বিগত সরকারের কথিত উন্নয়নকে চ্যালেঞ্জ করে নিরাপদ সড়ক আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। ওই আন্দোলনের মাধ্যমে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মাথায় নিরাপদ সড়কের বিষয়টি গেঁথে গেছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনা ও কাঠামোগত সংস্কার বিষয়ক জাতীয় সংলাপে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
সড়ক নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কাঠামোগত সংস্কার প্রয়োজন। পাশাপাশি পরিবহন খাতে রাজনৈতিক দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “যেসব কাঠামোগত উন্নয়ন মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে না, সেসব উন্নয়ন অর্থহীন। তাই, আমাদের মৌলিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রয়োজন।”
সড়ক দুর্ঘটনাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সড়কে বিশৃঙ্খলার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত দুর্বলতা অনেকাংশে দায়ী।”
পরিবহন খাতে বহুমুখী সমস্যার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় রাজনৈতিক সদিচ্ছার কোনো বিকল্প নেই। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপদেষ্টা পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্যের বরাত দিয়ে সংলাপে জানানো হয়, ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন এবং ৬৫ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। সংলাপে আরও জানানো হয়, গণপরিবহন ৫৩ শতাংশ যাত্রী বহন করে, আর ব্যক্তিগত যানবাহন ১১ শতাংশ যাত্রী বহন করে। অথচ ব্যক্তিগত যানবাহন ৭০ শতাংশ সড়ক দখল করে চলে। ৩০ শতাংশের কম জায়গায় চলে গণপরিবহন। এটি সাধারণ মানুষের প্রতি চরম বৈষম্য।
সংলাপের শুরুতে সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় করণীয় বিষয়ে একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি আব্দুলাহ এম ফেরদৌস খান। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ আই মাহবুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সংলাপে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি সৈয়দ জাহাঙ্গীর, রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান-সহ পরিবহন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বক্তব্য দেন।