শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার ওপর খাবারের ব্যাপক ভূমিকা আছে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস গড়ে তুলতে চাইলে ৮টি বিষয়কে প্রাধান্য দিতে পারেন।
১. আপনার খাবারে উচ্চ ফাইবারযুক্ত স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট রাখতে পারেন। আপনার খাবারের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি স্টার্চি কার্বোহাইড্রেট থাকা উচিত। এর মধ্যে রয়েছে আলু, রুটি, ভাত, পাস্তা জাতীয় খাবার। উচ্চ ফাইবার বা আটা জাতীয় খাবার বেছে নিন, যেমন আটা, বাদামী চাল বা খোসা ছাড়ানো আলু ইত্যাদি। সাদা বা পরিশোধিত স্টার্চি কার্বোহাইড্রেটের তুলনায় এগুলিতে বেশি ফাইবার থাকে এবং এটি আপনাকে দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা অনুভব করতে সাহায্য করতে পারে।
২. প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ বার বিভিন্ন ধরণের ফল এবং সবজি খেতে পারেন। এগুলো তাজা, হিমায়িত, টিনজাত, শুকনো অথবা জুস করে খাওয়া যেতে পারে।
৩. মাছ প্রোটিনের একটি ভালো উৎস এবং এতে প্রচুর ভিটামিন এবং খনিজ থাকে। সপ্তাহে কমপক্ষে ২ বার মাছ খান। যার মধ্যে কমপক্ষে ১ বার তৈলাক্ত মাছও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তৈলাক্ত মাছে ওমেগা-৩ ফ্যাট বেশি থাকে, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।
৪. আপনার খাদ্যতালিকায় কিছু চর্বি থাকা প্রয়োজন। তবে পরিমিত পরিমানে খেতে হবে। পুরুষদের দিনে ৩০ গ্রামের বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত নয়। মহিলাদের দিনে ২০ গ্রামের বেশি স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত নয়। ১১ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট খাওয়া উচিত। ৫. অতিরিক্ত লবণ খেলে রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের হৃদরোগ বা স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এমনকি যদি আপনি আপনার খাবারে লবণ নাও যোগ করেন, তবুও আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে লবণ খাচ্ছেন। আপনি যে লবণ খান তার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ খাবার কেনার সময় ইতিমধ্যেই থাকে, যেমন ব্রেকফাস্ট, স্যুপ, রুটি এবং সস ইত্যাদি। প্রাপ্তবয়স্ক এবং ১১ বছর বা তার বেশি বয়সী শিশুদের দিনে ৬ গ্রামের বেশি লবণ (প্রায় এক চা চামচ) খাওয়া উচিত নয়। ছোট বাচ্চাদের আরও কম খাওয়া উচিত।
৬. স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি, নিয়মিত ব্যায়াম করা জরুরি। এটি আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা টাইপ ২ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যগত সমস্যা কমাতে পারে। প্রাপ্তবয়ষ্করা কম ক্যালোরি খাওয়ার মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।
৭. প্রতিদিন ৬ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন। নন-অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পান করুন। কম চর্বিযুক্ত দুধ এবং কম চিনিযুক্ত পানীয়, চা এবং কফি পান করতে পারেন। অধিক চিনিযুক্ত এবং ফিজি পানীয় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন, কারণ এগুলিতে ক্যালোরি বেশি থাকে। এগুলো দাঁতের জন্যও খারাপ। গরম আবহাওয়ায় বা ব্যায়াম করার পরে বেশি করে পানি পান করুন।
৮. কিছু মানুষ সকালের নাস্তা বাদ দেন কারণ তারা মনে করেন এটি তাদের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। কিন্তু ফাইবার সমৃদ্ধ এবং চর্বি, চিনি এবং লবণ কম থাকা একটি স্বাস্থ্যকর নাস্তা— সুষম খাদ্যের অংশ হতে পারে। যা সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পেতে সাহায্য করতে পারে।
সূত্র: এইএইচএস