ক্যাম্পাস

মানবিক সমাজ গড়ার প্রত্যাশা স্বেচ্ছাসেবীদের

স্ব-প্রণোদিত হয়ে আর্ত-মানবতার সেবায় নিয়োজিত হওয়ার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোনো দুর্যোগে মানবিক সহায়তা প্রদানে স্বেচ্ছাসেবকদের সচেতন ও দক্ষ করে তোলার লক্ষে প্রতি বছর ৫ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবস পালিত হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ১৯৮৫ সালে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে দিবসটির স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে কয়েকজন তরুণ স্বেচ্ছাসেবীর কথা জানাচ্ছেন তানজিদ শুভ্র।

মানসিক তৃপ্তি ও শান্তিই স্বেচ্ছাসেবকদের প্রাপ্তি

স্বেচ্ছাসেবা মূলত সেচ্ছায় অন্যের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখা। একজন স্বেচ্ছাসেবক অন্যের কল্যাণে ও অসহায়দের পাশে থেকে মহৎ গুণ ও বড় হৃদয়বানের পরিচয় দেন। স্বেচ্ছাসেবকরা কোনো আশা, প্রত্যাশা না করেই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করেন। স্বেচ্ছাসেবীরা কোন লাভ-ক্ষতির হিসেব বা লোভ-লালসা করে না। সর্বদা দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিজেকে বিলিয়ে দেন।

স্বেচ্ছাসেবীরা সংঘবদ্ধ হয়ে সংগঠন তৈরি করে কাজ করেন, যাতে সবার মেধা, দক্ষতা, গুণ, পরিশ্রম একত্রে প্রয়োগ করে আরো সুন্দর করে দেশ গড়তে পারেন। সবার লক্ষ্য একটাই, মানুষের সাহায্য করা এবং সব কাজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত রাখা। হোক সেটা রক্ত জোগাড়, রক্ত দান, বিনামূল্যে শিক্ষা প্রদান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা, চিকিৎসা ও অনুদান সংরক্ষণ কিংবা খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করা।

সব সেবার কাজেই স্বেচ্ছাসেবীর অবদান অমূল্য। স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের মানসিক তৃপ্তি ও শান্তির জন্য অন্যের সেবায় নিয়োজিত থাকেন। ফলে তারা আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন। সমাজসেবার ফলে তাদের কথা বলার জড়তা দূর হয়, মানুষের সাথে সুসম্পর্ক তৈরি করে। নেতৃত্বের বিকাশ, দক্ষ ও পরিশ্রমী হয়ে উঠেন তারা। দেশের ও সমাজের প্রতি ধ্যাণ-ধারণা বৃদ্ধি পায়। সচেতন, মনবল, মানবকল্যাণী, আত্মবিশ্বাসী, নিরহংকারী করে তোলে। তাই সবার উচিত সচেতন হওয়া এবং মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করা। মানুষের কল্যাণ হলেই দেশ করবে উন্নয়ন। (লেখক: তামান্না আক্তার, সাধারণ সম্পাদক, বাঁধন, মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ ইউনিট)

সেচ্ছাসেবীদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মানুষের সমালোচনা

মানবিক গুণ ও দায়িত্ববোধ থেকেই শুরু হয় একেকজন তরুণের স্বেচ্ছাসেবী হয়ে উঠার গল্প। আমাদের চারপাশের বিভিন্ন সমস্যা, অসংগতি দেখেই দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয় নিজের মাঝে। দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি কিছু করার ভাবনা থেকেই শুরু হয় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করা। স্বেচ্ছাসেবী কাজ করতে গিয়ে আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় মানুষের সমালোচনা। আমাদের কাজের পরিধি যত বৃদ্ধি পেতে থাকে, মানুষের থেকে তত খারাপ মন্তব্য বেশি আসতে থাকে। সবকিছুকে উপেক্ষা করে দৃঢ়তার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হয় আমাদের।

স্বেচ্ছাসেবী কাজের মাঝে এখন লোক দেখানোর প্রবণতা সময়ের সাথে বেড়েছে। কাজের প্রচারণার ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি, ভিডিও প্রকাশকে কেন্দ্র করে শুরু হয় খারাপ মন্তব্য। তবে এর পজিটিভ দিকও রয়েছে, নতুনদের অনুপ্রাণিত করতে কাজে দেয় ছবি ও ভিডিও। একজন স্বেচ্ছাসেবক তার কাজের মাধ্যমে গ্রাম থেকে শহর, শহর থেকে দেশ এবং দেশ থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও ভূমিকা রেখে থাকেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকার জন্যই এ বিশ্ব স্বেচ্ছাসেবী দিবস সব দেশে একই দিনে পালিত হয়ে আসছে। (লেখক: জুবায়ের আহমেদ সাব্বির, সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রফুল্ল)   স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো

স্বেচ্ছাসেবা হচ্ছে মানুষের প্রতি মানুষের মানবিক দায়িত্বের বহিঃপ্রকাশ। স্বেচ্ছাসেবা শুধুই একটি কাজ নয়, বরং সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং দায়িত্ববোধের একটি প্রতীক। স্বেচ্ছাসেবা এমন এক কাজ, যা নিজের স্বার্থহীনভাবে করতে হয়। এ কাজটি নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মতো। তবে এ কাজের মাধ্যমে যে আত্মতৃপ্তি পাওয়া যায়, তা অন্য কোনো কিছু থেকে পাওয়া সম্ভব নয়।

আমরা স্বপ্ন দেখি, এমন একটি সমাজ গড়ে উঠবে, যেখানে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানবিক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করবে। আমার পরিকল্পনা রয়েছে স্থানীয় তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রমকে আরও সংগঠিত ও কার্যকর করা। আমাদের লক্ষ্য মেধাবী তরুণদের স্বেচ্ছাসেবী কাজে বেশি বেশি যুক্ত করা যাতে, তারা মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজ পরিবর্তনের জন্য ভূমিকা রাখতে পারে।

আমাদের সমাজে যারা সত্যিকার অর্থে স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন তারা নিরবে কাজ করেন। কখনোই নিজেদের প্রচারের জন্য কিছু করেন না। তবে, দুঃখজনক হলেও সত্যি কিছু মানুষ আছেন সামাজিক মাধ্যমে প্রশংসা পাওয়ার জন্য স্বেচ্ছাসেবার আড়ালে নিজেদের প্রচার চালান। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলো স্বেচ্ছাসেবা, মানবিক সেবা করা; লোক দেখানোর কাজ নয়। তাই মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বেচ্ছাসেবায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা করি।

আমি মনে করি আমাদের স্বেচ্ছাসেবা কার্যক্রম যদি সঠিকভাবে পরিচালিত হয় এবং সবার মধ্যে যদি মানবিক দায়িত্ববোধ গড়ে ওঠে, তাহলে আমাদের সমাজের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা করবে, ইনশাআল্লাহ। (লেখক: মো. মেহেরাব হোসেন রিফাত, এক্স-ক্যাডেট ল্যান্স কর্পোরাল, বিএনসিসি সেনা শাখা)   সেচ্ছাসেবীদের কারণে মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরছে

বর্তমান বিশ্ব হিংসা-বিদ্বেষে জর্জরিত। পত্রিকার পাতা উল্টালেই শুধু নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের খবর পড়তে হয়। জনসংখ্যার হার দিন দিন বাড়লেও মানুষের সংখ্যা তার বিপরীতমুখী হার ধারণ করেছে। এতকিছু সত্ত্বেও মনে আনন্দের জোগান দেয়- পৃথিবীর সবখানে ছড়িয়ে থাকা একদল চিরতরুণের কর্মকাণ্ড। তারা নিজেদের ‘স্বেচ্ছাসেবক’ বলে থাকেন। তাদের কারণেই মানুষের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসছে। আর্ত-মানবতার সেবার জন্য কাজ করে যাওয়া তারুণ্যের প্রভাবে পৃথিবী তার হারানো ঐশ্বর্য ফিরে পাচ্ছে। 

যে কোন বিপদ-দুর্যোগে তাদের অগ্রগামী ভূমিকার প্রভাবে সেসব প্রতিকূল পরিবেশ থেকে রেহাই পাওয়া প্রতিবারই সহজতর হয়। এর ফলেই একদিন বিশ্বের দেহ থেকে সকল প্রকার নেতিবাচকতা দূর হবে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে লোক-দেখানো কাজ। স্বেচ্ছাসেবা আসতে হয় মন থেকে, মানবিকতার প্রয়োজনে। উদ্দেশ্য যখন ভিন্ন হবে, তখন কর্মের ধরন ও কর্মফল হবে ভিন্ন। 

এই কিছু সংখ্যক তথাকথিত স্বেচ্ছাসেবক যারা দেশ ও দশের জন্য নয়, বরং নিজেদের সুনাম ও স্বার্থসিদ্ধির জন্য কাজ করে বেড়ায়। তাদের জন্য প্রকৃত স্বেচ্ছাসেবকদের বদনাম হচ্ছে। কেননা, তাদের আচরণ প্রকৃত স্বেচ্ছাসেবকের মত হয় না। ফলে জনসাধারণের মনে নেতিবাচক ধারণার জন্ম হয়। সর্বোপরি, বিশ্বের এ মানবিকতার ক্রান্তিলগ্নে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই আমরা নতুন প্রজন্মকে একটি সুস্থ-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ উপহার দিতে পারব। (লেখক: হিমেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক, বিডি ক্লিন)   স্বেচ্ছাসেবকরা মিলেমিশে স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ব

একটা সময় ছিল যখন সামাজিক কাজ করার জন্য ডাকলেও কাউকে খুঁজে পাওয়া যেত না। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর সে দৃশ্য বদলেছে। এখন সারা দেশে স্ব-প্রণোদিত হয়ে লাখ-লাখ স্বেচ্ছাসেবক তৈরি হয়েছে। জাতীয় ঐক্যের স্বার্থে সবাই একত্রিত ও ঐক্যবদ্ধ।

সরকার পতনের পর যখন ট্রাফিক সমস্যায় জর্জরিত সারাদেশ, তখন স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক রূপে আবির্ভূত হয়েছেন। নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে রোদে পুড়ে কাজ করেছেন ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে। এর পাশাপাশি চলেছে দেশজুড়ে গ্রাফিতি অঙ্কন, পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণসহ দেশ গঠনের নানা কার্যক্রম। এরপর পার্শ্ববর্তী দেশের পানিতে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় যখন কুমিল্লা, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীসহ সেসব অঞ্চল দিশেহারা, ঠিক তখনই তরুণ স্বেচ্ছাসেবকরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছেন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জন্য। সারা বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেদের উদ্যোগে গণত্রাণ ও অর্থ সংগ্রহ করে সেসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিয়েছেন। বন্যা পরবর্তীতে পুনর্বাসনের ক্ষেত্রেও ছিল জোরালো অবদান।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন সারাদেশের মানুষ দিশেহারা, তখন আমরা সারাদেশে প্রথম নাটোর থেকে ‘জনতার বাজার’ নামে উদ্যোগ নিয়েছিলাম সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ক্রয়মূল্যে পণ্য সামগ্রী বিক্রয়ের। বর্তমানে এটি প্রায় সারাদেশে বিভিন্ন নামে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ফলে এলাকাভেদে পণ্য সামগ্রীর দাম কমছে এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়েছে। এক প্রকার হুঙ্কারের সৃষ্টি হচ্ছে সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে, যা আমাদের আশার আলো দেখায়।

একজন সামাজিক সংগঠক হিসেবে আমার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতায় অতীতে দেখেছি, সামাজিক কাজে বিভিন্ন মহলের অনীহা। তবে বর্তমান সময়ে স্বেচ্ছাসেবী কার্যক্রমে সবার উপস্থিতি ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা প্রতিটি বিষয়েই সোচ্চার। আশা করি, আমাদের এ ইতিবাচক পরিবর্তন দীর্ঘস্থায়ী হবে। দেশের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আমরা দেশ গঠনে যথার্থ ভূমিকা রাখবো। স্বেচ্ছাসেবকরা মিলেমিশে আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসে এই আমার প্রত্যাশা। (লেখক: শেখ রিফাদ মাহমুদ, চেয়ারম্যান, এসআরআই ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন)   স্বেচ্ছাসেবার অভিজ্ঞতা পেশাগত জীবনেও ভূমিকা রাখে

স্বেচ্ছাসেবকরা সাধারণত এক বা একাধিক অরাজনৈতিক ও অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দুর্গম এলাকা ও বস্তিতে সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া, ঔষধ বিতরণ করা, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা পারিশ্রমিকে পড়ানো, কখনো পিরিয়ড ও নানা শারীরিক সমস্যা নিয়ে বস্তিতে বসবাসরত মা ও শিশুদের সচেতন করা, দুর্যোগ কবলিত এলাকায় ত্রাণ নিয়ে ছুটে যাওয়া, প্রয়োজনে রক্তের জোগানসহ সব ধরনের সামাজিক এবং সেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে থাকেন। আবার উৎসবের সময় সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে কাপড়, খাবার বিতরণ করে তাদের খুশিতে শামিল করার চেষ্টা করেন। তাছাড়া অনেক স্বেচ্ছাসেবক দেশের জলবায়ু ও প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা ও সংরক্ষণের লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছেন।

স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করার সুযোগ পাওয়া যায়, তেমনি আত্মোন্নতিও সাধিত হয়। নিজের সুপ্ত প্রতিভা ও অর্জিত জ্ঞান-দক্ষতা দ্বারা যখন একজন স্বেচ্ছাসেবক দেশ ও দশের কল্যাণে মনোনিবেশ করে, তখন হতাশাগ্রস্ত হয়ে ভুল পথে পা বাড়ানো কিংবা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার প্রবণতাও অনেকাংশে কমে যায়। এছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অনেক স্বেচ্ছাসেবকের জন্য অনেক সময় প্রশিক্ষণ কিংবা কর্মশালার আয়োজন করে। এর মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার সুযোগ পাওয়া যায়। একই সাথে নেতৃত্ব চর্চা, যোগাযোগ দক্ষতা, সময়ানুবর্তিতা, পরিকল্পনা করা ও সেটা বাস্তবায়নের সঠিক কৌশল রপ্ত করে অনুশীলনেরও সুযোগ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে পেশাগত জীবনেও এসব থেকে পাওয়া প্রশিক্ষণ ও কাজের অভিজ্ঞতা অনেকাংশে কাজে দেয়।

তবে বর্তমান একটি কথা প্রায়ই শোনা যায়, এ স্বেচ্ছাসেবা আসলেই মানবিক সেবা নাকি লোক দেখানো? এ ক্ষেত্রে আমি নিজে একজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বলব, যদিও গুটিকয়েক মানুষ নিজেদের স্বার্থ হাসিলে লোক দেখিয়ে সমাজসেবামূলক কিছু কার্যক্রম চালান। কিন্তু অধিকাংশ স্বেচ্ছাসেবক মানবিক দায়বদ্ধতা থেকেই পরোপকারের উদ্দেশ্য নিয়েই স্বার্থহীনভাবে মানবকল্যাণে কাজ করে থাকেন। এছাড়া প্রতিটি ধর্মেই স্বেচ্ছাশ্রমকে ব্যাপক উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করা হয়েছে। 

একজন বিশ্বাসী স্বেচ্ছাসেবকের মূল লক্ষ্য থাকে সৎকর্মের মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জন। স্বেচ্ছাসেবক কোনো আর্থিক বা সামাজিক স্বার্থের জন্য কাজ করে না, স্বার্থহীন মানবসেবাই এখানে মুখ্য। সবশেষে বলতে চাই, “Volunteering is not a choice, it's a responsibility.” (লেখক: জাকিয়া আক্তার ঊর্মী, গাজীপুর জেলা কমিটি মেম্বার, ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশ)