অবৈধভাবে দখল করা গোলান মালভূমিতে বসতি স্থাপন বাড়ানোর একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েল সরকার। সম্প্রতি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর আরো কিছু সিরীয় এলাকা দখল করে ইসরায়েলি বাহিনী। তার কয়েক দিনের মধ্যেই গোলান মালভূমিতে বসতি বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিলো ইসরায়েল সরকার।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, রবিবার (১৫ ডিসেম্বর) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সরকার ‘অধিকৃত অঞ্চলের জনমিতিক উন্নয়ন’ পরিকল্পনা সর্বসম্মতভাবে অনুমোদন করেছে। এই পরিকল্পনার লক্ষ্য ওই অঞ্চলে ইসরায়েলি জনসংখ্যা দ্বিগুণ করা।
নতুন পরিকল্পনা শুধু ১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েল অধিকৃত গোলান মালভূমির অংশে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে। ১৯৮১ সালে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট (নেসেট) এই অঞ্চলটি কার্যত সংযুক্ত করে এবং সেখানে ইসরায়েলি আইন প্রবর্তন করে।
নেতানিয়াহু বলেছেন, গোলান মালভূমি শক্তিশালী করা মানে ইসরায়েলকে শক্তিশালী করা। আমরা এই অঞ্চলটিকে ধরে রাখবো, উন্নত করবো এবং এখানে বসতি স্থাপন করবো।
এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইসরায়েল সরকার ৪ কোটি ১০ লাখ শেকেল (প্রায় ১১ মিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ করেছে। বর্তমানে গোলান মালভূমিতে প্রায় ৩১ হাজার ইসরায়েলি বসবাস করছে। তারা অসংখ্য অবৈধ বসতিতে বসবাস করে। সেখানে বসবাসকারী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ড্রুজ সম্প্রদায় রয়েছে, যারা প্রধানত নিজেদের সিরীয় বলে মনে করে।
গোলান মালভূমি, যা ১৯৬৭ সালের ছয়দিনের যুদ্ধে সিরিয়া থেকে দখল করা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে দখলকৃত এলাকা হিসেবে বিবেচিত। যদিও ইসরায়েল তা মানতে রাজি নয়।
এদিকে, নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় আপত্তি জানিয়ে দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট বলেছেন, গোলান মালভূমিতে সম্প্রসারণের কোনো প্রয়োজনীয়তা দেখছেন না তিনি।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের নিউজ আওয়ার অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সিরিয়ার সঙ্গে সংঘাত বাড়াতে ও বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চান না বলে দাবি করেছেন নেতানিয়াহু। তাহলে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা করে আবার ঠিক উল্টো কাজটিই বা কেন করছি! আমরা ইতোমধ্যেই যথেষ্ট সংকট মোকাবিলা করছি।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণার কিছুদিন আগেই সিরিয়ার নতুন নেতা আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি সামরিক অবকাঠামোতে ধারাবাহিক ইসরায়েলি হামলার সমালোচনা করেছিলেন।
সিরিয়া টিভিতে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আল-জোলানি বলেছেন, ইসরায়েলি হামলা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। ফলে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেশী কোনো রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতে জড়াতে চায় না সিরিয়া। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের নতুন সংঘাতে জড়ানোর অবস্থা নেই।