পার্থ আর ব্রিসবেনের ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই অ্যাডিলেডেও নীল হলো বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড। অ্যাশেজ সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ৮২ রানের রোমাঞ্চকর জয়ে দুই ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া। এই জয়ের ফলে টানা পাঁচ আসর ধরে ঐতিহ্যবাহী ‘অ্যাশেজ’ ট্রফিটি নিজেদের শোকেসেই রেখে দিল প্যাট কামিন্সের দল।
মেলবোর্ন ও সিডনি টেস্ট এখন ইংলিশদের জন্য কেবলই হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াইয়ে পরিণত হয়েছে।
পার্থ টেস্ট মাত্র দুই দিনে শেষ হয়েছিল, ব্রিসবেনে খেলা গড়িয়েছিল চতুর্থ দিন পর্যন্ত। সেই তুলনায় অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ড কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে খেলাকে পঞ্চম দিন পর্যন্ত টেনে নিতে সক্ষম হয়। ৩৭১ রানে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংসের জবাবে ইংল্যান্ড ২৮৬ রানে থামলে অজিরা ৮৫ রানের লিড পায়। দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রাভিস হেডের বিধ্বংসী ১৭০ রানের ওপর ভর করে ৩৪৯ রান তুলে ইংল্যান্ডকে ৪৩৫ রানের প্রায় অসম্ভব এক লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় স্বাগতিকরা।
৬ উইকেটে ২০৭ রান নিয়ে পঞ্চম দিনের সকালে জয়ের স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিল স্টোকস-বাহিনী। সপ্তম উইকেটে জেমি স্মিথ ও উইল জ্যাকস অজি বোলারদের বেশ বেগ পাইয়ে দেন। বিশেষ করে জেমি স্মিথ ৮৩ বলে ৬০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে জয়ের ক্ষীণ আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন। তবে দলীয় ২৮৫ রানে স্মিথ এবং ৩৩৭ রানে ৪৭ রান করা জ্যাকস আউট হলে ইংল্যান্ডের ইনিংস তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ৩৫২ রানে অলআউট হয় তারা। ব্রাইডন কার্স ৩৯ রানে অপরাজিত থাকলেও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।
অস্ট্রেলীয় বোলারদের সম্মিলিত আক্রমণে দিশেহারা ছিল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপ। মিচেল স্টার্ক, স্কট বোল্যান্ড ও জশ হ্যাজলউড; প্রত্যেকেই ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। চোট কাটিয়ে ফেরা অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও নেন গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। তবে ১৭০ রান করা হেড বা অলরাউন্ড নৈপুণ্য দেখানো স্টার্ককে পেছনে ফেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন উইকেটকিপার-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি। যার প্রথম ইনিংসের শতকটি ম্যাচের ভিত গড়ে দিয়েছিল।
২০১৫ সালের পর থেকে অ্যাশেজ জয়ের স্বাদ পায়নি ইংল্যান্ড। গত ৫টি সিরিজের মধ্যে তিনটিতে জয় এবং দুটিতে ড্র করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখল অস্ট্রেলিয়া। আগামী শুক্রবার থেকে মেলবোর্নে শুরু হতে যাওয়া বক্সিং ডে টেস্টে ইংল্যান্ডের সামনে এখন মান বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ।