সারা বাংলা

ইউএনও’র কক্ষে জামায়াত নেতাদের মারধর, বিএনপির ৪ নেতাকে শোকজ

ইউএনও’র কক্ষে জামায়াত নেতাদের মারধর, বিএনপির ৪ নেতাকে শোকজ

পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত চার নেতাকে কারণ দর্শানো নোটিশ (শোকজ) দিয়েছে কেন্দ্রীয় বিএনপি।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এ আদেশ দেওয়া হয়।

আরো পড়ুন: চার জামায়াত নেতাকে ইউএনওর সামনে ‘মারধরের’ অভিযোগ 

এর আগে, গত সোমবার দুপুরে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমিরসহ চার নেতাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে।

শোকজ নোটিশে বলা হয়েছে, “পাবনা জেলাধীন সুজানগর উপজেলা ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে সুজানগর উপজেলা বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মজিবর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাবু খা, বিএনপি নেতা মোহাম্মদ মানিক খা এবং সুজানগর এন. এ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. শাকিল খানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ভিত্তিতে আগামী ২৪ (চব্বিশ) ঘন্টার মধ্যে জবাব দিতে তাদেরকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে।”

সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এবিএম তৌফিক হাসান আলহাজ্ব বলেন, “কেন্দ্র থেকে শোকজ করেছে এটা লোক মাধ্যমে শুনেছি, তবে স্থানীয়ভাবে আমরা এখনো এমন চিঠি বা নির্দেশনা পাইনি। আমি অসুস্থতার জন্য বর্তমান ঢাকায় অবস্থান করছি। এই ঘটনা কোনোভাবেই ঘটানো ঠিক হয়নি। সরকারি অফিসে তাও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের রুমে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হয়েছে। এসব দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি হওয়া দরকার।”

সুজানগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, “আমার রুমে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা খুবই কষ্টদায়ক। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসলে আমি মামলা করতে পারব। আমি নিজে নিজের সিদ্ধান্তে মামলা বা অভিযোগ দিতে পারব না। এ ক্ষেত্রে স্যারদের পারমিশন লাগবে। দেখা যাক কি সিদ্ধান্ত আসে।”

গত সোমবার দুপুরের পর সুজানগর উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ফারুক-ই আজম, সেক্রেটারি টুটুল বিশ্বাস, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ওয়ালিউল্লাহ বিশ্বাস, সাবেক কাউন্সিলর মোস্তাক আহমেদ সাংগঠনিক ও সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের খোঁজ নিতে ইউএনও অফিসে যান। ইউএনও অন্য একটি কাজে ব্যস্ত থাকায় জামায়াত নেতারা অফিসে বসে অপেক্ষা করতে থাকেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী বালু উত্তোলন বন্ধ করেছেন কেন জানতে ইউএনওর কাছে যান। সেখানে আগে থেকেই বসে থাকা জামায়াত নেতাদের দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা বলেন- এরা কেন এখানে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে। এ কথা বলেই বিএনপি নেতারা ইউএনওর কক্ষ থেকে বের হয়ে আরো কয়েকজনকে ডেকে আনেন।

এরপরই বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান, বাবু খা, মানিক খা, আব্দুল বাছেদ, আরিফ শেখসহ বিএনপির নেতাকর্মীরা ইউএনওর কক্ষে ঢুকে জামায়াত নেতাদের মারধর করেন। এ ঘটনার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশের পর দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।