বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘‘দীর্ঘ দেড় দশক আগে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যে লড়াই শুরু করেছিলাম, তা একদফায় রূপান্তরিত হয়েছিল। যে কারণে একদফায় পরিণত হয়েছিল, সেই একই কারণে ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি হয়েছিল; ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল। একই কারণে নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল।’’
তিনি বলেন, ‘‘দুঃখের বিষয়, কোনো না কোনোভাবে এ বিজয় ছিনতাই হয়ে যায়। জুলাই বিপ্লবের পাঁচ মাস পার না হতেই এ বিজয়ের কৃতিত্ব নেওয়ার জন্য লড়াই শুরু হয়েছে।’’
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে জহুরুল হক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি প্রয়াত হান্নান আহমেদ খান বাবলুর স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীমের পরিচালনায় স্মরণ সভায় আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি নওয়াব আলী আব্বাস খান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব সেলিম মাস্টার, জোবায়ের হায়দার অয়ন, যুগ্ম মহাসচিব কাজী মো: নজরুল, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন সরকার, ছাত্র সমাজের সভাপতি কাজী ফয়েজ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান অভি।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘‘জুলাই বিপ্লব কারো একক কৃতিত্বে সফলতা আসেনি। গত ১৫ বছরে যারা খুন হয়েছেন, গুম হয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন; তাদেরসহ এ আন্দোলনে ছাত্র-শিশু, শ্রমজীবী সবারই অবদান রয়েছে। এটিতো সবাই ভাগ করতে পারে। একা নিলে কাঁধ ভারি হয়ে যাবে।’’
তিনি বলেন, ‘‘এখন অনেকে দাবি করছেন, তারাই জানে কীসে জনগণের কল্যাণ। একই ট্যাবলেট খাওয়ানোর চেষ্টা হয়েছিল স্বাধীনতার পরও। যারা মুক্তিযুদ্ধে যায়নি, তারাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা শুনিয়েছে। এখন এমন একটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যেখানে জনগণ তাদের মত প্রকাশ করতে পারে, ভোটাধিকার প্রয়োগ করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে। এটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’’
সভাপতির বক্তব্যে মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার বিদায় নিয়েছে সত্য, কিন্তু নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। হাসিনা সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিরাজ করছে এবং নানামুখী সমস্যার সৃষ্টি করছে। কতগুলো নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে রাজনীতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেখানে জাতীয় নির্বাচনের বিষয় সামনে আসার কথা, তা না এনে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা কেন সামনে আনা হচ্ছে। কার স্বার্থে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিষয় সামনে আসছে। জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে নতুন করে ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের ডালপালা গজাবে। পতিত স্বৈরাচার আবারো পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে। শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদবিরোধী যে লড়াই আমরা শুরু করেছি, সেটা এখনো শেষ হয়ে যায়নি। এদেশের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি। এ ব্যাপারে আমাদের সকল রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’’