পূর্ব তিমুরে বর্তমানে প্রায় ২০০-৩০০ বাংলাদেশি নাগরিক বসবাস করছেন। সেখানে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য আইন অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদি স্টে-পারমিট (স্থায়ী আবাস) এবং ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট ড. হোসে রামোস হোর্তার সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) যৌথ ঘোষণায় এ কথা বলা হয়েছে।
পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট ড. হোসে রামোস হোর্তা ১৪-১৭ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকারি আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফর করেন। সফরকালে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট ড. হোসে রামোস হোর্তা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ২০২৪-এর শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন, যারা একটি স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস হোর্তা ২০০২ সালে পূর্ব তিমুরে বাংলাদেশ শান্তিরক্ষী বাহিনীর অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ও পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ও পূর্ব তিমুরের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা সফরের সময় ‘দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রক্রিয়া (বিসিএম)’ এবং ‘কূটনৈতিক ও অফিসিয়াল বা সার্ভিস পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসার প্রয়োজনীয়তা থেকে অব্যাহতি’ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রশংসা করেন।
সফরকালে উভয়পক্ষ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, বিমান পরিষেবা, সাংস্কৃতিক বিনিময়, শিক্ষা, পেশাদার ও কূটনৈতিক প্রশিক্ষণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (এসএমই) ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতির সম্ভাবনা অন্বেষণ করেছে।
দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুই সরকারের মধ্যে সহযোগিতার উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলো আরও আলোচনা করা হবে। উভয়পক্ষ পশুসম্পদ ও পশুচিকিৎসা বিজ্ঞান, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা এবং জলজ পালন, আইসিটি, পর্যটন, বাংলাদেশ প্রবাসী, অভিন্ন স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিসহ কৃষি সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছে। তারা শিক্ষার্থী বিনিময়, গবেষণা প্রকল্প, ডক্টরাল প্রোগ্রামের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কথাও তুলে ধরেন।
উভয় নেতাই জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা, সবুজ শক্তি, মানবপাচার এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যৌথ প্রচেষ্টার গুরুত্বের ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশে অবস্থানরত জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে পূর্ব তিমুরের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ থেকে তাদের অবিলম্বে প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ফোরামে পূর্ব তিমুরের সক্রিয় ভূমিকার আহ্বান জানিয়েছে। উভয়েই একমত যে দীর্ঘস্থায়ী রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান একমাত্র মিয়ানমারের হাতেই রয়েছে।