সাভারের গোলাপ গ্রামে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফুল চাষিরা। বছরজুড়ে ফুলের চাহিদা থাকলেও বিজয় দিবসসহ বিভিন্ন দিবসকে কেন্দ্র করে ফুল বিক্রি বেড়ে যায়। গত বছর আবাদ কিছুটা কম হলেও এবার ফলন ভালো হওয়ায় ভালো বিক্রির আশাও করছেন কৃষকরা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ফুলের বাগান পরিচর্যায় দিন-রাত ব্যস্ত সময় পার করছেন সাভারের বিরুলিয়ার গোলাপগ্রামের ফুল চাষিরা। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস, ইংরেজি নববর্ষ, ভালোবাসা দিবস, একুশে ফেব্রুয়ারিসহ বিভিন্ন দিবসে ফুলের চাহিদা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। প্রতি বছরের মতো এবারও বিজয় দিবসকে কেন্দ্র করে বাড়তি লাভের আশা করছেন চাষিরা। গত বছর রোগবালাইয়ের কারণে ফলন কিছুটা কম হলেও এবার ফলন ভালো। আর আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন আরও বাড়বে। এরইমধ্যে ফুলের বাগানে দর্শনার্থী ও ঢাকাসহ আশপাশের বাজারের ফুল ব্যবসায়ীরা ভিড় করছেন।
টঙ্গী থেকে বিরুলিয়ায় ফুল কিনতে আসা মাহমুদ হোসেন বলেন, ‘‘এখানকার ফুলের মান ভালো। দামেও সস্তা। তাতে আমরা ব্যবসায় লাভবান হই। এজন্য এই জায়গা থেকে ফুল নিয়ে যাই।’’
ঢাকার হাজারীবাগ থেকে গোলাপ গ্রামে বেড়াতে আসা জেরিন খান বলেন, ‘‘আমি হাজারীবাগ থেকে এসেছি। সামনে ১৬ ডিসেম্বর, আর যেহেতু শীতের একটা ওয়েদার তাই গোলাপ গ্রামে ঘুরতে এসেছি। অনেক ভালোই লাগছে। আর এখানে অনেক সুন্দর জায়গা আছে। অনেক মানুষজন আসছে।’’
সানজিদা শারমিন নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘‘এরইমধ্যে শীত পড়ে গেছে। তাই ঘুরতে এসেছি। ১৬ ডিসেম্বরের জন্য ফুল অর্ডার করে যাচ্ছি।’’
রোগবালাইয়ের কম আক্রমণ ও ভালো ফলন হওয়ায় এ মৌসুমে ভালো বিক্রির আশা করছেন ফুল চাষিরা। রাকিব হোসেন নামে এক ফুল চাষি বলেন, ‘‘এ মাসে বিজয় দিবস, খ্রিস্টানদের বড়দিন উপলক্ষে ফুলের চাহিদা বাড়ছে। ফুলের ফলনও ভালো, আর ফলন ভালো হওয়ার কারণে আমাদের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।’’
জহিরুল ইসলাম নামে আরেক চাষি বলেন, ‘‘সামনে ১৬ ডিসেম্বর, আস্তে আস্তে দাম উঠতেছে। বাজার ভালো হইতেছে। আমাদের বাগানেও প্রচুর ফুল আছে।’’
বিরুলিয়ার গোলাপ গ্রামে এ বছর ২৩০ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ হয়েছে। ফুলের ফলন বৃদ্ধি ও রোগবালাই মুক্ত রাখতে নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অধিদপ্তর।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান বলেন, ‘‘সাভার উপজেলা কৃষি অফিস গোলাপ চাষিদের নিয়ে বিভিন্ন সময়ে কাজ করে থাকে। এখানে আমরা চাষিদের লিফলেট, পোস্টার এগুলো বিতরণ করে থাকি। এবার উপজেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে গোলাপ চাষ হয়েছে, আর মোট ৩০৫ হেক্টর জমিতে ফুলের আবাদ হয়েছে।’’
তিনি বলেন, গোলাপ চাষিরা বিভিন্ন উৎসব ঘিরে লাভের আশা করে। এবার গোলাপ চাষ করে চাষিরা অধিক ফলনও পেয়েছে। কৃষি বিভাগ চাষিদের যাবতীয় পরামর্শ এবং সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।