আন্তর্জাতিক

কলকাতায় অ-হিন্দু বাংলাদেশিদের চিকিৎসা না দেওয়ার দাবিতে বিজেপির বিক্ষোভ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের রাজধানী কলকাতায়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অ-হিন্দু তথা মুসলিমদের চিকিৎসা না দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি—বিজেপির কর্মীরা। 

শনিবার (২১ ডিসেম্বর) কলকাতার মুকুন্দপুর এলাকায় তারা এই বিক্ষোভ শুরু করে। তাদের দাবি, কলকাতার বেসরকারি একটি হাসপাতালকে বাংলাদেশের অ-হিন্দু রোগীদের চিকিৎসাসেবা প্রদান বন্ধ করতে হবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিক্ষোভকারীরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এই দাবিতে একটি স্মারকলিপি জমা দেয়। যেখানে লেখা ছিল, ‘‘দেশ আগে...আমাদের ভাই-বোনেরা সেখানে অত্যাচারিত ও নিহত হচ্ছে। তাই অ-হিন্দু বাংলাদেশিদের কোনো চিকিৎসাসেবা দেওয়া উচিত নয়।’’

স্মারকলিপিতে আরো লেখা ছিল, ‘‘আমাদের নীতি এবং ব্যবসা একপাশে রেখে জাতির, তেরঙার (ভারতের জাতীয় পতাকা) সম্মানের জন্য এগিয়ে আসার সময় এখন।’’ 

বিক্ষোভে যোগ দেওয়া বিজেপির কর্মী নারায়ণ চ্যাটার্জি বলেন, ‘‘আমাদের সংখ্যালঘু হিন্দু ভাই-বোনদের সঙ্গে বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তাতে আমরা ব্যথিত। তাদের অত্যাচারিত ও হত্যা করা হচ্ছে। এটি বন্ধ হওয়া উচিত।’’

স্যালুট তেরঙা—নামের একটি ব্যানারের অধীনে বিক্ষোভকারীরা ঘোষণা করেছে, তারা সব বেসরকারি হাসপাতালকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাদের প্রতিবাদ বিস্তৃত করবে। তারা জানিয়েছে, অন্য একটি হাসপাতালেও তারা এর আগে এমনটা করেছে।

ডিসেম্বরের শুরুর দিকে কলকাতার একটি ১৪১ শয্যার হাসপাতাল ঘোষণা করেছিল, তারা আর বাংলাদেশের কোনো রোগীকে ভর্তি করবে না। হাসপাতালটির দাবি ছিল, দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যে ভারতীয় জাতীয় পতাকার প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের প্রতিবাদে এটি করা হয়েছে। কলকাতার আরেকটি হাসপাতালও একই ধরনের ঘোষণা দিয়েছিল। তারা জানিয়েছিল, ‘‘ভারতের জাতীয় পতাকা প্রতিবেশী দেশের বিভিন্ন স্থানে অপমানিত হয়েছে।’’

পশ্চিমবঙ্গের রাজধানীর হাসপাতালগুলোর বাইরে চলতি বছর কলকাতার দুটি প্রধান মেলা—কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা এবং বিধাননগর মেলা উৎসবে বাংলাদেশের কোনো স্টল দেখা যায়নি। এই মেলা বিধাননগর পৌর করপোরেশন (বিএমসি) আয়োজন করে। এ ছাড়া, কলকাতার ৩০তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবেও প্রতিবেশী দেশটির কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না।

এমনকি, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশ ভবনে দুই দিনের একটি বাংলা সাহিত্য উৎসবেও বাংলাদেশের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি কবি ও লেখককে ভিসা দেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।