শেষ বিপিএলে নাহিদ রানাকে যত্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) পক্ষ থেকে। এজন্য রংপুর রাইডার্স বেছে বেছে, বিশ্রাম দিয়ে নাহিদকে ব্যবহার করেছে। বিপিএলের পরপরই টেস্ট সিরিজ থাকায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করেছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। এবারও বিপিএলের পরই বিশ্বকাপ। বোর্ড থেকে এবারও নাহিদসহ জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের জন্য দেয়া হয়েছে নির্দেশনা।
জানানো হয়েছে, নিজের প্রতি যত্নশীল হতে। নিজের বডি যতটুকু সাপোর্ট দেবে ঠিক ততটুকুই যেন মাঠে প্রয়োগ করা হয়। বাড়তি কিছুর চেষ্টা, প্রয়োজনের বেশি খাটুনি না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নাহিদকেও জানানো হয়েছে সেসব।
সেসব মেনেই নাহিদ বিপিএলে রংপুর রাইডার্সের জার্সি গায়ে মাঠে নামার অপেক্ষায়। এবার কী সব ম্যাচ খেলতে পারবেন নাহিদ সেই প্রশ্ন ডানাপালা মেলা শুরু করেছে। নাহিদ প্রথম দিনের অনুশীলন শেষেই জানিয়ে দিলেন, টানা ম্যাচ খেলার প্রস্তুত তিনি।
রংপুর রাইডার্সের নিজস্ব মাঠে অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন তিনি। সেখানে নানা প্রশ্নের উত্তর দেন—
বিপিএলে আপনার নিজের ব্যক্তিগত পরিকল্পনা কি? নাহিদ: পরিকল্পনা সহজ। একটা জিনিসই চেষ্টা থাকে ম্যাচ বাই ম্যাচ আগানো। আমি আমার নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী দলকে সাহায্য করবো এবং আমার কী সামর্থ্য আছে সেটা আমি জানি সেটা দিয়েই সাহায্য করবো। বিপিএল আপনার ক্যারিয়ারের জন্য বড় একটা টার্নিং পয়েন্টও ছিল। ওই ধারাবাহিকতা ধরে রাখার নিশ্চয়ই চেষ্টা থাকবে এবারও? নাহিদ: হ্যাঁ, অবশ্যই, ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করব। এবং যে নতুন স্কিলগুলো নিয়ে কাজ করছি, ওই জিনিসটা ও এই বিপিএলে ডেলিভার করার চেষ্টা করব।
শক্তিমত্তার দিক থেকে রংপুর রাইডার্সকে কেমন হচ্ছে? নাহিদ: দলে অভিজ্ঞ এবং তরুণ ক্রিকেটার দিয়ে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। সব মিলায় আলহামদুলিল্লাহ।
জাতীয় দলে যারা আছেন আপনারা, তাদের ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট নিয়েও একটু আলাদা করে কাজ করবেন, তারা কি আপনাদেরকে আলাদা করে কোন বার্তা দিয়েছে? নাহিদ: হ্যাঁ, তারা বলছে এবং তারা পরিকল্পনা দিছে যে আমরা কিভাবে কাজ করব কিংবা কোন প্রসেসে আগাব।
গত বছর বিপিএলর পরপরই টেস্ট ম্যাচ ছিল, এ কারণে আপনাকে সব ম্যাচ তারা খেলতে দেয়নি। বিসিবি থেকেও বলা ছিল। এবার তো আপনার টেস্ট ম্যাচ সামনে নেই। এবার কী সব ম্যাচ খেলতে পারবেন নাকি কোনো নির্দেশনা আছে? নাহিদ: না, আসলে এর আগের বছরও কোন বাধা ছিল না। শুধু বলছিল যে, তোমার বডিটা কি ফিল করে ওই অনুযায়ী খেলো। এই বছরও বিসিবি থেকে কোন বাধা দেয়নি। শুধু তারা একটা কথাই বলেছে। তুমি তোমার বডিটা বোঝো এবং তুমি তোমার নিজের এবিলিটিটা বোঝো। ওই অনুযায়ী খেলো। এই বছরও কোন বাধা নাই। নিজে ফিট থেকে খেলো এবং নিজের যত্ন নিজে করো।
আপনার বডি কি বলছে? মানে আপনি কি বুঝতে পারছেন টানা ম্যাচ খেললে অথবা টানা বল করলে সমস্যা হবে কি না? নাহিদ: হ্যাঁ, অবশ্যই। দেখেন শেষ দুই বছর খেলছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। আমার কাছে মনে হয় না যে এতদিন একটা পেশাদার খেলোয়াড়ের বডি ইউজ টু হওয়ার জন্য এতো সময় দরকার। অনেক আগের থেকেই এই সামর্থ্য হয়ে গেছে।
মোস্তাফিজুর রহমান এই দলে আছে। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে বোলিং করা কতটা আনন্দের। আর এতেই কি রংপুর বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছে? নাহিদ: ফিজ ভাইয়ের মতো বিশ্বমানের বোলার খুব কমই আছে এবং ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটে উনি ডমিনেট করে খেলছে। অবশ্যই উনার সাথে খেলতে পারাটা, জাতীয় দল এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এটা আমার কাছে অনেক সৌভাগ্যের ব্যাপার, অনেক কিছু শেখার আছে।
প্রত্যেকেরই তো ব্যক্তিগত লক্ষ্য থাকে। বিপিএলে ভালো করে বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া আপনার লক্ষ্য কি না? নাহিদ: বিশ্বকাপ তো ধরেন বিপিএলের পরে। আমি অতদূর চিন্তা করছি না। আমি চেষ্টা করছি আপাতত রংপুর রাইডার্সের হয়ে কিভাবে ম্যাচ জেতাব এবং অবদান রাখতে পারব।
আপনার ব্যক্তিগত টার্গেটটা কী থাকবে? নাহিদ: বিপিএল শেষে নাকি ক্যারিয়ার শেষে?
বিপিএল শেষে, বিপিএলে কোন জায়গায় দেখতে চান? নাহিদ: আমার একটাই চেষ্টা থাকে যে আমি কিভাবে দলকে ম্যাচ জেতাব। আমার এরকম ব্যক্তিগত লক্ষ্য থাকে না যে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হব। যদি আমার কাছে মনে হয় যে, উইকেট না পেয়ে দলকে ম্যাচ জেতাতে পারি, তাহলে আমি খুশি।
স্কিলের কথা বলেছেন। কোন স্কিল নিয়ে কাজ করছেন? নাহিদ: আমি চেষ্টা করছিলাম পারফেক্ট ইয়র্কার, স্লোয়ার। টি-টোয়েন্টিতে যে জিনিসগুলো দেখতে সময় লাগে, ওই জিনিসগুলোই চেষ্টা করছি।
ফিজের কথা বলছিলেন। ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলো খেলার সুযোগের জন্য নিজেকে ওইভাবে প্রস্তুত করবেন কিনা? মোস্তাফিজের থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের চেষ্টা করবেন কিনা? নাহিদ: হ্যাঁ, অবশ্যই। উনি অনেক কিছু শেয়ার করেন এবং আমি ওই জিনিসগুলো এডাপ্ট করার চেষ্টা করি। ।
আইপিএলে খেলার স্বপ্ন নিশ্চয়ই আছে? নাহিদ: স্বপ্ন একটাই ছিল, জাতীয় দলে খেলা, খেলছি। যদি সামনে আমি জাতীয় দলে ভালো করি তাহলে অটোমেটিক আমার ফ্রাঞ্চাইজি লিগে খেলার সুযোগ আসবে।