বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের সকল শ্রেণি-পেশার নাগরিকের কাছের মানুষ হয়ে উঠেছেন মেয়র মো. ইকরামুল হক টিটু। ছোট-বড় সব মানুষের কথা মন দিয়ে শোনা, সমাধানের চেষ্টা করা এবং সকল প্রয়োজনে নাগরিকদের পাশে থেকে নিজেকে এ অবস্থানে এনেছেন মেয়র। অগ্নিকাণ্ড, বন্যা বা যেকোনো সংকটে নিজেকে মানুষের সেবায় নিজেকে সমর্পণ করেন মেয়র টিটু। বিশেষ করে, করোনাকালে যখন অনেককেই দূরে থেকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেছে, সেখানে তিনি নিজের জীবনের মায়া না করে মানুষের পাশে থেকেছেন।
অনেক জনপ্রতিনিধিকে এলাকাতে কম পাওয়া গেলেও মেয়র টিটুর দরজা সকলের জন্য সর্বদা অবারিত। প্রতিদিন নিজের অফিসে বা বাসায় মানুষের কথা শুনছেন, তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন। অনেকের মতে, চলতি রাজনীতির বিপরীত চরিত্র মেয়র টিটু। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে মানবকল্যাণের মিশনই মেয়র টিটুর একমাত্র ব্রত। এ কারণেই তিনি দল-মত নির্বিশেষে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য।
মেয়র হওয়ার আগে সাড়ে ৯ বছর দক্ষতার সাথে সামলেছেন বিলুপ্ত ময়মনসিংহ পৌরসভার মেয়রের দায়িত্ব। একসময়ের অবহেলিত, বঞ্চিত, অনুন্নত ও বৈষম্যের শিকার নগরবাসীকে দেখিয়েছেন স্বপ্ন। সিটি কর্পোরেশনের প্রথম প্রশাসক ও মেয়রও তিনি। সেই দায়িত্ব তিনি যোগ্য নেতৃত্ব এবং দায়িত্বশীলতার সাথে পালন করে যাচ্ছেন।
সিটি কর্পেরেশনের দায়িত্ব নেওয়ার পর শহরের সড়ক ও ড্রেনেজ অবকাঠামোয় দারুণ পরিবর্তন এসেছে। বিশেষ করে, বিলুপ্ত পৌরসভার সাথে যুক্ত নতুন ১২টি ওয়ার্ড যেগুলো আগে ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে ছিল, সেখানে যোগাযোগ ও ড্রেনেজ অবকাঠামোয় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
দূরদর্শী মেয়রের কার্যক্রমে আবর্জনার শহর ময়মনসিংহ এই তকমা থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেকটা। অল্প জনবল দিয়েও প্রতিদিন প্রায় ৫০০ টন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনা করা হচ্ছে। মেডিকেল বর্জ্য, পয়ঃবর্জ্য এবং গৃহস্থালি বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় নেওয়া হয়েছে পৃথক পৃথক উদ্যোগ। প্রায় ১৭১ কিলোমিটার সড়কে বসেছে এলইডি বাতি। ইপিআই, কৃমি নিয়ন্ত্রণ, ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে শতভাগ সফলতার পাশাপাশি নাগিরক স্বাস্থ্যসেবায় একটি নগর মাতৃসদন এবং তিনটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।
জনগণের প্রয়োজনে তিনি কঠোর সিদ্ধান্তও নিতে পারেন। তার প্রমাণও তিনি রেখেছেন। নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে গত জুলাই মাস থেকে সিটির খালগুলোর অবৈধ দখল উচ্ছেদ শুরু করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ১২ কিলোমিটার খালের দখল উচ্ছেদ সম্পন্ন হয়েছে। এতে বহু প্রভাবশালী স্থাপনাসহ ভাঙা পড়েছে প্রায় ৫ শতাধিক বাড়ি-দোকান-প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক তিনি। নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছড়িয়ে দিতে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের পাশে স্থাপন করেছেন জয়বাংলা চত্বর। টাউন হলে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু গ্যালারি বঙ্গবন্ধুর বাণী, ভাষণ ইত্যাদি মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর জীবন ও আদর্শকে নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজন করে নতুন প্রজন্মের মাঝে বঙ্গবন্ধুর চেতনাকে ছড়িয়ে দিচ্ছেন।
দক্ষ প্রশাসক হিসেবেও তিনি সুনাম অর্জন করেছেন। তার নেতৃত্বে ২০২১-২০২২ এবং ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি সম্পাদনে স্থানীয় সরকার বিভাগের ১২টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন।
স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় স্মার্ট কারিগর ইকরামুল হক টিটু। সিটি কর্পোরেশনের ৫টি সেবাকে তিনি অনলাইনে এনেছেন। সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের মাধ্যমে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে আরও দক্ষ করেছেন। তিনি মহনগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর শুধু মহানগর নয়, সামগ্রিক ময়মনসিংহের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডেও গতিশীলতা এসেছে।
আরোহী প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার পরিচালক তাহমিনা আক্তার বলেন, যেকোনো সমস্যায় মেয়রকে পাশে পাওয়া যায়। প্রতিবন্ধীরাও যাতে তার সাথে দেখা করতে পারে, এজন্য তিনি তার দপ্তরে র্যাম্প করে দিয়েছেন।
ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি শংকর সাহা বলেন, মেয়রের বড় গুণ হলো, তিনি যে কারো সমস্যায় তার পাশে থাকার চেষ্টা করেন। সরকারি- বেসরকারি, রাজনৈতিক, সামাজিক যেকোনো অনুষ্ঠান, এমনকি যেকোনো বিয়ে বা জন্মদিনের দাওয়াতেও উপস্থিত থাকেন তিনি।
ময়মনসিংহ জেলা নাগরিক আন্দলোনের সাধারণ সম্পাদক মো. নূরুল আমিন কালাম বলেন, ময়মনসিংহ শহরের সমস্যাগুলো সমাধানে মেয়র চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে শহরের নানা প্রান্তে সড়ক-ড্রেন নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চোখে পড়ছে। সড়কবাতির ঘাটতি অনেকাংশে পূরণ হয়েছে। অগ্রযাত্রাকে অব্যহত রাখতে হবে।