গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা পাভেল সিকদারের সনদ তুলে দিতে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগ নেতা পাভেলের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাইয়ে গোবিপ্রবিতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকি, সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা পাভেল সিকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক নিঘাত রৌদ্রের উপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙে দেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় নারী শিক্ষার্থী সুবর্ণাকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দেন তিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি রাসেল শিকদারের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।
এসব ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের জেরে পাভেলের সনদ আটকে যায়। তবে সম্প্রতি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সহায়তায় তিনি সনদ উত্তোলনের চেষ্টা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে তা পুনরায় আটকে দেওয়া হয়।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল বলেন, “১৬ জুলাইয়ের পর সারাদেশে ছাত্রলীগ হিংস্র হয়ে উঠলেও গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের অপকর্ম বহু পুরনো। হল দখল থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাসহ সবকিছুতেই তারা জড়িত। শফিক ছাত্রলীগের হয়ে অতীতে অনেক সহিংসতায় অংশ নিয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্বের শেল্টারে শফিকসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের দোসরদের পুনর্বাসন ছাত্রদলের জন্য আত্মঘাতী।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইনজামাম রাশু বলেন, “ছাত্রদলকে আহ্বান জানাই, এ ধরনের দোসর ও তাদের আশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। তা না হলে ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থার জায়গা হারাবে।”
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন, “রাজনীতির বাইরে বিভাগের বড় ভাইদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকে। আমি শুধু সাহায্য করতে চেয়েছি। যদি তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থেকেই থাকে, তাহলে এতদিনেও প্রশাসন কেনো ব্যবস্থা নেয়নি?”
গোবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি দুর্জয় শুভ বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তবে এখনো প্রমাণ পাইনি। বিষয়টি ষড়যন্ত্র কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।”