল পণ্য বিতরণ করা হবে। মানুষের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারলে রাষ্ট্রের সংস্কার কার্যক্রম কাজে আসবে। এ ছাড়াও ফ্যামিলি কার্ডের মতো কৃষকদের ফার্মার্স কার্ড দেওয়া হবে। এতে প্রকৃত কৃষকদের শনাক্ত করে, তাদের ডাটাবেজের আওতায় আনা হবে। রাষ্ট্র থেকে যত বেশি সম্ভব সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।’’
নিরাপদ স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে। প্রতিটি গ্রামে একাধিক পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ নারীকে পল্লী চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। কর্মসংস্থান বাড়ানো হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘ঢাকা শহরের রিকশাচালকদের বেসিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।’’
বাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আমাদের উৎপাদন বাড়াতে হবে। চাঁদাবাজি রোধ করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পরিবেশ রক্ষায় খাল ও নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি গাছ লাগানো হবে।’’
কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মওদুদ হোসেন আলমগীর পাভেল, দলটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাত্তার পাটোয়ারী, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির।