ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রেকর্ড পরিমাণ মাছ রপ্তানি অব্যাহত রয়েছে। গত তিন দিনে প্রায় ১৪ কোটি টাকার মাছ রপ্তানি হয়েছে।
সর্বশেষ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) প্রায় ১৩০ মেট্রিক টন মাছ ভারতে যায়। যার মূল্য বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ কোটি ৯০ টাকা লাখ। স্থলবন্দর বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালুর দুই যুগেরও বেশি সময়ে গত সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রেকর্ড পরিমাণ ৫ কোটি টাকার বেশি মাছ যায় এ বন্দর দিয়ে। হঠাৎ মাছ রপ্তানি বেড়ে যাওয়ায় বন্দরের ব্যবসায়ীরাও অবাক হয়েছেন।
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা নাগাদ ২৯টি ছোট-বড় ট্রাকে করে হিমায়িত মাছ ভারতে যায়। মাছের মোট পরিমাণ ১ লাখ ৭২ হাজার ৪৩৪ কেজি। অর্থাৎ ১৭২ মেট্রিক টনেরও বেশি মাছ রপ্তানি হয়। প্রতি কেজি মাছ রপ্তানি হচ্ছে আড়াই ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি প্রায় ৩০০ টাকা কেজি দরে। সেই হিসাবে সোমবার ৫ কোটি টাকার বেশি মাছ যায়। মাছের সিএন্ডএফ এজেন্ট ছিল মিঠু এন্টারপ্রাইজ। রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো বাবুল এন্টারপ্রাইজ। এর আগে রবিবার (৮ ডিসেম্বর) মাছ গেছে প্রায় ১ লাখ ৫২ হাজার ৫৩৪ কেজি।
গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে ১০০ মেট্রিক টন করে মাছ রপ্তানি হয়েছে। তবে নিয়মিত এ বন্দর দিয়ে ২০-৩০ টন মাছ ভারতে রপ্তানি হয়। অন্যান্য পণ্যের তুলনায় এখন মাছ রপ্তানি অনেক বেড়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার রহমান ইমপেক্স এর নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১৩০ মেট্রিক টন মাছ রপ্তানি করে। সিএন্ডএফ এজেন্ট ছিল এফ এ এন্টারপ্রাইজ। রপ্তানি হওয়া ১ লাখ ৩০ হাজার কেজি মাছের মূল্য ৩ কোটি ৯০ লাখ ২৫ হাজার ২০০ টাকা। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের কয়েকটি বন্দর দিয়ে ভারতে মাছ রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। যে কারণে এ বন্দর দিয়ে মাছের চাহিদা বেড়ে গেছে, যা নিয়মিত চাহিদার তুলনায় ৮-১০ গুণ। ওপারে ভারতের সাতটি রাজ্যে বাংলাদেশের মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।
বন্দরের ব্যবসায়ী মো. হাসিবুল হাসান জানান, ওপারে বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন কর্মসূচির কথা শোনা গেলেও রপ্তানিতে সমস্যা হচ্ছে না। ভারতীয়দের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যদি পণ্য পাঠানো হয়, তাহলে তারা সেটি গ্রহণ করবেন। এ অবস্থায় এখন প্রচুর মাছ যাচ্ছে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট মিঠু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী নেসার উদ্দিন ভূইয়া বলেন, সোমবার রেকর্ড পরিমাণ মাছ ভারতে যায়। স্থলবন্দরে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালু হওয়ার পর একদিনে এত বেশি মাছ যায়নি। দেশের বেশ কয়েকটি বন্দর দিয়ে রপ্তানি বন্ধ থাকা ও বাংলাদেশে মাছের উৎপাদন ভালো হওয়ায় অনেক বেশি মাছ যাচ্ছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ওয়াহিদুজ্জামান খান বলেন, গত সপ্তাহ থেকে মাছ রপ্তানি অনেক বেড়ে গেছে। ওই সময়ে প্রতিদিনই সকাল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ মাছ ভারতে যায়। কয়েকটি বন্দরে রপ্তানি বন্ধ থাকায় এ পথে রপ্তানি বেড়েছে।