প্রতি বছরের মতো এবারও রাজধানীর এয়ারপোর্ট সংলগ্ন কাওলা (আশিয়ান সিটি) ময়দানে আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তিন দিনের সুন্নাতে ভরা ইজতিমা।
কোরআন ও সুন্নাত প্রচারের বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক দ্বীনি সংগঠন দাওয়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত এ ইজতেমা শেষ হবে ২১ ডিসেম্বর ১০টায় বিশেষ বয়ান ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে।
দেশের লাখো মুসল্লি এই ইজতিমায় যোগ দেবেন। তিন দিনের সুন্নাতে ভরা এ ইজতিমার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জিম্মাদার (মিডিয়া বিভাগ) মুফতি জহিরুল ইসলাম মুজাদ্দেদী আত্তারী।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) আশিয়ান সিটির ইজতেমা ময়দানে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
মুফতি জহির বলেন, ‘‘প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা সুন্দর সুশৃঙ্খলভাবে তিন দিনের সুন্নতে ভরা ইজতেমার আয়োজন করেছি। ইতিমধ্যে কাওলা (আশিয়ান সিটি) ময়দানজুড়ে টানানো হয়েছে বিশাল প্যান্ডেল। পুলিশ চেকপোস্ট, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ পথে বসানো হয়েছে বিশেষ চেকপোস্ট ও ৫টি ওয়াচ টাওয়ার। আগত মুসল্লিদের তল্লাশি করে মাঠে প্রবেশ করানো হবে। পুলিশ, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে দাওয়াতে ইসলামীর কয়েকশ নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী। এছাড়া মুসল্লিদের জন্য অজু, গোসল, প্রয়োজনীয় হাজতখানা ও খাবারের জন্য বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা থাকছে। পিডিবির সহায়তায় দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।
সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি দিনের ইজতেমা জিম্মাদার ও দা'ওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হক কাদেরী।
উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির জিম্মাদার সরফরাজ আশরাফী, বাহাদুর কাদেরী, মুহাম্মদ জাকির আত্তারি প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘‘সুফিবাদ ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের আক্বিদায় বিশ্বাসী, বিশ্বব্যাপী অরাজনৈতিক সংগঠন হলো দাওয়াতে ইসলামী। সারাবিশ্বের মতো এদেশে ২০১৫ সাল থেকে তিন দিনের এই ইজতেমা করে যাচ্ছি।’’
ইজতেমায় কোরআন, সুন্নাহ, ইজমা-কেয়াসের ভিত্তিতে ইমান-আক্বিদা ও আমল সম্পর্কে দিনরাত বয়ান করা হবে। কীভাবে নামাজ পড়তে হবে, ইসলামের ফরজ, সুন্নাত, নফল এবাদত কীভাবে করতে হয় দালিলিক প্রমাণ দ্বারা হাতে-কলমে মুসল্লিদের শিখিয়ে দেওয়া হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, শান্তির পথে ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করা, জেহাদের নামে জঙ্গিবাদের যে স্থান নেই-এ বিষয়টি জনসাধারণকে সচেতন করে তুলতে কোরআন-সুন্নাহভিত্তিক সারগর্ভ আলোচনা হবে।
দেশেরবরেণ্য সুন্নি ওলামায়ে কেরাম ও মোবাল্লিগরা এখানে আলোচনায় অংশ নেবেন। প্রতি দিন বয়ান শেষে মিলাদ, কিয়াম ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দেশ, জাতি ও মুসলিম বিশ্বের জন্য দোয়া করা হবে। সারাদেশ থেকে ইজতেমায় লাখ লাখ আশেকে রাসুলের ঢল নামবে বলেও জানান জিম্মাদার।
দাওয়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মাহমুদ হক কাদেরি বলেন, ‘‘শুধু বাংলাদেশে নয় ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে এই ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ইজতেমা শেষে মুসল্লিরা ১২ দিন, ৩০ দিন, ৬৩ দিন, ৯২ দিন ও ১২ মাসের মাদানী কাফেলায় বের হয়ে দেশের বিভিন্ন মসজিদে সফর করে ইলমে দ্বীন প্রচার করবে এবং মানুষকে ইসলামের পথে দাওয়াত দেবে।’’