লাইফস্টাইল

অতিরিক্ত শপিংয়ের অভ্যাস কমানোর উপায়

পোশাকের বর্জ্য গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণ, পানি এবং বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে অতিরিক্ত পোশাক কেনার মানসিকতা ব্যক্তির হতাশার কারণ হয়ে উঠছে। মনোবিদদের মতে, অতিরিক্ত কেনাকাটার মানসিকতা নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে আপনি আপনার জীবনের প্রতি নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়ে তুলতে পারেন।

পরিবেশবিদ এবং নৈতিক ফ্যাশন বিষয়ক ব্লগাররা বলছেন, ‘‘শপিং বা কেনাকাটা করার অভ্যাস কমাতে হলে প্রথমেই মনে করতে হবে, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। সাধারণত কেনাকাটা করার সময় মানুষ অত্যন্ত তৃপ্তি লাভ করে। কিন্তু তারপরেই ওই কেনা বস্তু বা পোশাকের ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। অতিরিক্ত শপিং করার মানসিকতা মানুষের কল্যাণবোধ কমিয়ে দিচ্ছে। শপিং করার সময় ক্রেডিট কার্ডের বদলে ডেবিট কার্ড অথবা নগদ অর্থ ব্যয় করা ভালো। এতে অতিরিক্ত কেনাকাটার মানসিকতা সহজে নিয়ন্ত্রণে নেওয়া যায়।’’

শপিংয়ের অভ্যাস কমাতে আরও কয়েকটি নিয়ম মানতে পারেন

আলাদা পোশাক কেনার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে: নৈতিক ফ্যাশন বিষয়ক ব্লগার টলমিয়া গ্রেগরির পরামর্শ, পোশাক কম কিনতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানের জন্য নির্দিষ্ট পোশাক কেনার অভ্যাস ছাড়তে হবে। যেমন রাতের জন্য এক পোশাক, ছুটির দিনে এক পোশাক— এই সংস্কৃতিকে বিদায় জানাতে হবে। 

প্রয়োজনীয় এবং টেকসই পোশাক কিনতে হবে: টেকসই ফ্যাশন নিয়ে একাধিক বইয়ের লেখিকা অধ্যাপক ফ্লেচার বলেন, ‘‘কম পোশাক কেনা মোটেও শরীরের প্রতি অবিচার বা বঞ্চনা নয়, এই মানসিকতা রাখতে হবে। পোশাক কেনার আগে ওয়্যারড্রোবে কোন কোন পোশাক আছে সেগুলো দেখে নিতে হবে। অনেক সময় আমরা এমন পোশাক কিনি যা আমাদের তুষ্ট করার পরিবর্তে অসন্তুষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায় । আপনার রুচি যদি আসলেই নতুনত্ব, আধুনিকতা, পরিবর্তন এবং বৈচিত্র্যের ওপর নির্ভরশীল হয় তাহলে, আপনার ওয়্যারড্রোবেই সেগুলো পেতে পারেন। অথবা সেকেন্ড হ্যান্ড পোশাক কিনে নিতে পারেন।’’ 

সিনথেটিক উপাদানের পোশাক কেনা বন্ধ করুন: উইলো জানিয়েছেন তিনি হেম্প, লিনেন এবং জৈব সুতি পোশাক যা গ্লোবাল অরগানিক টেক্সটাইল স্ট্যান্ডার্ডের অনুমোদনের আওতায় পড়ে—এমন পোশাক নিখুঁত না হলেও কেনেন। কারণ তিনি মনে করেন পোশাকের দীর্ঘস্থায়িত্ব বাড়ানো উচিত। এজন্য পোশাকের যত্ন নিতে নির্দেশিকা ফলো করতে হবে। পোশাক ধোয়ার ক্ষেত্রে গরম পানির পরিবর্তে ঠান্ডা পানি ব্যবহার করা ভালো বলে উল্লেখ করেন তিনি। 

দরদাম যাচাই করে কেনাকাটা করুন: সাধারণত ব্লগগুলোতে পোশাকের মূ্ল্য কেমন হতে পারে তার একটা ধারণা পেতে পারেন। দরদাম করা অনেক ক্রেতার কাছেই ঝামেলার মনে হতে পারে। কিন্তু কেনাকাটার ক্ষেত্রে এটা একটা প্রক্রিয়া। আপনার উচিত এই প্রক্রিয়া অনুসরন করা। 

অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিংয়ে কান দেবেন না:  আপনার শপিং করার মানসিকতা বাড়িয়ে দিতে পারে অ্যাগ্রেসিভ মার্কেটিং। কিন্তু খেয়াল করুন, এই মানসিকতা আপনার সুখ কেড়ে নিচ্ছে কিনা। শপিং করার অতিরিক্ত আসক্তি তৈরি হলে একাকিত্ব এবং উচ্চ মাত্রার অবসাদে ভুগতে পারেন।

উল্লেখ্য, ফ্রান্সেসকা উইলোর পরামর্শ- ভালো পোশাক খুঁজে দেখার জন্য সেকেন্ড হ্যান্ডই সবচেয়ে ভালো অপশন। অনেকেই চ্যারিটি শপগুলোতে যেতে চান না। কিন্তু চ্যারিটি শপ, ডি-পপ এবং ভিনটেডের মতো সেকেন্ড হ্যান্ড পণ্যের অ্যাপগুলো আপনার পোশাক নির্বাচনের জন্য আসলেই সহায়ক হতে পারে।

সূত্র: ফোর্বস ও ইউএনবি