২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পায় বাংলাদেশ পুরুষ ক্রিকেট দল। দুই দশক পর বাংলাদেশের নারীরাও ক্রিকেটের কুলীন সংস্করণে নাম লেখায়। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল আইসিসি বাংলাদেশ নারী দলকে টেস্ট স্ট্যাটাস দেয়। কিন্তু নারীদের এখনও টেস্ট ক্রিকেটে যাত্রা শুরু হয়নি। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) শুরু করতে যাচ্ছে নারীদের তিনদিনের ম্যাচ।
এর আগে লাল বলে নারী ক্রিকেটাররা দুই দিনের ম্যাচ খেললেও এবার নিগার সুলতানা জ্যোতি, শারমীন সুপ্তারা খেলবেন তিনদিনের ম্যাচ। নারীদের বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের পর্দা উঠবে ২১ ডিসেম্বর। সাউথ, ইস্ট, সেন্ট্রাল ও নর্থ জোন ভাগ করে খেলবেন নারী ক্রিকেটাররা। বিসিবি আজ সূচি এবং চার দলের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে। রাজশাহীর দুইটি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে দুইটি ম্যাচ।
নারী ক্রিকেটের টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখালেন বিসিবি নারী ক্রিকেট বিভাগের প্রধান হাবিবুল বাশার সুমন, ‘‘আমরা যদি টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই, তাহলে আমাদের প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলতে হবে। নারীদের তিনদিনের এই প্রতিযোগিতা সেই পথে এগিয়ে নেবে। এটি প্রথম পদক্ষেপ। তাদেরকে তিন দিনের ম্যাচ খেলে অভ্যস্ত হতে হবে। তারা যদি বড় ধৈর্ঘে্যর ক্রিকেটে আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভালো করতে চায় তাহলে এই ম্যাচগুলোতে ভালো করতে হবে। আমরা চাই মেয়েদেরকে সর্বোচ্চ সুযোগ দিতে। তারা যত বেশি প্রতিদ্বন্দ্বীতামূলক ক্রিকেট খেলবে তত ভালো করার সম্ভাবনা থাকবে। আশা করছি বিসিএলে মেয়েদের এই প্রতিযোগিতা নতুন করে তাদের ক্রিকেটে আরও এগিয়ে নেবে।’’
বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে আফগানিস্তান ও জিম্বাবুয়ে নারী দল। তারাও এখন পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে পা রাখেনি। এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে বিশ্বের দশটি নারী ক্রিকেট দল। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউ জিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস এবং আয়ারল্যান্ড টেস্ট খেলেছে। আইসিসির সহযোগী সদস্য হয়েও টেস্ট মর্যাদা পেয়েছে নেদারল্যান্ডস ও আয়ারল্যান্ড।
নারী ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছে ইংল্যান্ড (১০০)। ৭৯ টেস্ট খেলে দ্বিতীয় অবস্থানে অস্ট্রেলিয়া। এ ছাড়া নিউজিল্যান্ড (৪৫), ভারত (৪১), দক্ষিণ আফ্রিকা (১৫) এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১২) দশটির বেশি টেস্ট খেলেছে। পাকিস্তান খেলেছে ৩টি, শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস মাত্র ১টি করে টেস্ট ম্যাচ খেলেছে।
লাল বলে ক্রিকেটে খেলার স্বপ্নে বিভোর নারী ক্রিকেটাররা। তিনদিনের ম্যাচ আয়োজনের পর বিসিবি তাদের নিয়ে বড় আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। ‘এ’ দলের সিরিজ আয়োজনও করবে। হুট করেই তাদের মাঠে নামানোর ইচ্ছে নেই হাবিবুল বাশারের, ‘‘টেস্ট ক্রিকেট এতোটা সহজ না। আমারা চাই, ওদের পুরোপুরি প্রস্তুত করতে। এরপর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের মাঠে নামাতে। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে আমাদের নারী ক্রিকেট যে প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়েছে আমরা চাই টেস্ট ক্রিকেটেও একই ধারাবাহিকতায় থাকুক। এর জন্য আমাদের আলাদা ক্রিকেটার খুঁজে বের করতে হবে। তাদের নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা বড়, স্বপ্নটাও বড়। আশা করছি তারা যখন টেস্ট ক্রিকেটে মাঠে নামবে তখন ভালো প্রস্তুতি, দাপট দেখিয়েই মাঠে নামবে।’’