অন্তি মন্ডল গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর পঞ্চ পল্লী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। স্কুল থেকে বাড়ি প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় প্রায় দিনই সঠিক সময়ে ও নিয়মিত স্কুলে উপস্থিত হতে পারতো না অন্তি। অন্যদিকে বাবা দরিদ্র কৃষক হওয়ায় ঠিক মতো ভ্যান ভাড়াও পেতো না। উপজেলা প্রশাসন থেকে বাইসাইকেল পাওয়ায় তার নিয়মিত স্কুলে আসার সহজ হয়েছে। তাই এখন থেকে সঠিক সময়ে নিয়মিত স্কুলে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওই শিক্ষার্থী।
শুধু অন্তি মন্ডল নয়, তার মত সঠিক সময়ে ও প্রতিদিন স্কুলে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আরও ১৯টি স্কুলের ২৪ জন মেয়ে শিক্ষার্থী।
স্কুলে যাতায়াতের সুবিধার্থে গত মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিকালে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১৯টি স্কুলের ২৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। যে সব মেয়েদের বাড়ি স্কুল থেকে দূরে কেবল তাদের যাতায়াতের সুবিধার জন্যই এসব বাই সাইকেল বিতরণ করা হয়।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা পরিষদ চত্বরে শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব বাইসাইকেল বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল হক।
শিক্ষার্থী অন্তি মন্ডল বলেন, “বাবার একটি সাইকেল কিনে দেওয়ার সামর্থ্য না থাকায় অনেক সময় ক্লাশে ঢুকতে দেরি হতো। কিন্তু এখন আর দেরি হবে না। প্রশাসন থেকে সাইকেল পেয়েছি সেটা চালিয়েই সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারবো। ভালোমতো পড়াশোনা করে দেশের জন্য কাজ করবো।”
সপ্তপল্লী জোয়ারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুস্মিতা মৈত্র বলেন, “বিদ্যালয় থেকে বাড়ি প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় সঠিক সময়ে ও নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে পারতাম না। এখন সাইকেল চালিয়ে বিদ্যালয়ে সঠিক সময় উপস্থিত হতে পারবো।”
বাঁশবাড়িয়া ঝনঝনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী আফসানা মিমি সেতু বলেন, “বিদ্যালয়ে আসতে অধিকাংশ দিন ভ্যান গাড়ি পেতে দেরি হতো। তাই সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসতে পারতাম না আর অ্যাসেম্বলিও ধরতে পারতাম না। এখন সাইকেল পাওয়ায় খুবই উপকার হয়েছে। সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে আসতেও পারবো আর টাকাও সাশ্রয় হবে।”
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈনুল হক বলেন, “নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর। দারিদ্রতা যেন তাদের পড়াশোনায় বাধা সৃষ্টি না করতে পারে তাই বাছাই করে ১৯ টি বিদ্যালয়ের ২৫ জন মেয়ে শিক্ষার্থীকে একটি করে বাইসাইকেল উপহার দেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরও ৫০০ দরিদ্র শিক্ষার্থীকে বাইসাইকেল উপহার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।”