শীত এলেই ভোজন রসিকদের কাছে হাঁসের মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়। হাঁসের মাংসে রয়েছে উচ্চমাত্রার পুষ্টিগুণ। পুষ্টিবিদরা বলছেন, গরুর মাংসের চেয়ে হাঁসের মাংসে বেশি পুষ্টিগুণ রয়েছে। কিন্তু সবার জন্য এই মাংস উপকারী নাও হতে পারে- এ বিষয়ে রাইজিংবিডিকে বিস্তারিত জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টিবিদ জাহানারা আক্তার সুমি।
এই পুষ্টিবিদ বলেন, ‘‘হাঁসের মাংস আমাদের দেশে খুব জনপ্রিয়। বিশেষ করে শীতকালে এর চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়ে যায়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, দৈনন্দিন খাবারের টেবিলে, সকালের নাস্তায়, বিকেল বা সন্ধ্যায় হাঁসের মাংস রাখতে আমরা পছন্দ করি। হাঁসের মাংস খেতে আমাদের যেমন উৎসাহ দেখা যায় তেমনি এই খাবার নিয়ে আমাদের মাঝে বেশ সংশয়ও রয়েছে। বিশেষ করে যারা মধ্যবয়সী, যারা কিছু Non-communicable disease বা অসংক্রামক রোগ এবং ওজনাধিক্যে ভুগছেন তারা। কারণ হাঁসের মাংস উচ্চ চর্বি যুক্ত। যা কিনা অনেকেরই চিন্তার কারণ। আবার হাঁস রান্না হয় চামড়াসহ তাই এর মধ্যে চর্বির পরিমাণও বেশি থাকে। তবে যাইহোক হাঁস উচ্চ ক্যালরি বহুল একটি খাদ্য এবং এটি চর্বি ছাড়াও প্রোটিন, আমিষ এবং আয়রনের একটি বিরাট উৎস। এ ছাড়া এতে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ উপাদান ও যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। তাই বাড়ন্ত শিশু বা তরুণদের ক্ষেত্রে বা যারা ওজন বাড়াতে চান তাদের জন্য খুবই উপকারী।’’
এই পুষ্টিবিদ জানান—১০০ গ্রাম হাঁসের মাংসে রয়েছে ক্যালরি ৩৩৭ ক্যালরি, চর্বি বা ফ্যাট ২৮ গ্রাম (যার মধ্যে স্যাচুরেটেড ফ্যাট ১০ মি: গ্রা:, কোলেস্টেরল ৮৪ মি: গ্রা:, পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট প্রায় ৪ গ্রাম), কার্বোহাইড্রেট ০, প্রোটিন বা আমিষ ১৯ গ্রাম, ভিটামিন এর মধ্যে ভিটামিন বি৩ ২৮%, বি২ ১৬%, বি৬ ১০%, ভিটামিন এ ৪%, ভিটামিন ই ৪%।খনিজ উপাদানের মধ্যে আয়রন ১৫%, ম্যাগনেসিয়াম ৪%, ফসফরাস ১৬%, সেলেনিয়াম ২৯%, কোবালমিন ৫%, কপার ১১%, জিংক ১২%।
‘‘পুষ্টিগুণ বিবেচনা করলে গরুর মাংসের চেয়ে হাঁসের মাংসে পুষ্টি বেশি। বিশেষ করে এর চর্বির কথা বলা যায়। গরুর মাংসের চেয়ে হাঁসের মাংসে আন স্যাচুরেটেড চর্বি অর্থাৎ ভালো চর্বির পরিমাণ কিছুটা বেশি। শারীরিক অবস্থা বুঝে পরিমিত পরিমানে হাঁসের মাংস খেলে কোনো সমস্যা হওয়ার সুযোগ নেই।’’— যোগ করেন জাহানারা আক্তার সুমি।