ক্যাম্পাস

জাকসুর ভোটার তালিকায় জুলাই হামলায় জড়িতদের নাম স্থগিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ২০২৫ এর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তবে ভোটার তালিকায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের নাম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) জাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনিরুজ্জামানকে এবং সদস্যসচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

জাকসু নির্বাচন কমিশনের এ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে যেসব শিক্ষার্থী স্নাতকে ৬ (৪+২) বছর এবং স্নাতকোত্তরে ২ (১+১) বছর অধ্যয়নরত, শুধু তাদের নাম জাকসু ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এছাড়া এ খসড়া ভোটার তালিকায় স্নাতক (সম্মান) ২০১৮-২০১৯, ২০১৯-২০২০, ২০২০-২০২১, ২০২১-২০২২, ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ এবং স্নাতকোত্তর ২০২১-২০২২, ২০২২-২০২৩, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

তবে এমফিল, পিএইচডি, উইকেন্ড ও ইভিনিং প্রোগ্রামে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন ব্যাচের অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের নাম জাকসুর ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ভোটার তালিকায় কোনরূপ অস্পষ্টতা বা অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হলে, আগামী ১৪ জানুয়ারি, দুপুর ২টার মধ্যে প্রমাণাদিসহ নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত আবেদন করতে হবে।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার ৯ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসুর সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বরাবর প্রেরিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও জাকসুর সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান স্বাক্ষরিত চিঠির একটি কপি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৪ জুলাই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে এবং ১৫ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও ছররা গুলি বর্ষণ এবং ১৭ জুলাই প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও ছররা গুলি বর্ষণের ঘটনা তদন্তের জন্য গঠিত কমিটির প্রদত্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের নাম ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি স্থগিত থাকবে।

জাবি কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা অনুযায়ী, মেয়েদের হলগুলোর মধ্যে নওয়াব ফয়জুন্নেসা হলে ভোটার ৩৯৬ জন, জাহানারা ইমাম হলে ৫৫৬ জন, প্রীতিলতা হলে ৫৭৭ জন, বেগম খালেদা জিয়া হলে ৫৭১ জন,  বেগম সুফিয়া কামাল হলে ৫৭৯ জন,  শেখ হাসিনা হলে ৬৪৫ জন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৬৯৫ জন,  রোকেয়া হলে ৯২৪ জন, ফজিলতুন্নেসা হলে ৮৮১ জন এবং বীরপ্রতীক তারামন বিবি হলে ৯৮০ জন।

অন্যদিকে, ছেলেদের হলগুলোর মধ্যে আ ফ ম কামালউদ্দিন হলে ভোটার ৪৩৬ জন,  মীর মশাররফ হোসেন হলে ৬১৫ জন,  শহীদ সালাম বরকত হলে ৪১৮ জন,  মওলানা ভাসানী হলে ৬২৬ জন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৬৫১ জন,  শহীদ রফিক জব্বার হলে ৭৪৯ জন, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে ৪৭৪ জন,  শেখ রাসেল হলে ৮৪৫ জন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৯৯১ জন এবং শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ হলে ৯৪৬ জন।  

এর আগে, গত ৩১ ডিসেম্বর জাকসু নির্বাচন আয়োজনে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন এবং নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রোডম্যাপ অনুযায়ী, ১০ জানুয়ারি খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১৫ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৫ জানুয়ারি নির্বাচনী আচরণবিধি প্রণয়ন ও ১ ফেব্রুয়ারি তফসিল ঘোষণা।