সারা বাংলা

বাহুবলে গাছে বেঁধে আগুন, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন ও শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহেদুল আলমের আদালতে মামলাটি করেন ভুক্তভোগী জাহেদ মিয়া (২৮)।

আরো পড়ুন: মোবাইল চুরির অভিযোগে যুবককে গাছে বেঁধে নির্যাতন

বিচারক অভিযোগ আমলে নিয়ে মামলা এফআইআরভুক্ত করার জন্য বাহুবল মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। জাহেদ মিয়ার আইনজীবী কুতুব উদ্দিন জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আহত জাহেদ মিয়া উপজেলার বনদক্ষিণ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে।  

আসামিরা হলেন- বনদক্ষিণ গ্রামের আব্দুল ওয়াদুদ, আব্দুল মালিক, ছালিক মিয়া, মোজাহিদ মিয়া, আমীর আলী, আলমগীর এবং যমুনাবাদ গ্রামের রুয়েল মিয়া, সোহেল মিয়া, কবির মিয়া, কাজল মিয়া, তাজল মিয়া, সুমন মিয়া ও জামাল মিয়া। 

বাহুবল উপজেলায় লামাতাশি ইউনিয়নের যমুনাবাদ গ্রামে এ ঘটনার একটি ভিডিও গত বুধবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় উঠে।

স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি উপজেলায় লামাতাশি ইউনিয়নের যমুনাবাদ গ্রামের আবদুল কাইয়ুমের বাড়ি থেকে দুইটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। সন্দেহভাজন হিসেবে একই উপজেলার তারাপাশা গ্রামের কিম্মত আলীর ছেলে শহীদুল মিয়াকে (৩০) আটক করে মারধর করা হয়। পরে বনদক্ষিণ গ্রামের জাহেদ মিয়াকে উত্তেজিত লোকজন ডেকে নিয়ে নির্যাতন করে। একপর্যায়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার শরীরে ধরিয়ে দেওয়া হয় আগুন। এ সময় চুরির দায় স্বীকার করতে চাপ দেওয়া হলেও জাহেদ তা অস্বীকার করেন।

নির্যাতন বন্ধের জন্য বারবার আকুতি জানান জাহেদ মিয়া। দীর্ঘক্ষণ নির্যাতনের পর তার পরিবারের লোকজন মোবাইল ফোনের মূল্য পরিশোধের শর্তে তাকে ছাড়িয়ে নেন। পরে জাহেদ মিয়াকে ভর্তি করা হয় হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। 

জাহেদ মিয়ার আইনজীবী কুতুব উদ্দিন জুয়েল বলেন, “ছেলেটি মোবাইল ফোন চুরি করেনি। তিনি দর্জির কাজ করে জীবিকানির্বাহ করের। তারপরও তাকে যেভাবে নির্যাতন করা হল- তা মধ্যযুগীয় কায়দার এবং এ যুগে নজিরবিহীন। আদালত ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় মামলা এফআইআরভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন।”

বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আদালতের আদেশ আসার সঙ্গে সঙ্গে মামলাটি এফআইআরভুক্ত করে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে। এ ব্যাপারে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”