সারা বাংলা

মুকসুদপুরে সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ২ পক্ষের মামলা, সংবাদ সম্মেলন

‌গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষকে পতিত সরকারের দোসরদের তাণ্ডব উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলন করেছে জেলা বিএনপি। ওই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন দলটির নেতারা।

এদিকে, সংঘর্ষে জড়ানো দুটি গ্রুপের মামলা গতকাল শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেলে রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান।

আরো পড়ুন: বিএনপির ২ গ্রুপের সংঘর্ষের জেরে পাল্টা-পাল্টি শোডাউন

রবিবার (১২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা বিএ‌নপি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলটির জেলা আহ্বায়ক শরীফ রফিকুজ্জামান।

এসময় বিএনপি সদস্য ডা. কেএম বাবর, অ্যাডভোকেট এম ইমতেখার সেলিম, অ্যাডভোকেট তৌফিকুল ইসলাম তৌফিক, জিয়াউল কবির বিপ্লব, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সিকদার শহিদুল ইসলাম লেলিন, জেলা যুবদল সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন লিপটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শরীফ রফিকুজ্জামান বলেন, ‍“গত শুক্রবার রাতে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। বরং পতিত সরকারের দোসররা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। কারণ দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পতিত সরকারের দোসরদের দলে স্থান দেওয়া যাবে না। তবে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবাহ বিগত ১৬ বছর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সুযোগ সুবিধা নেওয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভপতি আহাজ্জাত মহসিন খিপুসহ আওয়ামী লীগ দোসরদের দলে অনুপ্রবেশ করাচ্ছেন। এরাই তাণ্ডব চালিয়েছে।”

আরো পড়ুন: মুকসুদপুরে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৩০

তিনি সংঘর্ষের ঘটনা‌কে তথ্যগত ত্রুটি উল্লেখ করে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। গোপালগঞ্জ বিএনপিতে কোনো গ্রুপিং নেই বলেও তারা দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনের পর দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। সেটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জেলা আইনজীবী কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

গতকাল শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিমের সমর্থক উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম খান বাদী হয়ে মুকসুদপুর থানায় ৫৩ জনের নাম উল্লেখ করে নাম না জানা আরো ৮০-৮৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় মুকসুদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আহাজ্জাত মহসিন খিপুসহ মোট ১৩৮ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা-হাঙ্গামা করে লুটপাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।

অপর মামলাটি করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ নজরুল আবেদীন মেসবাহর সমর্থক মো. হাবীব মোল্লা। এই মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে নাম না জানা ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুস সালাম খান, সাধারণ সম্পাদক রাজু মুন্সীসহ মোট ৪৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে হামলা, ভাঙচুর, ছিনতাই ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ক্ষতির অভিযোগ করা হয়েছে।

মুকসুদপুর থানার ওসি মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “দুই পক্ষই মামলা করেছে। তদন্ত চলছে।”

গোপালগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (মুকসুদপুর সার্কেল) মো. কামরুজ্জামান বলেন, “গতকাল শনিবার বিকেলে দুই পক্ষের মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখনো কোনো গ্রেপ্তার বা আটক নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।”