ঈদ ঘিরে বাঙালি মুসলমানের ঘরে ঘরে যে আনন্দ-উৎসবের তোড়জোড় পড়ে যায়, তার সঙ্গে কোনোকিছুই তুলনীয় নয়। যদি সেই আনন্দে শামিল হতে এ দেশের জনগণের একটা বড়ো অংশকে অশেষ কষ্টের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। ফলে ‘ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশি’কে ছুঁতে হয় নিরবচ্ছিন্ন এক ভোগান্তির মধ্য দিয়ে। সর্বংসহা বাঙালি সেটা সহ্য করেও নেয়। কিন্তু তার মাত্রা যখন সব কিছুকে ছাড়িয়ে যায়, তখন বুঝি সেটা আনন্দকে শঙ্কিত করে তোলে, ক্ষেত্র বিশেষে আতঙ্কগ্রস্ত করে।
অবশ্য বাঙালি মুসলমানের কোনো কিছু খুব বেশি মনে রাখার খাসলত নেই। ফলে, কষ্টকেও সে ভুলে যায় অবলীলায়। আনন্দ-উৎসবে শামিল হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত কষ্টকে যেমন ভুলে যায়, তেমনি অন্যদের কষ্ট দূর করতে, বেদনার্ত-মলিন-অপ্রাপ্তিকে সাধ্য অনুযায়ী পূরণ করতে রাখে সর্বোচ্চ ভূমিকা। এখানেই ঈদের অনিবর্চনীয় আনন্দ, এখানে ঈদের খুশির সবৈব প্রকাশ।
ঈদ ঘিরে আমজনতার দুঃখ-কষ্টের কথা বলার আগে জেনে নিই, ঈদ সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশনা। মুসলিম বিশ্বের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো ঈদ-উল আজহা। অনেকে একে কোরবানির ঈদও বলেন। ঈদ-উল আজহা আরবি শব্দ। যার বাংলা অর্থ হলো ত্যাগের উৎসব। ‘কোরবানি’ শব্দটা হিব্রু। বাংলা অর্থ নিকটবর্তী হওয়া।
কোরআন শরীফে আল্লাহতায়ালা স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন : ‘কোরবানির পশুকে আল্লাহ তাঁর মহিমার প্রতীক করেছেন। তোমাদের জন্যে এতে রয়েছে বিপুল কল্যাণ। অতএব এগুলোকে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় এদের জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর এরা যখন জমিনে লুটিয়ে পড়ে, তোমরা তা থেকে মাংস সংগ্রহ করে তোমরা খাও এবং কেউ চাক না চাক সবাইকে খাওয়াও। এভাবেই আমি গবাদি পশুগুলোকে তোমাদের প্রয়োজনের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় করো। কিন্তু মনে রেখো কোরবানির মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেওয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবী! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোন বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’ (সূরা হজ, আয়াত ৩৬-৩৭-৩৮)
বেশ কয়েকটা বিষয়ে পরিষ্কার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এখানে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য দুটো বিষয় প্রথমত, ‘তোমরা তা থেকে মাংস খাও এবং কেউ চাক বা না চাক সবাইকে খাওয়াও।’ এখানেই ঈদ-উল আজহার প্রকৃত অর্থ নিহিত। অর্থাৎ কোরবানির মাংস শুধু নিজে খেলে হবে না, অন্যকেউ খাওয়াতে হবে। কারণ, আল্লাহর সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, ‘কেউ চাক বা না চাক সবাইকে খাওয়াও’। সুতরাং, ঈদ-উল আজহার বাংলা অর্থ যে ‘ত্যাগের উৎসব’, তা যথার্থভাবে তখনই পালন করা হবে যখন সেই উৎসবে সবাই শরিক হবে। এখানে সামর্থ্যবানদের দায়িত্ব বেশী। সমাজের যারা উপর তলার মানুষ, যারা সক্ষম ধনে-মানে-সম্পত্তি-সম্পদে, যারা ধনী-ভূস্বামী, সফল ব্যবসায়ী, দামী চাকরিজীবী, অনেক উপার্জন করেন, যাপন করেন বিলাসবহুল জীবন, তাদের দায়িত্ব হলো ঈদ-উল আজহায় সবাইকে নিয়ে ত্যাগের উৎসবকে যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। এই বাস্তবায়ন যদি আক্ষরিক অর্থেই এভাবে না করা হয়, তাহলে সেটি ত্যাগের উৎসব হয়ে উঠবে না। মনে রাখতে হবে উৎসবের সঙ্গে ‘সর্বজনীন’ বিষয়টা ওতোপ্রোতোভাবে যুক্ত। এখানে সবাইকে নিয়ে যদি সেই উৎসব পালন করা না হয় তাহলে বুঝতে হবে ঈদ-উল আজহার প্রকৃত মহিমাকে ধারণ করা হয়নি।
দ্বিতীয়ত, যে বিষয়টা সূরা হজে বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়েছে, ‘কিন্তু মনে রেখো কোরবানির মাংস বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা।’ ঈদ-উল আজহাকে কোরবানির ঈদও বলা হয়। কোরবানির বাংলা অর্থ আগেই বলা হয়েছে। নিকটবর্তী হওয়া। কার নিকটবর্তী হওয়া- মহান আল্লাহতায়ালার। কীভাবে সেটা সম্ভব- ত্যাগের উৎসবকে সর্বজনীন করার মধ্যে দিয়ে। এবং সেটাই বলা হয়েছে সূরা হজে, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ-সচেতনতা।’ এই বিষয় দুটো যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশে যথাযথভাবে মানা হয় তাহলে ঈদের আনন্দ ব্যক্তি বিশেষের না হয়ে, অনায়াসে সকলের হয়ে উঠবে এবং আমাদের প্রত্যাশা সেটাই।
এ বছরের ঈদ-উল আজহা এমন একটা সময় এসেছে, যখন দেশজুড়ে নানা রকমের সংকট বিদ্যমান। বিশেষ করে বন্যায় সিলেট বিভাগের প্রায় সকল মানুষই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। কেবল সিলেট বিভাগ নয়, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের বেশ কিছু এলাকার মানুষ বন্যাগ্রস্ত অবস্থায় রয়েছেন। সীতাকুণ্ডের আগুনে যারা নিহত-আহত হয়েছেন সেসব পরিবারে ঈদের আনন্দ বলতে কিছুই নেই। করোনার কারণে দেশে দরিদ্রের সংখ্যা বেড়েছে। কর্মসংস্থানের জায়গা ছোট হয়ে এসেছে। চাকরিহারা মানুষের সংখ্যাও অজস্র। নিত্যপণ্যের বাজারের আগুনে অনেক সংসার আধপোড়া হয়ে গেছে। এভাবে অনেক উদাহরণ দেওয়া যাবে এবং এসবের সবগুলোই যৌক্তিক ও যথার্থ। এরা কীভাবে ঈদ করবে? নাকি ঈদের চাঁদ-এদের কাছে ঝলসানো রুটির মতোই মনে হবে? এসব দুঃখপীড়িত-দারিদ্র্যগ্রস্ত-দৈন্যজর্জরিত-অভাব আক্রান্ত-ঋণ ন্যুজ্ব মানুষের পাশে দাঁড়ানোর দায় ও দায়িত্ব নিয়ে এসেছে ঈদ-উল আজহা।
এবারের ঈদে যারা ঢাকা ছেড়েছেন; বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন তাদের অবস্থা ছিল সবচেয়ে করুণ-সবচেয়ে অমানবিক। কেবল যারা পদ্মা সেতু দিয়ে নাড়ির টানে ঘরে ফিরেছেন তারা ব্যতিক্রম। বাকী প্রায় সর্বত্র ছিল মর্মান্তিক এক অভিজ্ঞতা। হঠাৎ করে মোটরসাইকেল চালনায় নিষেধাজ্ঞা আরোপের মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেল চালকদের কর্মসংস্থানের পথ রুদ্ধ করে দেওয়া হয়নি কেবল, কয়েক লক্ষ পরিবারের ঈদ-আনন্দ মাটি করে দেওয়া হয়েছে। এবং মোটরসাইকেল বন্ধ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল রুটের উত্তরবঙ্গগামী যাত্রীদের, ঢাকা-গাজীপুর রুটের ময়মনসিংহগামী যাত্রীদের, ঢাকা-মানিকগঞ্চ রুটের পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ ঘাটের যাত্রীদের স্মরণকালের ভয়াবহ জ্যামের অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিন ঘণ্টার পথ বারো ঘণ্টা-পনেরো ঘণ্টায় পাড়ি দিতে হয়েছে। সভ্য দেশের একটা উৎসবমুহূর্তের আগে এমন কষ্টকর অভিজ্ঞতার কথা কি কল্পনা করা যায়? যায় না নিশ্চয়। কিন্তু আমাদের দেশে এটাই বাস্তবতা। সেই কষ্ট কেমন ছিল কয়েকজনের ফেইসবুক স্ট্যাটাস লক্ষ্য করলেই বেদনাটা টের পাওয়া যায়।
এক. সাংবাদিক শুভ কিবরিয়া শুক্রবার সকাল নয়টায় দেওয়া স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেছেন, ‘দেড় কিলোমিটার রাস্তা পার হলাম তিন ঘণ্টায়, হ্যাপি ঈদ জার্নি’। উনি হয়তো এখনও বুঝে উঠতে পারেননি আরও কত ভোগান্তি অপেক্ষা করছে তার জন্য। অবশ্য ১২ ঘণ্টা পর তিনি জানিয়েছেন সেই উপলব্ধির কথা। লিখেছেন, ‘ঢাকা থেকে মধুপুর ১২৯ কিলোমিটার পেরুতে সড়কপথে ১২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগল। হ্যাপি ঈদ মোবারক।’
দুই. সাংবাদিক লাবণ্য লিপি বৃহস্পতিবার এক স্ট্যাটাসে ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেছেন। লিখেছেন, ‘গরু আর মানুষের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই! যে ট্রাকগুলো গরু এনেছিল বিশটা, সেখানে মানুষ নিয়ে যাচ্ছে হয়তো পঞ্চাশ জন। পার্থক্য এটুকুই! গাবতলী থেকে সাভার পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ রাস্তায় বসে আছে গাড়ির জন্য। আমিও দুটো টিকিট কিনেছি ডাবল দামে। তারপরও অনেক দুর্ভোগের পর গাড়িতে উঠেছি। ঠাকুরগাঁও যাচ্ছি। প্রচণ্ড যানজট। কখন পৌঁছাব আল্লাহ জানেন। আচ্ছা কোনোদিন কি এমন হবে, আমরা কষ্টের টাকা দিয়ে আরো একটু সহজ-মানসম্পন্ন জীবন যাপন করব! এটা কি খুব বেশি চাওয়া?’ লাবণ্য লিপি অন্য আরেকটি স্ট্যাটাসে জানিয়েছেন, ’২৩ ঘণ্টা জার্নি করে আমরা দুপুর দুইটায় বাড়ি এসেছি। আমার দুই পা অনেকটাই ফুলে গেছে।’
তিন. ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম এক যাত্রী জানিয়েছেন জ্যামে পড়ে ইতিপূর্বে তিনি ২৩ ঘণ্টায় পৌঁছেছিলেন গন্তব্যে। এবার সেই রেকর্ড ভেঙ্গে গেল।
চার. অনিক রহিম ফেইসবুক স্ট্যাটাসে লিখছেন, ‘ ঈদ যাত্রা। ঢাকা থেকে রংপুর। শুরু গতকাল (০৭.০৭.২০২২) রাত ১০টা। ইতোমধ্যে ২৩ ঘণ্টা পেরিয়েছে। এখনো গোবিন্দগঞ্জ। অপেক্ষার প্রহর চলছে।’
পাঁচ. সাংবাদিক রণজিৎ সরকার লিখেছেন, ‘ভোর হলো দোর খোলো খুকুমণি ওঠো রে!/ ঐ ডাকে যুঁইশাখে ফুল-খুকি ছোট রে!/ খুকুমণি ওঠো রে! … শুভসকাল বঙ্গবন্ধু সেতু (১৫ ঘণ্টায় কল্যাণপুর থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু)।’
ছয়. লেখক ও বেসরকারি উন্নয়ন কর্মকর্তা সাইফুল আজম লিখেছেন, ‘বেলা ২টা, ৭ জুলাই, মোহাম্মদপুর, ঢাকা থেকে এলেঙ্গা, টাঙ্গাইল, ৮ জুলাই, সময় সকাল ৭টা, মাত্র ১৭ ঘণ্টা! টঙ্গী চেরাগ আলী থেকে কালিয়াকৈরের মাঝে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বশীল কাউকে নজরে পড়েনি!’
সাত. সাংবাদিক আরিফুন নেছা সুখী শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় লিখেছেন, ‘কয় তারিখ থেকে কয় তারিখ যেন কোন কোন যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে! আজ কি সেই তারিখ আর এগুলো কি সেইসব যান? টাঙ্গাইলকে মনে হচ্ছে পুরো বাংলাদেশের সমান। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা একই জায়গায়... আর কতক্ষণ থাকতে হবে আল্লাহ জানেন... রাস্তার কোথাও চোখে পড়েনি কোনো পুলিশ। ছুটি শুরু, সো ঈদ মোবারক।’
বন্যা না হয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। কিন্তু রাস্তার অব্যবস্থাপনাও কি তাই? আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ বলে গর্বে বুকের ছাতা বড় করি, আর ট্রেনের টিকিটে অরাজকতার পাহাড় বসায়। ঈদ সামনে করেও কি কিছু স্পেশাল ট্রেন চালু করার সক্ষমতা আমাদের হবে না কোনো দিন।
প্রতিবছর ঈদযাত্রা ঘিরে মানুষের এই কষ্ট কি দূর হওয়ার নয়? কোনো পরিকল্পনা কিংবা ব্যবস্থা কি নেওয়ার নেই? কথায় কথায় সিঙ্গাপুর, লন্ডন, অস্ট্রেলিয়াকে টেনে ঢাকার রাস্তায় গড়াগড়ি খাওয়ানো হয়। কিন্তু মুখের জোর আর কাজের ক্ষমতা যে এক নয়- তা আমরা বুঝব কবে? ওইসব দেশ যে কোনো উৎসবকে সামনে রেখে নানা রকমের পরিকল্পনা ও উদ্যোগ গ্রহণ-বাস্তবায়ন করে। ফলে, উৎসবের সময় তারা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে স্বাচ্ছন্দে-সুলভে সকল কাজ সম্পন্ন করে। ফলে, উৎসব তাদের কাছে সত্যি-সত্যি উৎসব হয়ে ওঠে। আমাদের দেশের মতো বিস্তর হ্যাপা আর অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে তারা উৎসবে শামিল হয় না।
ঈদের আনন্দে শরিক হয়ে এইসব কষ্টের কথা ভুলে যায় সাধারণ মানুষ। কিংবা ভুলে যাওয়ার ভান করে ঝাঁপিয়ে পড়ে জীবন যুদ্ধে। আবার তারা কর্মস্থানে ফিরবে। রাজধানী ঢাকাকে করে তুলবে কোলাহলমুখর। কিন্তু ফি-বছর এই কষ্ট দূর করার দায়িত্ব যাদের তারা কি বিষয়টা সদর্থক অর্থে উপলব্ধি করবেন না?
ঈদ মানে খুশি-ঈদ মানে হাসি-ঈদ মানে আনন্দ। এটা যেন কেবল কথার কথা না হয়। ঈদ-উল আজহার ঈদের প্রকৃত অর্থ উপলব্ধিপূর্বক আমরা ঈদকে সত্যি সত্যি ত্যাগের উৎসবে পরিণত করি এবং এর মধ্য দিয়ে মহান আল্লাহতায়ালার নিকটবর্তী হওয়ার বাসনাকে বাস্তবে রূপ দেই- এই হোক ঈদের শিক্ষা। ঈদের আনন্দ সবার মাঝে এমনভাবে ছড়িয়ে দেই- যারা নিরানন্দে রয়েছে তারাও যেন ভেতর থেকে বলে ওঠে, ‘ঈদ হাসতে শেখায়, ঈদ ভালোবাসতে শেখায়, ঈদ ত্যাগের মহিমা শেখায়।
ঈদ আসে ঈদ চলে যায়। রেখে যায় আনেন্দের স্মৃতি অথবা এক বুক বেদনার গল্প। এদেশে নিরানন্দই সঙ্গী হচ্ছে বারংবার। আর আনন্দ পায় গুটিকয়েক মানুষ, যারা ক্ষমতার অংশভাক। যারা নানাভাবে রাষ্ট্রীয় পদ-পদবির বলয়ে নিজেকে লাগসই করতে পেরেছেন কেবল তারাই যেন সবকিছুর দাবিদার। বাকীদের কষ্টটাই সম্বল। সেই কষ্ট দূর হবে তখন যখন আমরা ঈদের আনন্দকে সর্বজনীন করে তুলতে পারব। মানুষ মানুষের জন্য এই শিক্ষা যেন ঈদে এবং জীবনের সকল সময়ে আমরা ভুলে না যাই। ঈদ মোবারক।
লেখক: সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও গবেষক