বাংলাদেশের অনেক জায়গায় গেলে 'টাকার গরম' লক্ষ্য করা যায়। কিন্তু কে বা কারা এই উষ্ণতা ছড়াই, তারা অনেকটা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে বা সরকারের তালিকায় নেই। বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। অনেক কিছু ধনীদের ক্রমবর্ধমান সম্পদের কথা বলে। দেশে রয়েছে অনেক বিলিয়নিয়ার ও কোটিপতি। কিন্তু কে বা কারা সেই বিলিয়নিয়ার ও কোটিপতি, এদের একটা বড় অংশ খুঁজে পাওয়া যায় না, অর্থাৎ তারা নিখোঁজ।
কাতারভিত্তিক আল-জাজিরার সম্প্রতি বাংলাদেশের ‘নিখোঁজ বিলিয়নিয়ার’দের নিয়ে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যার শিরোনাম ছিল Bangladesh’s ‘missing billionaires’: A wealth boom and stark inequality। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে অনেক কোটিপতি আছে, কিন্তু তারা তাদের সম্পদ অফশোর অ্যাকাউন্ট এবং রিয়েল এস্টেটে লুকিয়ে রেখেছেন।
বিষয়টি প্রমাণের জন্য প্যান্ডোরা পেপারসে তালিকাভুক্ত ১১ জন বাংলাদেশির দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে । তারা উল্লেখযোগ্য সম্পদ বা পুঁজির বহিঃপ্রবাহ অর্থাৎ বিদেশে পাঠিয়ে দেয় এবং কর ফাঁকি দেয় যে কারণে বাংলাদেশে ব্যক্তিগত সম্পদের সঠিক অনুমান বাধাগ্রস্ত হয়।
আল-জাজিরার ঐ প্রতিবেদনে, উদাহরণ হিসেবে রাজধানী ঢাকার অভিজাত এলাকার আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ নির্মাণাধীন ১৪ তলা একটি ভবনের কথা বলা হয়েছে। ২০২১ সালে নির্মাণ কাজ শুরুর আগেই ২০ কোটি টাকা ভিত্তিমূলে সবগুলো অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয়ে যায়। অ্যাপার্টমেন্ট কেনার জন্য অনেক আবেদন থেকে বাছাই করে বিক্রি করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের শেষে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৮৬টিরও বেশি বেসরকারি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে এক কোটি টাকা জমা ছিল। অথচ দেশের স্বাধীনতার পর এই ধরনের মাত্র ১৬টি অ্যাকাউন্ট ছিল এবং ২০০০ সালে ছিল তিন হাজার ৪৪২টি অ্যাকাউন্ট। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (বিসিজি) সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে, বাংলাদেশের মধ্যআয়ের এবং ধনী ভোক্তা (এমএসি) শ্রেণি দ্রুত বাড়ছে। ২০২৫ সালের মধ্যে এরা মোট জনসংখ্যার ১৭ শতাংশে পৌঁছাবে। একইসঙ্গে দেশটিতে সম্পদের বৈষম্য বাড়ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে জনসংখ্যার ১০ শতাংশ সবচেয়ে ধনী, যারা দেশের মোট আয়ের ৪১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। আর তলানি অর্থাৎ দরিদ্র ১০ শতাংশ মোট সম্পদের মাত্র ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। নিউইয়র্কভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়েলথ-এক্স জানিয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সম্পদ বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী শীর্ষস্থানীয় ছিল। গবেষণায় দেখানো হয়েছে, ৫০ লাখ ডলার বা তারচেয়ে বেশি সম্পদের মালিক এমন মানুষের সংখ্যা বছরে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ হারে বাড়ছে। এই হার ভিয়েতানামকেও ছাড়িয়ে গেছে। ভিয়েতনামে এই হার ১৩ দশমিক ২ শতাংশ।
অক্সফামের ২০২৩ সালের বার্ষিক বৈষম্য প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বব্যাপী গত দুই বছরে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ যে সম্পদ অর্জন করেছে তার প্রায় দ্বিগুণ সম্পদ আয় করছে সবচেয়ে ধনী এক শতাংশ মানুষ। এর আগের এক জরিপে এই আন্তর্জাতিক সংস্থা জানায়, বিশ্বের ৬২ জন ধনী ব্যক্তির হাতে যে পরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তা বিশ্বের দরিদ্রতর অর্ধেক জনগোষ্ঠীর থাকা সম্পদের সমান বলে। আর ১ শতাংশ লোকের হাতে পুঞ্জীভূত হয়েছে বিশ্বের বাকি ৯৯ শতাংশ মানুষের সমান সম্পদ।
লাখো প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে সম্পদের বড় ধরনের অসমতা থাকুক এটা আমরা কেউ প্রত্যাশা করি না। কেননা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অন্যতম একটা লক্ষ্য ছিল, বৈষম্য ও অসমতা দূর করা।
তবে, দেশবাসীকে কিছু দিন পরপর অবাক হতে হয় যখন ব্লুমবার্গ, পানামা পেপারস ও প্যান্ডোরা পেপারস, গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ন্যায় বিভিন্ন সংস্থা ও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম কিছু লোকের অবৈধ ধনসম্পদ ও অর্থপাচারের রিপোর্ট বা খবর প্রকাশ করে।
দেশের অনেকের মধ্যে এখন ‘গরিবের ঘোড়া রোগ’ দেখা দিয়েছে। খুব দ্রুত সময়ে বিলনিয়ার বা অঢেল বিত্তের মালিক হওয়ার স্বপ্নে বিভোর। দুর্নীতি করে হোক আর কোন অপকর্ম করে, তারা মিশন চালিয়ে যাচ্ছে।
বৈশ্বিক নানা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ অন্তত ১০টি দেশে। বারবুডা, কেম্যান আইল্যান্ডের মতো অফশোর বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত দ্বীপদেশগুলোয়ও বাংলাদেশিদের। কানাডায় গড়ে উঠেছে বেগমপাড়ার মত অভিজাত এলাকা যেখানে বাঙালিরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ।
অনেকে দুর্নীতি বা অবৈধ উপায়ে অল্প সময়ে অঢেল অর্থ-সম্পদ অর্জন করে বিভিন্ন কৌশলে একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার করে দিচ্ছে। যখন চারিদিক যখন এসব চাউর, ঠিক তেমন সময় বেনজীর আহমেদের কাণ্ড দেশবাসীকে আরও হতাশ করছে। যিনি বাংলাদেশ পুলিশের আইজি, র্যাব মহাপরিচালক, ডিএমপি কমিশনারের মত দায়িত্বশীল পদে কর্মরত ছিলেন। যিনি রাষ্ট্রের ‘শুদ্ধাচার পুরস্কারেও’ ভূষিত হয়েছিলেন। তার মত ব্যক্তি যখন এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত থাকে, তখন অন্যদের নিয়ে আর কিছু বলার থাকে না।
আমাদের দেশে দেখা কিছুদিন পরপর যাদের নাম আসে, তাদের দেখা যায় হাজার বিঘার ওপরে ভূমি, দেশে-বিদেশে অসংখ্য ফ্ল্যাট, প্লট, অ্যাপার্টমেন্ট। দেশে-বিদেশের ব্যাংক ও কোম্পানিতে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রভৃতি। তারা এমনভাবে অর্থ কুক্ষিগত করে, যেন চৌদ্দ পুরুষ ভোগ করে শেষ করতে না পারে।
পবিত্র ঈদুল আজহায় সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে পশু কোরবানি দিতে সাধ্যমতো চেষ্টা করেন এদেশের মুসলিম সম্প্রদায়। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের পশুর হাটের খবর অনুযায়ী, এ বছর পশুর দাম ছিল বেশ চড়া । অনেকে দেখা যায়, ধার-দেনা করেও শেষ পর্যন্ত কোরবানি দিয়ে থাকে। আসলে দেশের কতজন লোকের সক্ষমতা আছে, সেটাও একটা বিষয়। দেখা যায়, দেশের অনেক নিভৃত পল্লীতে, উপকূলীয়, চরাঞ্চলসহ অনেক এলাকার প্রান্তিক জনপদে ঈদের আনন্দ প্রতিবারই ম্লান থাকে। ঈদের একদিন আগেও সেমাই ও তেল-নুন কেনার পয়সা জোগাড় হয় না। পূরণ হয় না ছেলেমেয়ে আর নাতি-নাতনিদের নতুন কাপড়ের বায়না। কোরবানি দেওয়া তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো।
সরকারি বা বিভিন্ন বেসরকারি পর্যায় থেকে সাধারণ শ্রমজীবী, কায়িক পরিশ্রমী ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। বর্তমানে সরকার তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ও ভাতার ব্যবস্থা করেছে, অনেক স্থানে শতভাগ ভাতার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, মানুষ যখন বড় ধরনের রোগ-শোকে পড়ে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুজনিত ফসলহানির কবলে পড়ে আর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, উচ্চ মূল্যস্ফীতি প্রভৃতির কারণে এই ভাতাও (বয়স্ক, প্রতিবন্ধী, বিধবা, হিজড়া, শিক্ষা উপবৃত্তি) তাদের এক সময় রক্ষা করতে পারে না।
বর্তমানে মূল্যস্ফীতি প্রায় ৯ শতাংশ। কিন্ত বাস্তবে আরও বেশি। চাল, ডাল, আটা, খোলা সয়াবিন তেলসহ নিত্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে চলছে। আসলে যে হারে সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে হারে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না। কিছুদিন আগে একজন শিশুর জাতীয় মাছ পাঙ্গাস বলার ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। তথন দেশের মানুষের ক্রয় ক্ষমতা নিয়ে অনেকে অনেক প্রশ্ন তুলেছিলেন। এমনও প্রশ্ন আছে, দেশের সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেটে কোন কোন মানুষের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ শূন্য টাকা থাকে।
দেশের অনেক নিম্নবিত্ত ও শিক্ষিত পেশাজীবীদের একটি বড় অংশ বেশ ঝামেলায় আছে। নিজেদের আয়-রোজগারের সঙ্গে মিল রেখে সমাজ-সংসার রক্ষা করতে গিয়ে তাদের জীবনে প্রতিদিন এমনিতেই অনেক কষ্টের গল্প তৈরি হয়। আর প্রতিটি ঈদ বা অন্য উৎসব তাদের কষ্টটা আরও বাড়িয়ে দেয়।
এমন সব শিক্ষিত পেশাজীবী শ্রেণির মধ্যে রয়েছে বেসরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষক, বিভিন্ন বেসরকারি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের কর্মী, গণমাধ্যমকর্মী, মসজিদের ইমামসহ অনেক।
বেসরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুল ও মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানান, তারা তাদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে অনশনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু ফলাফল শূন্য, তারা এখন হতাশ। তাদের আশা ছিল সরকার অন্তত উৎসব ভাতাটা বাড়িয়ে দেবেন, কিন্তু সে গুড়েবালি। সারা দেশে প্রায় ছয় লাখের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছে। ঈদ উৎসব ভাতা শিক্ষকদের জন্য বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীদের জন্য বেতনের ৫০ শতাংশ পেয়ে থাকেন। সেই হিসেবে, স্কুল বা মাদ্রাসায় শিক্ষকরা ঈদ বোনাস তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানিতে চাকরিরত অনেকের অবস্থা প্রায় একই রকম। কিছু প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি ছাড়া অধিকাংশই বেতন কাঠামো ও নিয়মনীতি অনুসরণ করে না। তাছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে শক্তিশালী মনিটারিং না থাকায় তারা ন্যায্য সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়।
সাংবাদিকরা সমাজের বিভিন্ন অনিয়ম ও অসঙ্গতি তুলে ধরে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করে। অথচ পেশা বা চাকরি, সুযোগ-সুবিধা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অবস্থা একেবারে তলানিতে।
২০১৮ সালের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে নিবন্ধিত পত্রিকার (প্রিন্ট মিডিয়া) সংখ্যা ৩ হাজার ২৫টি। বর্তমানে দেশে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ৪টি টিভি চ্যানেল এবং ৩৪টি বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল তাদের কার্যক্রম চালিয়া যাচ্ছে। তবে, অনুমোদন আছে ৪৫টির। দেশে ব্যাঙের ছাতার মত অসংখ্য অনলাইন নিউজ পোর্টালের উদয় হয়েছে। এই পরিসংখ্যানগুলো থেকে ধারণা করা যায় মিডিয়া জগতে কী চলছে। কে বা কারা রেজিস্ট্রেশন, নিবন্ধন ও অনুমোদন নিচ্ছে বা নেওয়ার পর কী করছে, তা জানার বা দেখার প্রয়োজনীয়তা যেন কেউ অনুভব করছে না। প্রকৃত সংবাদকর্মীরা চাপা পড়ছে। সামাজিক প্রেক্ষাপট, অব্যাহত অনিয়ম ও মালিক পক্ষের সুযোগ সন্ধানী নীতির কারণে সাংবাদিকের হাহাকার বেড়েই চলেছে। এই হ-য-ব-র-ল অবস্থার মধ্যে সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়নের জন্য কেউ কোন পদক্ষেপ নিলেও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
সংবাদপত্রের সাংবাদিক ও কর্মচারীদের বেতন হওয়ার কথা সরকার ঘোষিত মজুরি বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী এবং সেই অনুযায়ী সরকারি বিজ্ঞাপনের মূল্যও নির্ধারণ হয়। কিন্তু এর বাস্তবায়ন নেই, অধিকাংশই এর কিছুই মানে না। এমন অনেক পত্রিকা আছে যেখানে সাংবাদিক নিয়োগ দিয়ে বলা হয় 'তোমার বেতন, তুমি সংগ্রহ করো'।
বিভিন্ন শিল্প বা ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও ধনী ব্যাক্তিরা অধিকাংশ গণমাধ্যমের মালিক। পত্রিকার ডিক্লারেশন নেওয়ার সময় মালিকরা আইন অনুযায়ী সব বেতন-ভাতা ও পাওনাদি দেওয়ার অঙ্গীকার করে। ভালো বেতন ও সুযোগ-সুবিধার লোভ দেখিয়ে অভিজ্ঞ সাংবাদিকদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তবে সরকারি বিজ্ঞাপনের জন্য ডিএফপি'র রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার পর তাদের চেহারা পাল্টে যায়। ছাঁটাই শুরু হয়, অনেকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হয়। বাজারে বেকার সাংবাদিকদের সংখ্যা বাড়তে হয়। অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা আবার নতুন করে চাকরি খোঁজা শুরু করে, অনেকে এই সুযোগ গ্রহণ করে। এক সময় সংসার নামক ঘানির কারণে তাদের লজ্জাজনক ও অপমানজনক বেতনে পত্রিকায় চাকরি নিতে হয়। সাংবাদিক সমাজ যেন এই চক্রের মধ্যে আটকা পড়ে আছে।
মফস্বলদের সাংবাদিকদের অবস্থা আরও খারাপ। অধিকাংশ মফস্বল সাংবাদিকদের আইডি কার্ড ধরিয়ে দেওয়া হয়। খুব সামান্যসংখ্যক সাংবাদিকদের সামান্য পরিমাণে টাকা দেওয়া হয় যেটা তাদের যাতায়াত, ইন্টারনেট ও মোবাইলের পিছুনে খরচ হয়ে যায়।
উৎসবের আনন্দে বৈষম্য ঘুচে যাক, সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় হোক এটাই হোক সবার প্রত্যাশা।
লেখক: সাংবাদিক