সারা বাংলা

জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, শনাক্ত হয়নি অপরাধী

জ্ঞান ফেরেনি শিশুটির, শনাক্ত হয়নি অপরাধী

মাগুরা শহরতলীর নিজ নান্দুয়ালি এলাকায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে সাত বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ১৮ ঘণ্টায়ও তার জ্ঞান ফেরেনি। 

ওই ঘটনায় শিশুটির দুলাভাই ও তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। এখন পর্যন্ত প্রকৃত দোষীকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে। 

এদিকে এ ঘটনায় দোষিদের সনাক্ত ও বিচারের দাবিতে শুক্রবার (৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর মাগুরায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের আয়োজন করেছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। 

শিশুটির ফুফাতো ভাই দুপুরে রাইজিংবিডিকে বলেন, “গতকাল সন্ধ্যায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে। এখনো সে অচেতন অবস্থায় আছে। তাকে শিশুদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (পিআইসিইউ) রাখা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, অবস্থা আরও খারাপ হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হতে পারে।”

পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে গতকাল দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।

মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, “শিশুটির সঙ্গে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুটি অচেতন অবস্থায় ছিল। যে বাসায় সে বেড়াতে গিয়েছিল, ধারণা করা হচ্ছে সেখানেই ঘটনা ঘটেছে। শিশুটির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তার দুলাভাই ও দুলাভাইয়ের বাবাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।”

শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েক দিন আগে তার বড় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে যান।

ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে শিশুটির গলায় একটা দাগ আছে। মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঁচড় আছে। তার গোপনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

এদিকে ওই ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে অনেকে পোস্ট দিয়েছেন। কেউ আবার মৃত্যুর গুজব ছড়িয়েছেন। এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে আজ জুমার নামাজের পর মাগুরা শহরে মিছিল বের করা হয়।

শিশুটির মা জানান, বোনের বাড়িতে মেয়েকে ঘরের মধ্যে একা পেয়ে কেউ একজন পাশবিক নির্যাতন করেছে। যেহেতু ওই সময় বাড়িতে সে একা ছিল আর এখনও মেয়ের জ্ঞান ফেরেনি তাই তাকে কে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।

মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, “প্রথমে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসেবে শিশুটিকে নিয়ে আসা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ আর হত্যা চেষ্টার আলামত পাওয়া যায়। মেয়েটির অবস্থা শঙ্কামুক্ত নয়।”