গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বিজয় দিবস হলের প্রাধ্যক্ষের অফিসের জানালা-দরজা ভাঙচুর করেছেন সিট বঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে তারা এ ভাঙচুর চালান।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, হলের আবাসিকতা বরাদ্দ দেওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার দিকে সিট বঞ্ছিত শিক্ষার্থীরা ঘণ্টাব্যাপী হল অফিসের সামনে জড়ো হয়ে ভাঙচুর চালান। এতে প্রাধ্যক্ষের অফিসের জানালা-দরজা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পূর্ব থেকে হলে অবস্থান করা শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষের কাছে দীর্ঘদিন অ্যালোটের জন্য বারবার আবেদন করলেও তিনি তা দেননি। তিনি তাদের সিটে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নতুন শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দিয়েছেন। ফলে সিটে অবস্থান করা আনঅ্যালোটেট শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে হলে অবস্থানরত বরাদ্দ বঞ্চিত এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রাধ্যক্ষ স্যার অন্যায়ভাবে আমাদের সিটগুলো দীর্ঘদিন ধরে বরাদ্দ না দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এখন অন্যদের দিয়েছেন, যা চরম বৈষম্য ছাড়া কিছু নয়। আমরা তার কাছে ১০ মাস ধরে সিট বরাদ্দের আবেদন করে তার পেছনে ঘুরছি। কিভাবে আমাদের তিনি বঞ্চিত করেন?”
তিনি বলেন, “তিনি তার বিভাগ ও জেলার শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাত করেছেন। আমরা এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তার কাছে গেছিলাম। কিন্তু তিনি অফিসে তার পক্ষ নিয়ে দালালি করার জন্য কিছু শিক্ষার্থীকে সঙ্গে করে বসেছিলেন। ফলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে দরজা-জানালায় আঘাত করেন। এর সম্পূর্ণ দায় প্রাধ্যক্ষ স্যারের।”
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়ে তিনি আরও বলেন, “আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এর একটা সুষ্ঠু ফয়সালা করে দিক। এভাবে শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান করে দিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি করা মোটেও ঠিক হচ্ছে না।”
তবে বিজয় দিবস হলের প্রাধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক ড. মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মতো আমিও চেয়েছি হলে বৈষম্য দূর করে নতুন করে সঠিক পদ্ধতিতে সিট বরাদ্দ দেওয়ার জন্য। সব বিভাগ যাতে সমান অধিকার পায়, তার জন্য আমি অবৈধভাবে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের বরাদ্দ দেয়নি। আমি বিভাগ ভিত্তিক সমানভাবে বরাদ্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “তারা এখন বলছে- আমার কাছে অনেকবার আসছে সিট বৈধ করার জন্য, এটা মোটেও সঠিক নয়। আমার কাছে আজ পর্যন্ত কেউ আসেনি। বাংলা বিভাগের একজন শিক্ষার্থী কয়েকবার আসছিল, কিন্তু তাকে বরাদ্দ দেয়নি। কারণ বাংলা বিভাগের ১৩ জন শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে হলে আছে। তাই নতুন করে তাকে দিলে অন্য বিভাগের সঙ্গে বৈষম্য করা হবে। আমি বলবো, তারা যাদি বরাদ্দের তালিকা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে, তাহলে বুঝতে পারবে; কারোর সঙ্গেই বৈষম্য করা হয়নি।”