সারা বাংলা

রাজশাহীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে বাস চলাচল শুরু

পুলিশের হস্তক্ষেপে রাজশাহী থেকে সব গন্তব্যে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুর থেকে বাস চলাচল শুরু হয়। 

গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহীর তানোরে ছয়জন বাস শ্রমিককে মারধর করা হয়। এরই জেরে সেদিন দুপুর থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকরা। পরে রাতে বাস চলাচল শুরু হলেও আজ সকালে তা আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

বাস শ্রমিকদের অভিযোগ, গতকাল তানোরে সিএনজি অটোরিকশার চালকরা বাসের ছয়জন চালক, হেলপার ও কন্ডাক্টরকে মারধর করেন। তারা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এই ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে বাস শ্রমিকরা নগরের রেলগেটে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে হামলা করেন। এ সময় কমপক্ষে ৭০টি সিএনজি অটোরিকশার কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়। হামলায় চালক-যাত্রীসহ অন্তত ১২ জন আহত হন। 

আরো পড়ুন: রাজশাহীতে অটোরিকশার স্ট্যান্ডে বাস শ্রমিকদের হামলা!

সিএনজি অটোরিকশা চালকদের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, আহত হয়েছেন প্রায় ৪০ জন। 

এই ঘটনার পর রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) নূর আলম সিদ্দিকী বাস মালিক ও শ্রমিক নেতা এবং সিএনজি মালিক সমিতির সঙ্গে আলাদা আলাদা করে বসেছেন।

রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিক আলী পাখি বলেন, “ডিসি স্যার আমাদের নিয়ে বসেছিলেন। তিনি বলেছেন যে, আমাদের যেসব শ্রমিক হাসপাতালে ভর্তি আছে তাদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি আমরা একটা মামলা করেছি, ওই মামলা মামলার গতিতে চলবে। সে জন্য আমাদের শ্রমিকেরা বাস চালানো শুরু করেছেন।”

আরো পড়ুন: শ্রমিকদের মারধরের জেরে রাজশাহী থেকে যাচ্ছে না বাস

সোমবার ছয়জন বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় রাতে তানোর থানায় ওই মামলা কর হয়। এতে আসামি হিসেবে ১৮ জন সিএনজি অটোরিকশা চালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নাম না জানা আরও কয়েকজনকে আসামি আছে। মামলার পর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজশাহী সিএনজি মালিক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “আমাদের প্রায় ৯০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। পিটিয়ে আহত করা হয়েছে কমপক্ষে ৪০ জনকে। এদের বেশিরভাগই চালক। কয়েকজন যাত্রী আছেন। এদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারীও আছেন।”

তিনি বলেন, “ট্রাফিক বিভাগের ডিসি আমাদের ডেকেছিলেন। আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনজন গিয়েছিলাম। তখন বাস মালিক-শ্রমিক নেতাদের কেউ ছিলেন না। তিনি আমাদের কথা শুনেছেন।”

সিরাজুল বলেন, “গাড়ি ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনায় সন্ধ্যায় আমরাও মামলা করব।”

নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী মাসুদ বলেন, ‘আমরা ভাঙচুর করা ৩২টি সিএনজি অটোরিকশা দেখেছি। ভাঙচুর করা গাড়ির সংখ্যা ৭০টি হতে পারে। অন্য গাড়িগুলো চলে গেছে। সব গাড়িরই শুধু কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর কিছু গাড়ি উল্টে ফেলা হয়।”

ওসি বলেন, “যাত্রী ও চালক মিলিয়ে ১২ জনের মতো আহত হতে পারেন। আমরা সিএনজি চালকদের মামলা করতে বলেছি। তারা মামলা দিলে আমরা নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।”

রাজশাহীতে সিএনজি চালক ও বাস শ্রমিকদের এই দ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। বাস শ্রমিকেরা দীর্ঘদিন ধরেই সিএনজি স্ট্যান্ড শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়ার দাবি করছেন। প্রায়ই তাদের মধ্যে ছোটখাট সংঘাত হয়। এর আগেও বাস চালক ও হেলপাররা তানোর উপজেলা সদরে মারধরের শিকার হয়েছেন। তখনো বাস চালকরা গাড়ি বন্ধ রেখে এর প্রতিবাদ করেছেন।