‘‘আমরা চাই কিছু সতেজ প্রতিভা উঠে আসুক। ওরা কোনো কিছুতে ভয় পায় না। যেকোনো বোলারকে অ্যাটাক করতে পারে। যেকোনো পরিস্থিতিতে চার-ছক্কা মারতে পারে। আবার বোলাররা কঠিন মুহূর্তে রান আটকে দিতে পারে। উইকেট নিতে পারে। ক্রিকেট এগিয়ে নিতে হলে এরকম সতেজ প্রতিভা প্রয়োজন।’’
কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদ। জাতীয় ক্রিকেট লিগের টি-টোয়েন্টি প্রতিযোগিতার লোগো উন্মোচন অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে ফারুক নিজের ভাবনা খোলা মনে ব্যক্ত করেছিলেন। তার প্রত্যাশা মতোই টুর্নামেন্টের শুরুটাও হলো।
যেখানে ব্যাটসম্যানরা ঝড়ো রান পেলেন। বোলাররাও তাদের আটকে রাখতে লড়লেন। জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির প্রথম দিনটি তাই রঙিন হলো ব্যাট-বলের লড়াইয়ে। টুর্নামেন্টকে ছড়িয়ে দিতে আয়োজকরা নানা পরিকল্পনা করেছে। লোগো উন্মোচন, ট্রফি উন্মোচন, জার্সি উন্মোচন করেছে পৃথক তিনটি অনুষ্ঠানে। হাজির করেছে দলের প্রতিনিধিদের। দেখার ছিল, মাঠে ক্রিকেটাররা কেমন করেন। প্রথম দিনটিকে সফল বলতেই হবে। আলো ছড়িয়ে জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির উন্মাদনা বাড়িয়ে দিয়েছেন ক্রিকেটাররা।
প্রথম দিন প্রথম ম্যাচেই সেঞ্চুরি এসেছে। সিলেটের হয়ে খেলতে নামা নারায়ণগঞ্জের তরুণ জিসান আলম ৪টি চারের সঙ্গে ১০টি ছক্কায় মাত্র ৫৩ বলে ১০০ রানের ইনিংস উপহার দেন। এই ইনিংস খেলার পথে এক ওভারেই ৫টি ছক্কা হাঁকান তিনি। জবাব দিতে নেমে ঢাকা বিভাগের আরিফুল ইসলামের ৪৬ বলে ৯৪ রান ছিল আরও দুর্দান্ত। ৬ চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কা হাঁকান আরিফুল। রান প্রসবা এই ম্যাচের শেষটাও হয় দারুণভাবে। ঢাকা বিভাগের শেষ বলে জয়ের জন্য ৫ রান লাগত। শুভাগত হোম কাভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে নিশ্চিত করেন জয়।
কুয়াশা-মাখানো সকাল, ঘাসের ডগায় বিন্দু বিন্দু শিশিরের ফোঁটা, মিষ্টি রোদ, ঘুঘু ডাকা বিকেল, পাতার ফাঁকে পাখির কিচির-মিচির, দিন জুড়ে মাতাল বাতাস, চারিদিকে রঙের আভায় প্রকৃতি মাতোয়ারা। তার মধ্যেই সিলেটের দুই মাঠে শোনা গেল ব্যাট-বলের ঠুকঠাক শব্দ। নখকামড়ানো ম্যাচ দিয়ে ছড়িয়েছে উষ্ণতা।
সিলেটের দুই মাঠে দিনে মোট চারটি ম্যাচ হয়েছে। যার একটিতে দলীয় রান দুইশ পেরিয়েছে। দুটিতে দুইশর কাছাকাছি স্কোর হয়েছে। একটি ম্যাচেই রান হয়েছে ১৩৪। একাডেমি মাঠে আলো ছড়িয়েছেন বরিশালের ফজলে মাহমুদ ও ঢাকা মেট্রোর নাঈম শেখ ও ইমরানুজ্জামান। ফজলে মাহমুদ ৫২ বলে ৭৭ রান করেন ৪ চার ও ৫ ছক্কায়। এছাড়া নাঈম শেখ ও ইমরানুজ্জামান খেলেছেন যথাক্রমে ৩৫ বলে ৬৫ ও ৩৩ বলে ৫৩ রানের ইনিংস।
প্রথম দিনের আলো ঝলমলে পারফরম্যান্সে খুশি জাতীয় দলের নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক। সিলেটে মাঠে বসে উপভোগ করেছেন চার ম্যাচ, ‘‘জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি-টোয়েন্টি আমরা শুরু থেকে এজন্যই চেয়েছিলাম। ছেলেরা ভয়ডরহীনভাবে খেলবে। ব্যাটসম্যানরা আজ রান করেছে। বোলারদের আরও লড়াই করতে হবে। জিসান-আরিফুল রান পাওয়া আমাদের তরুণদের জন্য ভালো বার্তা। বাকিরাও এই ইনিংস দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছে। বিপিএলের আগে এমন একটা টুর্নামেন্টের প্রয়োজন ছিল। আশা করছি সামনে এমন পারফরম্যান্সই ওদের থেকে দেখতে পারবো।’