সারা বাংলা

৯ দাবিতে নওগাঁয় এসপি অফিসের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজদের গ্রেপ্তারসহ ৯ দফা দাবিতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। 

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন উপস্থিত হয়ে দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি স্থগিত করেন। আগামী সাতদিনের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে নওগাঁ জেলার সব থানা ঘেরাওসহ কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা অভিযোগ করেন, নওগাঁয় দিন দিন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও সন্ত্রাসী তৎপরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তারে পুলিশ নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। অবিলম্বে পুলিশের সক্রিয় ভূমিকা পালনসহ নওগাঁয় অবস্থানরত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ এবং তাদের সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে ৯ দফা তুলে ধরা হয়েছে। 

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান, ফজলে রাব্বি ও সাদমান সাকিব উপস্থিত ছিলেন।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দীন বলেন, “স্বাধীনতার সুফল পুলিশ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবে। যে ছাত্র-জনতা স্বাধীনতা এনেছে তাদেরকে নিয়ে এক সঙ্গে কাজ করে নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে পুলিশ কাজ করে যাবে ইনশাআল্লাহ। শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে কাজ করা হবে।”

দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-  ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নওগাঁয় অবস্থানরত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও সহযোগী সংগঠনের সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। জুলাই বিপ্লবে নওগাঁয় প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর হামলাকারী আমানুজ্জামান শিউল ও তার লাঠিয়াল বাহিনী, অর্থ ও মদত প্রদানকারী নিজাম উদ্দিন জলিল জন (নওগাঁ-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য), সাব্বির রহমান রিজভী (নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি), নূর মোহাম্মদ লাল, ইকবাল শাহরিয়াল রাসেল, বিমান কুমার রয়সহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তার করতে হবে। বিশেষ ভদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যমে তাদের অতীত ইতিহাসের কুকর্ম সবার সামনে নিয়ে এসে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সাধারণ মানুষের অভিযোগ (মামলা বা জিডি) রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীকে সুবিধা দেওয়া যাবে না। সব সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশকে সমানভাবে কাজ করতে হবে। দক্ষ, সৎ ও মাঠ পর্যায়ে অভিজ্ঞ ওসি সব থানায় নিয়োগ দিতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনলে অংশগ্রহণকারী ও সাধারণ জনগণসহ সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং নজরদারি বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। নওগাঁয় কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, ছিনতাই রোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জুলাই বিপ্লবের সময় নওগাঁয় কর্মরত যেসব এসপি, ওসি, এসআইসহ পুলিশের কর্মকর্তা ছিল তাদের কার্যক্রমের প্রেক্ষিতে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে নতুন যেসব পুলিশ কর্মকর্তা নওগাঁতে বদলি হয়ে এসেছেন তাদের পূর্ব কর্মস্থল বিশেষ করে জুলাই বিপ্লবে তাদের কার্যক্রম রিপোর্ট আকারে পেশ করতে হবে। আইন শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে যে সুধি সমাবেশ হয়েছিল সেটি রাজনৈতিক বক্তা থাকায় সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান রাজনৈতিক রূপ নেয় যে কারণে সাধারণ মানুষ তাদের কথা তুলে ধরতে পারেনি। সেজন্য একটি সমাবেশ আয়োজন করতে হবে যেখানে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজিকে উপস্থিত করতে হবে এবং জনসভার আয়োজন করতে হবে। নওগাঁ জেলার সব খানার ওসিকে উপস্থিত রাখতে হবে এবং জনগণ তাদের কথা তুলে ধরবে সেখানে কোনো রাজনৈতিক ব্যানারে কেউ থাকতে পারবে না এবং মুক্ত আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে।  তদন্ত কমিটি ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টের ভিত্তিতে পুলিশবাদী মামলা করতে হবে।