জ্বালানি চাহিদা মেটাতে আগামী ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের জন্য এক কার্গো লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করবে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। আন্তর্জাতিক কোটেশনে অংশ নিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা হওয়া কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন এসব এলএনজি সরবরাহ করবে। প্রতি এককের দাম ১৪.৬৯০০ মার্কিন ডলার। সে হিসেবে এক কার্গো এলএনজি কিনতে ব্যয় হবে ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সভায় কমিটির সদস্য ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর সময়ে স্পট মার্কেট থেকে ৫৯ কার্গো এলএনজি আমদানির প্রস্তাব গত ৪ নভেম্বর অনুমোদন দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ। ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে কোটেশন আহ্বান করে এমএসপিএ স্বাক্ষরকারী ২৩ প্রতিষ্ঠানকে এলএসপি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোটেশন দাখিলের জন্য ই-মেইলে চিঠি পাঠানো হয়। নির্ধারিত সময়ে দর প্রস্তাবকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর দাখিল করা তিনটি কোটেশন কারিগরি ও আর্থিকভাবে মূল্যায়ন করে সুপারিশসম্বলিত একটি প্রতিবেদন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগে দাখিল করে দরপত্র ও প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি। তিনটি কোটেশনের মধ্যে সবগুলোই রেসপন্সিভ হয়। এর মধ্যে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ১৪.৬৯০০ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের এক্সেলারিয়েট এনার্জি ১৪.৮৪০০ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে দ্বিতীয় এবং সিঙ্গাপুরের পেট্রোচায়না ইন্টারন্যাশনাল ১৪.৮৬০০ ডলার উল্লেখ করে তৃতীয় দরদাতা হয়।
রেসপন্সিভ তিন কোটেশন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সর্বনিম্ন একক দর ১৪.৬৯০০ মার্কিন ডলার/এমএমবিটিইউ দাখিল করেছে কোরিয়ার পসকো ইন্টারন্যাশনাল করপোরেশন। ওই প্রতিষ্ঠানের সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ। স্বাক্ষরিত এমএসপিএ অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ কম-বেশি বিবেচনায় সরবরাহতব্য এলএনজির পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ হতে পারে। প্রতি এমএমবিটিইউ ১৪.৬৯০০ ডলার হিসেবে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ৪৯ কোটি ৩৫ লাখ ৮ হাজার ৪০০ মার্কিন ডলার (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতিত)। গত ২২ ডিসেম্বর সোনালী ব্যাংকের মুদ্রা বিনিময় হার ১ মার্কিন ডলার ১২০ টাকা হিসেবে এ অর্থের পরিমাণ ৫৯২ কোটি ৩০ লাখ ৮ হাজার টাকা (ভ্যাট এবং এআইটি ব্যতিত)।
এলএনজি আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট এবং ২ শতাংশ এআইটি প্রযোজ্য হবে। ফলে, ১৭ শতাংশ ভ্যাট এবং এআইটির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ ১০০ কোটি ৬৯ লাখ ১১ হাজার ৩৬০ টাকা। অর্থাৎ ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইট এলএনজি আমদানিতে প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ হবে সর্বমোট ৬৯২ কোটি ৯৯ লাখ ১৯ হাজার ৩৬০ টাকা।