ক্যাম্পাস

মাগুরায় শিশু ধর্ষকদের শাস্তি দাবি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের

মাগুরায় শিশু ধর্ষকদের শাস্তি দাবি ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের

মাগুরায় ৮ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণের নির্মম ও বর্বরোচিত ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইউসুফ আহমাদ মানসুর ও সাধারণ সম্পাদক শেখ মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান।

শনিবার (৮ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ নিন্দা প্রকাশ করেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শিশুর প্রতি এমন পাশবিকতা কোনোভাবেই মানবসমাজ মেনে নিতে পারে না। এ ধরনের ঘটনা সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের বহিঃপ্রকাশ। যারা সমাজের সবচেয়ে দুর্বল ও নিরপরাধ শিশুদের উপর এমন জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করতে পারে, তারা মানবতাবিরোধী অপরাধী। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, এ ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে এবং সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ এমন জঘন্য অপরাধ করার দুঃসাহস না দেখায়। এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে শুধু আইন প্রয়োগ করাই যথেষ্ট নয়, বরং সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষার প্রচলন নিশ্চিত করতে হবে।

তারা বলেন, পরিবারের অভিভাবকদের আরও সচেতন হতে হবে। স্কুল, কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শিশুর প্রতি সংবেদনশীল ভূমিকা রাখতে হবে। সর্বোপরি রাষ্ট্রকে কঠোরভাবে ধর্ষণসহ সব ধরনের যৌন অপরাধ নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে এ ধরনের ঘৃণ্য অপরাধের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে এবং অপরাধীদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার যথাযথ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে এবং কোনভাবেই যেন প্রকৃত অপরাধীরা পার পেয়ে না যায়।

এদিকে, বিকেল ৫টায় রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে পৃথক কর্মসূচিতে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের ঢাবি শাখা আয়োজিত মানববন্ধনে সারাদেশে নারীর শ্রীলতাহানী ও হয়রানি বৃদ্ধি এবং মাগুরা আসিয়া ধর্ষণকাণ্ডের প্রতিবাদ, ধর্ষকের ফাঁসি ও তার সহযোগিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাতের সভাপতিত্বে ও সাইফ মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দীক, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, মুঈন আহমেদ, প্রচার সম্পাদক মনসুরুল হক শান্ত, অর্থ সম্পাদক ইলিয়াস আলী, সাহিত্য সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য ইকরামুল করিম, রেজাউল করীম, ফ্যাকাল্টি ও হল প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় মোহাম্মদ ইয়াছিন আরাফাত বলেন, “সারাদেশে উল্ল্যেখযোগ্য হারে ধর্ষণ ও নারী শ্লীলতাহানী বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা একটা সভ্য সমাজের জন্য দুঃখজনক। নারী সমাজ একটা সমাজের প্রাণ ও সৌন্দর্যস্বরূপ। সেখানে তাদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া এবং ইজ্জতের উপর আঘাত হানা সমাজের কর্ণধার হিসেবে আমাদের জন্য লজ্জার।”

মানববন্ধনে তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন। প্রথম দুটি দাবি হচ্ছে- নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্র, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন ও সামাজিক জীবনের সকল ক্ষেত্রে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা; যৌন হয়রানি ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ এবং দ্রুত বিচার নিশ্চিত করা ও নারীদের জন্য মানসম্মত ও নারীবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিতপূর্বক যুগোপযোগী শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করা।

তাদের অন্য তিনটি দাবি হচ্ছে- ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ বজায় রেখে নারীর স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার সঙ্গে সঙ্গে সম্পত্তিসহ নারীর সব মৌলিক অধিকার বাস্তবায়ন করা; নারীর জন্য সাইবার বুলিং ও ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; ডিজিটাল লিটারেসি প্রশিক্ষণ ও সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করা এবং মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করণ ও কাউন্সেলিং সুবিধা প্রদান করা।