মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলুপ্ত করে একটি আইনের অনুমোদন দিয়েছেন আফ্রিকার দেশ জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া। নতুন আইনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বুধবার (১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিসেম্বরের শুরুর দিকে জিম্বাবুয়ের পার্লামেন্ট ভোটাভুটির পর মৃত্যুদণ্ডের বিধান বিলুপ্তির পক্ষে অবস্থান নেয়। এরপর প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া নতুন আইনটি অনুমোদন দিলেন।
জিম্বাবুয়ে সরকারের এ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বলা হয়েছে, আফ্রিকার ওই অঞ্চলে দীর্ঘদিনের মৃত্যুদণ্ডবিরোধী আন্দোলনে আশার আলো দেখাবে এই সিদ্ধান্ত।
তবে জিম্বাবুয়ের নতুন আইনে বলা হয়েছে, দেশে জরুরি অবস্থা জারি থাকার সময় প্রয়োজনে কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। এই বিধান নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
জিম্বাবুয়েতে সর্বশেষ ২০০৫ সালে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে এক ব্যক্তির দণ্ড কার্যকর করা হয়। এরপর কাউকে আর ফাঁসির মঞ্চে না নেওয়া হলেও হত্যার মতো অপরাধের জন্য দেশটির আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়ে আসছিল।
দেশটিতে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসনামলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান চালু করা হয়েছিল।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট এমারসন মানাঙ্গাগওয়া নিজে সর্বোচ্চ শাস্তির বিরুদ্ধে। কারণ ১৯৬০ সালে দেশটির স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বোমা হামলা চালিয়ে একটি ট্রেন উড়িয়ে দেওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে সেটি পরিবর্তন করে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অ্যামনেস্টির মতে, মৃত্যুদণ্ডের বিধান বাতিল করার পদক্ষেপটি কেবল জিম্বাবুয়ের জন্যই ‘একটি মহান অগ্রগতি’ নয় বরং ‘এই চূড়ান্ত নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর শাস্তি’ শেষ করার জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার একটি বড় অর্জন।
আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠনটি জিম্বাবুয়ের কর্তৃপক্ষকে ‘জরুরি অবস্থার সময়কালে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের অনুমতি দেওয়ার ধারাটি বাতিল করার’ আহ্বান জানিয়েছে।
মানাঙ্গাগওয়ার জানু-পিএফ দল ১৯৮০ সালে স্বাধীনতার পর থেকে জিম্বাবুয়ের শাসন ক্ষমতায় রয়েছে।
বিরোধী দল ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ক্ষমতাসীন দলটির বিরুদ্ধে বারবার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য কঠোরভাবে শাসন করার অভিযোগ করে আসছে।
অ্যামনেস্টির তথ্যানুসারে, আফ্রিকার ২৪টি সহ বিশ্বব্যাপী ১১৩টি দেশে মৃত্যুদণ্ড সম্পূর্ণভাবে বাতিল করেছে। ২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে চীন, ইরান, সৌদি আরব, সোমালিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রে।