রাজধানীর উত্তরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টঙ্গী-গাজীপুর রুটের ক্ষণিকা বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৫-৬ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরের দিকে গাজীপুর যাওয়ার পথে উত্তরার আজমপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত ঢাবি শিক্ষার্থীদের রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এক শিক্ষার্থী বলেন, “দুপুর আনুমানিক ১টা ১০ মিনিটের দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ক্ষণিকা বাসটি গাজীপুরের উদ্দেশে যাত্রা করছিল। উত্তরা বিএনএস এলাকায় পৌঁছালে দেখা যায়, বিআরটিসি ট্রাক এক স্কুলছাত্রকে চাপা দেওয়ার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেছেন। আমাদের বাস সামনে যাওয়া মাত্রই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা হঠাৎ হামলা করেন লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলে এবং ড্রাইভারকে টেনে বাস থেকে নামিয়ে মারতে শুরু করেন।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পরিস্থিতি ঠান্ডা করতে গেলে উল্টো তারা আমাদের ধাওয়া করে। পরে বাসের পেছনের গেট পর্যন্ত এসে সিনিয়র ভাইদের মারধর শুরু করে। বাধা দিতে গেলে ওরা লাঠি, ইট, কাঠ—যা পেয়েছে তাই দিয়ে মারতে থাকে।”
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, “হামলা বিশ্ববিদ্যালয়কে টার্গেট করে করা হয়নি। তারা সব বাসেই হামলা করছিল। ওই সময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসটি তাদের সামনে পড়ে। আমাদের ৪-৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “আহতদের মধ্যে একজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা একটি জিডি করতে থানায় যাচ্ছে বলে জানতে পেরেছি।”
এদিকে, ক্ষণিকা বাসে হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাবি শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির। ঢাবি শাখার সভাপতি এস এম ফরহাদ ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এ যৌথ বিবৃতি আহত শিক্ষার্থীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই হুমকি নয়, বরং দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও জনমনে চরম উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে জোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, আহত ঢাবি শিক্ষার্থীদের সুচিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গ্রহণ করার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি ঢাবি পরিবহনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সব শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস-সংশ্লিষ্টদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দাবি জানাচ্ছি।