জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের(জবি) প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হকের গাড়িতে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ ও আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ ও হামলায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার মোড়ে প্রক্টরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রক্টর ছাড়াও গাড়ির ড্রাইভার আহত হন। রাত সাড়ে ৭টার শিক্ষার্থীরা খবর পেয়ে তাঁতিবাজার মোড়ে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে বিক্ষোভ থেকে শিক্ষার্থীরা গুলিস্তান অভিমুখী গিয়ে লেগুনা ভাঙচুর করে বংশাল থানার সামনে আগুন জ্বালিয়ে সন্ত্রাসী আ্যাখা দিয়ে বিচার দাবি করে।
এদিকে, এ হামলার সময় তিনজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের নাম রিফাত, বাদশা এবং একজনের নাম জানা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরান ঢাকার তাঁতিবাজার পার হয়ে যাচ্ছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হকের গাড়ি। এ সময় পার্শ্ববর্তী একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে রিক্সার ধাক্কা লাগে। ধাক্কা লাগার সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সের ওপর হামলা চালায় স্থানীয়রা। কিছুক্ষণের মধ্যে গুলিস্তান থেকে ৬০-৭০ জন লোক চলে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের গাড়িতে হামলা করে।
এ সময় হামলাকারীরা কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের লেগুনা সারাদিন আটকে রেখেছে, এমন স্লোগান দিতে দিতে হামলা করে। এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও প্রক্টরকে নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে তারা।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, “তাঁতিবাজার মোড়ে আমাদের সামনে একটি রিক্সাকে ধাক্কা দেয় অ্যাম্বুলেন্স। তখনই পাশ থেকে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে স্থানীয়রা। ৫-৭ মিনিটের মধ্যে ওখানে শতাধিক লোক ছুটে আসে। প্রথমে আমার গাড়ির ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে বের করে মারধর করে। আমি গাড়ি থেকে বের হলে আমার ওপরও হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা বলতে থাকে, জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের তো পেলাম না, শিক্ষকদের মেরে দিলাম।”
এর আগে, সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায় গুলিস্তানের লেগুনা চালকরা। এ ঘটনায় ১৪টি লেগুনা আটকে রাখে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “আজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরকে বহনকারী গাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুজনকে আটক করি। বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রক্টর অধ্যাপক ড তাজাম্মুল হকের উপর আকস্মিক হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তার দাবি করেছে জবি শিক্ষক সমিতি।
জবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপককে হেনস্তার দুঃসাহস যারা দেখিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান না করলে জবি শিক্ষক সমিতি কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। রাতের মধ্যেই এ ঘটনায় যারা জড়িত প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানাচ্ছি।