চিকিৎসকেরা বলছেন, থাইরয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি পুরুষের থেকে নারীর ১০ গুণ বেশি। থাইরয়েড গ্লান্ড হচ্ছে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থি যা আমাদের থাইরক্সিন হরমোন উৎপাদন করে থাকে। এই হরমোন আমাদের শরীরের নানা ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড হরমোনের কোনো ঘাটতি বা বাড়তি দেখা দিলে শরীরের নানা ধরনের সমস্যা দেখা যায়।
ডা. তানজিনা হোসেন, সহকারী অধ্যাপক, ডায়াবেটিক, হরমোন ও থাইরয়েড বিভাগ গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল বলেন, ‘‘ থাইরয়েডের সমস্যা নারীর ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। এই রোগ হলে নারী মুটিয়ে যাওয়া, ত্বকের সমস্যা দেখা দেওয়া, চুল পড়া, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ক্লান্তিবোধে ভুগতে শুরু করেন। এ ছাড়া অনেক নারীর মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। আবার অনেক নারীর সন্তান ধারণের সমস্যা দিতে পারে। বিকলাঙ্গ সন্তান দিতে পারেন।’’
‘‘থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা নির্ণয় করার জন্য রক্তের বিভিন্ন মাত্রা পরীক্ষা করতে হয়। যেমন থাইরয়েড ফাংশন টেস্ট, অর্থাৎ রক্তের টিএসএইচ, ফ্রি-টিফোর, ফ্রি-টিথ্রি ইত্যাদি। কখনো কখনো গলার সামনে থাইরয়েড গ্রন্থটি ফুলে যেতে পারে। এই অবস্থাকে আগে গলগন্ড রোগ বলা হতো। ফুলে যাওয়া গ্লান্ড থেকে অনেক সময় রস নিয়ে পরীক্ষা করা লাগতে পারে। এমনকি আল্ট্রাসনোগ্রাফিরও প্রয়োজন হতে পারে।’’— যোগ করেন ডা. তানজিনা হোসেন।
ডা. তানজিনা হোসেন আরও বলেন, ‘‘ থাইরয়েড গ্রন্থটির মধ্যে ক্যান্সারের কোষ পাওয়া গেলে গ্রন্থটি কেটে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে। তবে ক্যান্সারের ঝুঁকি খুবই কম। থাইরয়েডের সমস্যা চিকিৎসাতেই ভালো হয়ে যায়। বিশেষ করে হাইপো থাইরয়েজম যেটা অর্থাৎ যেটাতে থাইরয়েড হরমোনের ঘাটতি থাকে সেক্ষেত্রে সারা জীবন থাইরক্সিন হরমোন ট্যাবলেট খেয়ে যেতে হয়। এবং মাঝে মাঝে পরীক্ষা করে দেখতে হয় যে হরমোনের মাত্রা ঠিক আছে কিনা। আর যদি হাইপার থাইরয়েজম হয় বা থাইরয়েড বাড়তে থাকে তাহলে ওষুধ, শল্য চিকিৎসা ও রেডিয়েশন এই তিনটি মাধ্যমে চিকিৎসা করা যেতে পারে। কার জন্য কোন চিকিৎসা সবচেয়ে ভালো সেটা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা নির্ণয় করে থাকেন।’’