মারধরের শিকার হয়ে দেশে ফিরে যাওয়ার এক বছর পর হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাটে এসে স্বামী ও সতীনসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন পাকিস্তানি তরুণী মাহা বাজোয়া।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুনারুঘাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম।
এর আগে গত ৬ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাহা বাজোয়া মামলাটি দায়ের করলে বিচারক কামরুল হাসান এফআইআরভুক্ত করার জন্য চুনারুঘাট থানা পুলিশকে আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, দুবাইয়ের কাপড় ব্যবসায়ী মাহা বাজোয়া পাকিস্তানের লাহোরের গাজী রোডের পাঞ্জাব সোসাইটির বাসিন্দা। তার বাবার নাম মকসুদ আহমেদ।
চুনারুঘাট পৌরসভার সফিউল্যা মজুমদারের ছেলে সাজ্জাদ হোসাইন মজুমদার ওরফে হিরা এবং তার স্ত্রী সোনিয়া আক্তারকে মামলায় প্রধান আসামি করেছেন মাহা বাজোয়া। অন্য ১২ আসামি হলেন হিরার আত্মীয়-স্বজন এবং মাহা ও সোনিয়ার সঙ্গে তার বিয়ের কাজীসহ জড়িত ব্যক্তিরা।
মাহার অভিযোগ, দুবাইয়ের একটি ক্লাবে হিরার সঙ্গে তার পরিচয় ও প্রেম হয়। ২০১৪ সালে লাহোরে ১০ লাখ পাকিস্তানি রুপি দেনমোহরে মাহাকে বিয়ে করেন হিরা। শর্ত ছিল হিরা মাহাকে তালাক দিতে চাইলে ২০ লাখ রুপি পরিশোধ করবেন এবং প্রতিমাসে আরও ৫০ হাজার রুপি ভরণপোষণ দেবেন। বিয়ের পর ২০১৮ সালে হিরা মাহাকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। পরে মাহা পাকিস্তান এবং হিরা দুবাই চলে যান।
২০১৯ সালে দুবাইয়ে নাসির উদ্দিন সেলিম নামে এক ব্যক্তির গাড়িচালকের চাকরি নেন হিরা। এ সময় সেলিমের স্ত্রী সোনিয়ার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে ওই নারীকেও হিরা বাংলাদেশে এনে বিয়ে করেন এবং তারা এখরও সংসার করছেন।
সোনিয়া সেলিমের স্ত্রী থাকা অবস্থায় হিরাকে অবৈধভাবে বিয়ে করেছেন উল্লেখ করে এই বিয়ের সঙ্গে জড়িত সবারও বিচার চেয়েছেন মাহা বাজোয়া।
মাহা জানান, তিনি হিরাসহ তার সঙ্গে প্রতারণার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার চেয়েছেন আদালতে। তবে সংবাদে নিজের ছবি যুক্ত না করার অনুরোধ জানিয়েছেনি তিনি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে মাহার কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’’
প্রসঙ্গত, মামলা দায়েরের আগে মাহা ২০২৩ সালের ৮ ডিসেম্বর স্বামীর খোঁজে চুনারুঘাটে আসেন। ওই সময় হিরার ভাইয়ের বাড়িতে তিনি অবস্থান নেন। পরে স্বামীর বিরুদ্ধে হবিগঞ্জ আদালতে দুটি মামলা এবং চুনারুঘাট থানায় মারপিটের অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্তরা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া যায়নি।