আন্তর্জাতিক

দিল্লিতে গাড়ি বিস্ফোরণের সন্দেহভাজনের ছবি প্রকাশ

ভারতের দিল্লির লাল কেল্লার কাছে সোমবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ব্যক্তির ছবি প্রকাশ করেছে পুলিশ। তার নাম মোহাম্মদ উমর, পেশায় চিকিৎসক। সিসিটিভির ফুটেজ থেকে তার ছবি ও তদন্তে পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছে দিল্লি পুলিশ। খবর ইন্ডিয়া টুডের। 

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে পুলিশ জানায়, লাল কেল্লার কাছে মেট্রো পার্কিং লটে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটানো হুন্দাই আই-টোয়েন্টি মডেলের গাড়িটি ডা. উমরের। সিসিটিভির দুটো ফুটেজে তার মুখ স্পষ্ট দেখা গেছে। গাড়িটিতে বিস্ফোরণ ঘটানোর আগে প্রায় তিন ঘণ্টা সেটি লাল কেল্লার কাছের একটি পার্কিংয়ে থামিয়ে রাখেন।

পুলিশের তথ্যমতে, দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমর ফরিদাবাদের ‘সন্ত্রাসবাদী চক্রে’র সঙ্গে যুক্ত সন্দেহভাজন এক ‘সন্ত্রাসী’। তিনি ফরিদাবাদের আল ফালাহ মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

উমর ঘনিষ্ঠ ছিলেন আদিল আহমেদ রাথারের সঙ্গে- যিনি অনন্তনাগের গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ (জিএমসি)-এর সাবেক সিনিয়র আবাসিক চিকিৎসক। রাথারকে গত সপ্তাহে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই সোমবার সকালে ফারিদাবাদে অভিযানে নামে নিরাপত্তা বাহিনী। 

সন্দেহভাজন হামলাকারী উমর তার সহযোগীদের গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ফরিদাবাদ থেকে পালিয়ে দিল্লিতে অবস্থান নেন। তদন্তকারীদের ধারণা, তিনি আতঙ্কিত হয়ে ওই বিস্ফোরণ ঘটান।

উমরকে এ কাজে আরো দুই সহযোগী সাহায্য করেছে বলে ইন্ডিয়া টুডেকে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশের একটি সূত্র। তিনি জানান, বেশকিছুদিন ধরেই ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় বড় পরিসরে হামলার পরিকল্পনা করছিলেন উমর। সে উদ্দেশ্যেই তিনি নিজের গাড়িতে ডেটোনেটর বা বিস্ফোরক স্থাপন করেন।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, হুন্ডাই গাড়িটি লালকেল্লার পার্কিং লটে প্রবেশ করে বিকেল ৩টা ১৯ মিনিটে। সেটি ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে বেরিয়ে যায়। এরপর ধীর গতিতে সেটি কাছের মেট্রো স্টেশনের ১ নম্বর গেটের পাশে ট্রাফিক সিগন্যালে আটকে যায় এবং মুহূর্তেই বিস্ফোরণ ঘটে।

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ জানিয়েছে, তারা ডা. উমরের মা শাহিমা বানো এবং ভাই আশিক ও জহরুরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

অন্যদিকে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা বর্তমানে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে ১৩ জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।

ইন্ডিয়া টুডের খবর অনুসারে, বিস্ফোরণটির মাত্রা অত্যন্ত শক্তিশালী ছিল। এসময় আশপাশের অন্তত ২২টি গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণ হাসপাতালের মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর ১৫ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে আটজনকে পৌঁছানোর পর মৃত ঘোষণা করা হয়, তিনজনের অবস্থা এখনও গুরুতর এবং একজন রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল।

এদিকে, এ ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেশটির সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে হাই সিকিউরিটি অ্যালার্ট জারি করেছে। এ ছাড়া দিল্লির সব বাস, মেট্রো ও রেল স্টেশনে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।