বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) পারিশ্রমিক জটিলতা নতুন কোনো ঘটনা নয়। তবে বিসিবি সভাপতি হিসেবে ফারুক আহমেদ দায়িত্ব নেওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক নিয়ে কোনো অভিযোগই করতে পারবেন না।
কিন্তু ঢাকায় প্রথম পর্ব ও সিলেট পর্বে পারিশ্রমিক ইস্যুতে ভেতরে ভেতরে ফুঁসছিলেন একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটাররা। এবার সেটা বড় আকার ধারণ করল। বিপিএলের নবাগত দল দুর্বার রাজশাহীর ক্রিকেটাররা পারিশ্রমিক পাননি বলে আজকের অনুশীলন বাতিল করেছে। আগামীকালের (বৃহস্পতিবার) মধ্যে পারিশ্রমিক না পেলে শুক্রবার ম্যাচও বয়কট করবেন তারা।
ক্রিকেটারদের দাবির প্রেক্ষিতে রাজশাহীর টিম ম্যানেজমেন্ট ২৫ শতাংশ পারিশ্রমিকের চেক স্থানীয় ক্রিকেটারদের দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই চেক বাউন্স হওয়ায় ক্ষেপেছেন ক্রিকেটাররা। নিজেদেরকে ‘প্রতারিত’ মনে করছেন তারা।
রাজশাহীর একাধিক স্থানীয় ক্রিকেটার রাইজিংবিডিকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন। পরবর্তীতে রাজশাহীর ম্যানেজমেন্ট থেকেও খবরের সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে রাজশাহীর অনুশীলন সকাল ১০টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকালে ৯টা ৪৮ মিনিটে মিডিয়া ম্যানেজার মেসেজ দিয়ে অনুশীলন বাতিল হওয়ার কথা জানান।
পরবর্তীতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় ক্রিকেটারদের চেক বাউন্স হওয়ায় তারা অনুশীলন না করার সিদ্ধান্ত নেন। সঙ্গে ১০ দিনের দৈনিক ভাতা বকেয়া রয়েছে একাধিক ক্রিকেটারের। কিছু খেলোয়াড়ের দৈনিক ভাতা বকেয়া এক সপ্তাহের। কয়েক জনের তিন-চার দিন। সব মিলিয়ে রাজশাহী দলটায় আর্থিক দিক থেকে হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতি।
দলের এক ক্রিকেটার বলেছেন, ‘‘আমি একটা টাকাও পাইনি। চেক দেওয়া হয়েছিল সেটা বাউন্স হয়েছে। এটা প্রতারণা। আমরা খেলে টাকা পাই। আপনি দল নিলেন, খেলোয়াড় খেলালেন কিন্তু টাকা দিলেন না। এটা কেমন কথা?’’
দলের আরেক ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘‘টাকা দেবে দেবে বলে চেক দিল। এখন সেটা বাউন্স হলো। শুনেছি দুয়েকজন ক্রিকেটার পেয়েছেন। তাহলে রাজশাহী ওই দুয়েক জন ক্রিকেটার নিয়েই খেলুক। আমাদের তো প্রয়োজন নেই।’’
দলের স্পিন অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘‘একটা দল কিভাবে দৈনিক ভাতাও বকেয়া রাখে সেটা বুঝিনা। পারিশ্রমিকের অঙ্ক বড় সেটা বুঝতে পারলাম। কিন্তু দৈনিক ভাতা তো কম। সেটাও কিভাবে বকেয়া রাখে। আর কিছু বলতে পারব না।’’
জানা গেছে, রাজশাহীর শুধু ক্রিকেটাররা নন, কোচিং স্টাফদের বেতন, দৈনিক ভাতাও বকেয়া রয়েছে। একই পরিস্থিতির শিকার সাপোর্টিং স্টাফরাও।
বিপিএল এখন প্রায় মাঝপথে। এতোদিনে ক্রিকেটাররা ২৫ শতাংশ পারিশ্রকি পুরোটা পেয়ে যাওয়ার কথা। রাজশাহীর মতো আরও একাধিক দলের পারিশ্রমিক নিয়ে জটিলতা রয়েছে। খেলোয়াড়দের এই পারিশ্রমিক জটিলতা নিয়ে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।