সিরিয়ায় বিদ্রোহীদের অভিযানের মুখে গত রবিবার দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এরপর থেকে দেশটিতে ব্যাপক বিমান হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সিরিয়ায় হামলা বন্ধ করতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামনি নেতানিয়াহুর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু জাতিসংঘের আহ্বান উপেক্ষা করে শুক্রবার রাতে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল। এবার সরাসরি নিশানা করা হয়েছে দামেস্ককে।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গতকাল রাতে রাজধানী দামেস্কে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর চতুর্থ ডিভিশনের সদর দপ্তর এবং নিকটবর্তী গ্রামাঞ্চলে অবস্থিত একটি রাডার ব্যাটালিয়ন লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বাশার আল–আসাদের পতন উদযাপন করতে গতকাল হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। এ সময় ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালায়। তবে এখন পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানিয়েছে, আসাদ সরকারের পতনের পর থেকে সিরিয়ায় সামরিক ঘাঁটি, অস্ত্র ও গোলাবারুদের গুদাম, বিমানবন্দর এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা কেন্দ্রগুলো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি।
গত রবিবার বিদ্রোহীদের অব্যাহত আক্রমণে মুখে দামেস্ক থেকে পালিয়ে রাশিয়ায় আশ্রয় নেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ। ইসরায়েল দেশটির এই রাজনৈতিক শূন্যতার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। ওই দিন থেকেই ইসরায়েল সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বিমান হামলা চালাতে শুরু করে। এর পাশাপাশি ইসরায়েলি ট্যাংক ঢুকে পড়ে সিরিয়ায় এবং গোলান মালভূমির দখল নিতে শুরু করে।
ইসরায়েল বলেছে, তারা আসাদ সরকারের পতনের পর ‘চরমপন্থিদের হাতে’ অস্ত্র পড়া বন্ধ করতে কাজ করছে।
সিরিয়ায় আল জাজিরার সংবাদদাতার মতে, সিরিয়ায় ইসরায়েলের ব্যাপক বিমান হামলার ঘটনা দেশটির নতুন প্রশাসনের জন্য দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষার কাজে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
সিরিয়ার ওপর ইসরায়েলি হামলা ও ভূমি দখলের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব, কাতার ও ইরাক। দেশ তিনটি বলেছে, সিরিয়াতে ইসরায়েলের হামলা দেশটির সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত এবং আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ইসরায়েলের এ ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড এ অঞ্চলকে আরও সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে।’