প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘‘শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে আমাদের সরকারের অবস্থান খুব স্পষ্ট। আমরা তাকে দেশে ফিরিয়ে আইনের সম্মুখীন করতে চাই। যে গণহত্যা হলো, জুলাই-আগস্টে যে ১৫০০ মানুষকে হত্যা করা হল, এর নির্দেশদাতা তো তিনি।’’
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রেস সচিব বলেন, ‘‘এর আগে যত গুম হয়েছে, তিনি তো সরকারপ্রধান ছিলেন। প্রতি বছর ১৬ বিলিয়ন ডলার করে পাচার হয়েছে, যা দেশের জনগণের টাকা। এসবের জন্য তাকে আইনের আওতায় আনা আমাদের প্রতিশ্রুতি।’’
শফিকুল আলম আরো বলেন, ‘‘শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনতে, যেহেতু ভারতের সঙ্গে আমাদের একটা প্রত্যর্পণ চুক্তি আছে; সেই চুক্তি অনুযায়ী কিছু আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে প্রত্যর্পণের জন্য চাওয়া যায়। আমরা সেই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করছি। এটা শেষ করে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে তার প্রত্যর্পণ চাইব।’’
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে সরকার মৌখিকভাবে এখনো কেন ভারতকে বলছে না— এমন প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘সরকার শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে আইনে সমর্পণ করতে চায়। তার আমলে গণহত্যা হল, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার মূল নির্দেশদাতা শেখ হাসিনা। তার আমলে গুম হয়েছে। জনগণের ট্যাক্সের টাকা পাচার হয়েছে। পুরো বিষয়ে জবাবদিহিতার জন্য শেখ হাসিনাকে আইনের আওতায় আনা সরকারের কমিটমেন্ট। এটা করব।’’
ভারতের সঙ্গে বন্দী বিনিময় চুক্তির বিষয়টি উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘এ চুক্তির কিছু আইনি দিক আছে। সেগুলো পূরণ করে একজন ফেরত চাইতে পারেন। সে প্রসিডিউরগুলো সরকার পূরণ করছে। তা পর আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের কাছে ফেরত চাইব।’’
প্রেস সেক্রেটারি জানান, ‘‘ফেসবুক দেখছে বাংলাদেশকে ঘিরে কী অপতথ্য প্রচার হচ্ছে। মেটার হয়ে এখানে তৃতীয় পক্ষ কাজ করেন। ফেক নিউজ, অপতথ্য, ভুল তথ্য যারা ডিটেক্ট করেন তারা মেটাকে অ্যালার্ট করবেন। অবশ্যই মেটা তা দেখবে। কারণ এখানে তাদের ব্যবসা আছে। আমরা চাচ্ছি যেগুলো মিথ্যা, অপতথ্য সেগুলো যেন রিমুভ করা হয়।’’
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পেজে গুজব ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলোর বিষয়ে সরকার শক্ত অবস্থানে যাবে কি না— এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘এখানে মেটার হয়ে তৃতীয়পক্ষ তদন্ত করে। তারা দেখছে কোথা থেকে অপতথ্য ছড়ানো হচ্ছে। অনেক সময় রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাদের নজরে আনা হলে, তারা রাষ্ট্রকে সংশয়ের চোখে দেখে। আগের সরকার ভালো ইউটিউবার, ফেসবুকে ভালো মন্তব্যকারী, যাদের ফলোয়ার রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও অ্যাকশনে যেত, পেজ রিমুভের চেষ্টা করত। মেটার কাছে ট্রাস্টের বিষয় আছে। তাই আমরা চাইব ফেক নিউজ তারা রিমুভ করবে।’’
খোলা বাজারে সয়াবিন তেল না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তারা পুরোপুরি জানাবে। কিন্তু আমরা মনে করছি বাজারে সয়াবিন তেলের কোনো সংকট নেই। যথেষ্ট সয়াবিন তেল আছে। সামনের রমজানের সরবরাহের সংকট না হয় সে জন্য সরকার এলসি সহজ করেছে, আন্তর্জাতিক বাজারদর মনিটরিং করছি। আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা আছে রোজার সময় মানুষ সয়াবিন ও পাম অয়েল সাশ্রয়ী মূল্যে পান।’’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর।