বাজারে গত এক মাসের তুলনায় প্রায় সব ধরনের চালের দাম জাত ভেদে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। সয়াবিন তেলের দাম কেজিতে ৮ টাকা বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে এখনো সরবরাহ বাড়েনি। অন্যদিকে, কমেছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে বাজারে নতুন আলুর দাম ছিল প্রতি কেজি ১০০ টাকা, এ সপ্তাহে তা ২০ টাকা কমে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১০০ থেকে ১১০ টাকা।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর নিউমার্কেট, কারওয়ান বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বাজারে বিআর-২৮ ও পায়জাম চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা কেজি দরে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৬২ টাকা। নাজিরশাইল চালের দামও কেজিতে ৩-৪ টাকা বেড়েছে, মানভেদে এখন বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। মিনিকেট চালের দামও ২-৩ টাকা করে বেড়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০ থেকে ৭৫ টাকায়।
সয়াবিন তেলের দাম বাড়লেও খুচরা পর্যায়ে সরবরাহ বাড়েনি। বাজারে এখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকায়, যা আগে ছিল ১৬৭ টাকা। ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৮৬০ টাকায়, যা আগে ছিল ৮১৮ টাকা। খোলা সয়াবিন তেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫৭ টাকায়, যা আগে ছিল ১৪৯ টাকা।
কমেছে সবজি, মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজারে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেগুন মানভেদে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, প্রতিটি পিস লাউ ৫০ টাকা, ফুলকপির জোড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা, দেশি শসা ৬০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৭০ টাকা, মুলা ৩০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা এবং প্রতি পিস জালি কুমড়া ৪০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নদীর মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দামও কিছুটা কমেছে। এখন মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫০ থেকে থেকে ২৮০ টাকায়। কেজি প্রতি বড় সাইজের চাষের পাঙ্গাস ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২১০ টাকা, কৈ ২০০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দামও কমেছে। এখন প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। সোনালি মুরগির বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে। লাল কক বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ টাকা কেজি দরে। গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা ও খাসির মাংসের কেজি ১১০০ টাকা।
অন্যদিকে, মুদিবাজারের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উচ্চ মূল্য অব্যাহত আছে। ডিমের দাম ডজনে ১০ টাকা কমেছে। গত সপ্তাহে ছিল ১৫০ টাকা ডজন, এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। রসুন ২২০ টাকা ও দেশি আদা ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মাহিন খান রাইজিংবিডি বলেন, “বাজারে সয়াবিন তেল পাইনি। দোকানদাররা বলছেন, দাম বাড়ছে, তারপরও সরবরাহ নেই। মুদিবাজারে দাম আগের মতোই আছে। তবে, সবজির দাম কমছে। মানুষ চাহিদামতো নিতে পারছে।”
হাজারীবাগ কাঁচাবাজারে বিক্রেতা মুনসুর আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, “পেঁয়াজ ও আলুর দাম কমছে। আশা করি, আরও কমবে। ডিলাররা অর্ডার নিয়েও তেল দিচ্ছেন না। এজন্য বাজারে দাম বাড়লেও তেলের সংকট আছে।”