চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ঈশানবালায় মেসার্স বৃষ্টি এন্টার প্রাইজের আল বাখেরা নামে একটি জাহাজে চালকসহ সাত জনকে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন।
নৌ পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পরিদর্শক শেখ আব্দুর সবুর জানান, চট্টগ্রামের কাপ্পো জেটি হতে সার বোঝাই করে মেসার্স বৃষ্টি এন্টার প্রাইজের আল বাখেরা নামের একটি জাহাজ সিরাজগঞ্জের উদ্দ্যেশ্যে রওনা হয়। সোমবার চাঁদপুরের ঈশানবালা ও মাঝের চর এলাকার মাঝামাঝি মেঘনা নদীতে জাহাজটি নোঙ্গর করা দেখে অন্য জাহাজের লোকজন জাহাজের খোঁজ-খবর নিতে যায়।
জাহাজে গিয়ে পাঁচ জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে। সেসময় জাহাজটির বিভিন্ন ডেকে আরও তিন জনকে রক্তাক্ত ও মুমূর্ষ অবস্থায় খুঁজে পান। তাদেরকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠালে চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং এক জনকে ঢাকায় পাঠান বলে জানান সবুর।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, “যে তিন জনকে হাসপাতালে আনা হয়েছে, তার মধ্যে দুজনকে মৃত পাই। মৃত দুজনের মাথায় ও শরীরের ধারালো অস্ত্রের কোপ ছিল। যাকে ঢাকায় রেফার করেছি, তার গলা কেটে দেওয়ার চিহ্ন রয়েছে।”
এদিকে এই ঘটনায় বিস্মিত চাঁদপুরবাসী রহস্য উন্মোচনসহ জড়িতদের দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছে। পরিকল্পিত এই হত্যার পিছনে করা জড়িত, কেন এমন নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা।
চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, “বেশ কিছু তথ্য উপাত্ত নিয়ে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত রহস্য উন্মোচিত করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদী।”
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, “প্রতিনিয়ত মেঘনা নদীর ওই রুটে জাহাজে করে কোটি কোটি টাকার পণ্য আনা নেওয়া করা হয়। এই নৌ পথে এমন ঘটনায় নিরাপত্তা ঘাটতি ছিল। এ ঘটনার পর নিরাপত্তা জোরদার করতে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত এই ঘটনায় জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছে।”
চাঁদপুর নৌ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, “এখন পর্যন্ত ঘটনায় নিহতদের মধ্যে জাহাজটির মাস্রটা কিবরিয়া, ড্রাইভার সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সী, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, গ্রিজার আজিজুল, লস্কর মাজেদুলের নাম জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া ঢাকায় রেফার করা আহত লোকটি ছিল জাহাজটির সুকানি মো. জুয়েল। এরা প্রত্যেকেই ফরিদপুর, শেরপুরসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।”