জাতীয়

বাংলাদেশ-জাপান মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

প্রথম দেশ হিসেবে জাপানের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। চুক্তির স্বার্থে ইতোমধ্যে তিন দফা বৈঠক হয়েছে। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে উভয় দেশ চতুর্থ দফায় ঢাকায় বৈঠকে বসবে।

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এ তথ্য জানান।

বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, কূটনৈতিক সম্পর্ক থাকলেও মুক্তবাণিজ্য চুক্তি নেই কোনো দেশের সাথে। জাপানের সাথে এই চুক্তি হলে প্রথম কোনো দেশের সাথে ইপিএ চুক্তি হবে বাংলাদেশের।

মোহাম্মদ রফিকুল আলম জানান, গত ১৮-২০ ডিসেম্বর জাপানে বাংলাদেশ-জাপানের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের নিমিত্ত তৃতীয় দফা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। জাপানের সঙ্গে চলমান এই আলোচনায় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। এ বছর ইতোমধ্যেই আরও দুই দফা আলোচনা হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় দফা আলোচনা ঢাকায় ১৯-২৩ মে ২০২৪ এবং ১০-১৪ নভেম্বর ২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, সফলভাবে আলোচনা সম্পন্ন হলে এটি হবে যেকোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। আলোচনার চতুর্থ দফা আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এবং ৫ম দফা টোকিওতে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মোট ২১টি অধ্যায়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সফলভাবে আলোচনা সম্পন্ন হলে এটি হবে যেকোনো দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। আলোচনার চতুর্থ দফা আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় এবং ৫ম দফা টোকিওতে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। মোট ২১টি অধ্যায়ের ওপর আলোচনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘‘এলডিসি-পরবর্তী সময়ে রপ্তানির বাজার ধরে রাখা ও তা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করা ও বাণিজ্য জোটে যোগদানের বিষয়টি সঠিকভাবেই এক গুরুত্বপূর্ণ করণীয় হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এ ক্ষেত্রে তেমন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। এখনো কোনো দেশের সঙ্গেই এফটিএ স্বাক্ষর হয়নি।”

তারা বলছেন, ‘‘জাপানের সঙ্গে এফটিএ হলে বাংলাদেশের সৌহার্দ্যপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থাপন হবে, যা দুদেশের ব্যবসায়িক সম্প্রসারণে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে। প্রতিযোগিতামূলক বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে জাপানি প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বাংলাদেশ পরবর্তী বিনিয়োগে নির্ভরযোগ্য গন্তব্য হয়ে উঠবে আশা করা যায়।”

এক জরিপে দেখা গেছে, উভয় দেশে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রায় ৮৫ শতাংশ বাংলাদেশি ও জাপানি প্রতিষ্ঠান চায় তাদের নিজ নিজ সরকার মুক্তবাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করুক। চুক্তির আওতায় যাতে ২০২৬ সালে উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার পরও বাংলাদেশের শুল্ক সুবিধা অব্যাহত থাকে। অন্যথায় জাপানের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করা অন্যান্য দেশের পণ্যের কাছে বাংলাদেশি পণ্য প্রতিযোগিতায় হেরে যাবে।

প্রসঙ্গত, মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা এফটিএ হলো উভয় দেশ বা আঞ্চলিক ব্লকগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাধা কমাতে বা দূর করার জন্য একটি চুক্তি, বা বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে পারস্পরিক আলোচনা। এতে পণ্য, পরিষেবা, বিনিয়োগ, মেধা সম্পত্তি, প্রতিযোগিতা, সরকারী সংগ্রহ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রগুলোও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।