পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে উত্তাল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) ক্যাম্পাস। শনিবার (৭ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কসহ হলে হলে প্রদক্ষিণ করছে।
এর আগে, রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শনিবার পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এরপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় আন্দোলনে নামেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নেমেছি বলে এটা শুধু রাবির জন্য নয়, এই আন্দোলন সারাদেশের পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে। এই কোটা বাতিল করা না হলে রোববার (৮ ডিসেম্বর) থেকে কঠোর কর্মসূচি পালন করার হুঁশিয়ারি দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতারা।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা ‘কোটা নয়, মেধার জয়; জোহা স্যারের স্মরণে, ভয় করি না মরণে; তুমি কে আমি কে, মেধাবী মেধাবী; পোষ্য কোটা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক; জনে জনে খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে; দিয়েছি তো রক্ত, আরো দেব রক্ত’ রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায় বিভিন্ন কোটাবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী মারুফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তিন মাসে কোনো উন্নয়ন করতে পারেনি। পোষ্য কোটা যেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট না করে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, “পোষ্য কোটা বৈষম্যের প্রতীক। এটি মেধাবীদের সুযোগ কমিয়ে দেয়। আমরা সারা দেশের পোষ্য কোটা বাতিলের দাবি জানাই।”
আরেক সমন্বয়ক মেশকাত মিশু বলেন, “অযৌক্তিক কোটার বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত থাকবে। পোষ্য কোটা একটি ষড়যন্ত্র। এটি প্রতিহত করবই।”
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবারের (৭ ডিসেম্বর) মধ্যে রাবি প্রশাসন লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ সবক্ষেত্রে পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত না নিলে, রোববার থেকে ক্যাম্পাসে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোর্শেদুল ইসলাম পিটারসহ প্রায় ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। জোহা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন হল প্রদক্ষিণের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, “যেকোনো বিষয়েই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করতে পারে; এটি তাদের অধিকার। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোটা ইস্যুতে শিক্ষার্থীসহ, অন্যান্য স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই, এ ইস্যুটির একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান হোক।”
এর আগে, রাবিতে পোষ্য কোটা বাতিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আজকে (শনিবার) পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপরেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় আন্দোলনে নামেন তারা।