সারা বাংলা

নতুন বইয়ে গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি থাকবে : প্রাথমিক উপদেষ্টা

প্রাথমিকের নতুন পাঠ্যপুস্তকে থাকছে জুলাই-আগস্টের ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতি। তবে বই ছাপাতে কিছুটা দেরি হলেও প্রাথমিকের বই জানুয়ারির মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব হবে। রবিবার (৮ ডিসেম্বর) খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, যেহেতু বাইরের দেশে বই ছাপার কথা ছিল। ৫ আগস্টের পরে সেই টেন্ডার বাতিল করে নতুন টেন্ডার আহ্বানের ফলে বই ছাপাতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এ জন্য বই বিতরণে কিছুটা দেরি হলেও প্রাথমিকের বই জানুয়ারির মধ্যে বিতরণ করা সম্ভব হবে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন কারিকুলামে শিক্ষার্থীদের ওপরে কিছুটা বাড়তি চাপ পড়বে এটি ঠিক। এটি মেনে নিতে হবে। তার কারণ গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী দেশে সকল ক্ষেত্রে প্রভাব পড়ে। যেটি শিক্ষাক্ষেত্রেও পড়েছে। এটি মেনে নিয়ে সামনে এগুতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, যেসব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী আছে, সেগুলোকে পার্শ্ববর্তী স্কুলের সঙ্গে একীভূত করার চিন্তা রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো কোটা না রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সাধারণভাবে অন্য চাকরিতে যেমন সাত শতাংশ কোটা রয়েছে, এখানেও তেমনটি থাকবে। তবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও গণিতে দক্ষ করে তুলতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট নিয়োগের ২০ শতাংশ গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো থেকে পাস করাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গাইড বই ও প্রাইভেট কোচিংয়ের বিষয়টি নিরুৎসাহিত করতে হবে। শহর অঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন করার কাজ চলমান আছে।

তিনি আরও বলেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল চালু হবে। যা আগামী বছরই প্রকল্প আকারে চালু হচ্ছে। দক্ষিণ এশিয়াতে কেবল বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বাজেটের মাত্র দুই শতাংশ। কিন্তু ইউনেস্কোর মতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাজেটের ছয় শতাংশ হওয়া উচিত। শিক্ষকদের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার উন্নতি ঘটানো এখন সময়ের দাবি। প্রাথমিক শিক্ষার লক্ষ্যই হলো শিশুদের অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন করে গড়ে তোলা। একই সঙ্গে তাকে ভাষাজ্ঞানে ও গণিতে দক্ষ করা। পড়তে পারা মানুষের সামনে বিশ্বের জ্ঞানরাজ্যের দ্বার খুলে যায়। যার সূচনা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ ফিরোজ সরকার। বক্তৃতা করেন পুলিশের অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পিইডিপি-৪) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. তবিবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ প্রমুখ।

সভায় খুলনা বিভাগের ১০ জন জেলা প্রশাসক, প্রতিনিধি এবং বিভাগীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরগুলোর কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।