পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় যুবদল ও কৃষক দলের দুই নেতার সমর্থকদের মারামারিতে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১০ জনকে কলাপাড়া হাসপাতালে ও ছয় জনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া গ্রামের রামাইখাল এলাকায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায় বলে জানান কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম।
এলাকাবাসী জানান, রাবনাবাদ নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন অসংখ্য মানুষ। তবে, চাম্পাপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব মিয়া নদীর বিশাল এলাকা জুড়ে খুটা জাল পেতে রাখেন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাছ শিকারে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন জেলেরা।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর মাহতাব ও একই ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন খান কলাপাড়া থেকে চম্পাপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। রামাইখাল এলাকায় তাদের আটকানোর চেষ্টা করেন জেলেরা। এসময় স্বপন খানকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন জেলেরা।
ওই ঘটনার জেরে আজ সকাল ১০টার দিকে রামাইখাল এলাকায় চম্পাপুর ইউনিয়নের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি ফয়সাল হাওলাদার ৩ নং ওয়ার্ড কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজমনিকে মারধর করেন। দুপুরে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম বিল্লাহ ঘটনাস্থলে পৌছলে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহতাবের সমর্থক ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মুন্সীর সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। এতে ৩০ জন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
চম্পাপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মাহতাব মিয়া বলেন, রাজমনি ও লিমন আগে আওয়ামী লীগ করতো। তারা কৃষক দলের কমিটিতে স্থান পাওয়ায় স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনা নিয়ে মূলত মারামারি হয়েছে। রাবনাবাদ নদীতে জাল পাতে ওই এলাকার জেলেরা, এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।”
চম্পাপুর ইউনিয়ন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল মুন্সী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খুটা জাল পেতে রাবনাবাদ নদীর বিশাল এলাকা দখল করে রেখেছে মাহাতাব। জেলেদের পক্ষ থেকে খুটা জাল সরানোর জন্য তাকে কয়েকবার অনুরোধ করা হয়েছে। মাহাতাবের প্রায় এক থেকে দেড়শ লোক আমাদের ওপর হামলা করে। রাজমনি ও লিমন কোনোদিনই আওয়ামী লীগ করেনি। তারা আগে থেকে বিএনপি করতো।
এ বিষয়ে জানতে চম্পাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাসুম বিল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি রোগী নিয়ে ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।
কলাপাড়া থানার ওসি মো. জুয়েল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।